শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

রীনা তালুকদার


রীনা তালুকদার

কত শীতে কাঁপছো 

ইচ্ছে করে বুকের গা গভীর চাদরে
তোমাকে জড়াই
চলে যাক তোমার কাঁপাকাপি শীত
উষ্ণতার আবেগে ঝরঝরে হোক
সদ্যজাত রাজ অনুভূতি
বিশ্বাসের চঞ্চু ছুঁয়ে যাক
পাঁজরের সফেদ কাঁথা কম্বল
মিশেল নিঃশ্বাসে বিভোর আরতি
জ্বেলে দেই দোভাষী গভীর কথনে
এত কাছে তবু দূরে বহু দূরে
দুর্মর দুরন্ত শীতে কাঁপছো তুমি
কাঁপছে এখানে পাহাড় চূড়ো
চেয়ে চেয়ে খুঁদ কুঁড়ো
নিরন্তর চলছে খোঁড়া খুঁড়ি কয়লা খনি

স্থির সুখে ভাগ নেই জেনেও
অপেক্ষার বাসে ওঠে বসে থাকা দিন দিন
কোন্ সুদূর তটে তটিনী ভিড়াবে
যাত্রা পথের বিরতি কোথায় কে জানে।







নির্ভীক

দুজনে না হয় দুজনকে ভালোবেসেছি
মনোবীণার তারে গান গেয়েছি          
সুদূরের বাঁশি ডেকেছিল ক্ষণে
নিন্দুক বলুক সে যা আসে মনে
মরক নিন্দায় কাতরাতে কাতরাতে     
রাবণ অভিশাপে কি যায় আসে তাতে

প্রেমের পরাগ মেখেছি এ মনে          
চাই না জগত সুখ ধনে জনে              
কোনো মিথ্যাকে ভয় করি না             
বাধা বিপত্তি যতই আসুক না
সত্য বাণীর সুর উদ্ভাসিত থাক                       
হৃদয় জুড়েই প্রেম সজীবতা পাক

দুঃখ দিনের সুক্ষ্ম কিম্ব কলংক নিয়ে
লড়ে যাব বাধন হারা জীবন দিয়ে      
লুলিত স্বপ্ন রচিব দগ্ধ পাঁজরের কোণে
মরণ হয় হোক না যখন তখনে।







যে দুঃখ দেয়

যে দুঃখ দেয় সেই তো ভালোবাসে
ভালোবাসলেই দুঃখ এসে ভীড় জমায়
দুঃখের সাথে ভালোবাসার দারুণ নিবিড়তা
সব দুঃখ জীবনে এক রকম অর্থ বহন করে না
কিছু কিছু দুঃখ খুব কাছে থেকে
দুঃসহ দহনের ধোঁয়ায় পোড়ে
ভালোবাসা সুদূর হলে শত্রহয়
তুমি শত্রবলেই আমি ভাল আছি
নিজেকে গুছিয়ে রাখার তাগিদ থাকে
তুমি দুঃখ দিলে তা মন মান মন্দিরের
নক্শী খিলান ছুঁয়ে যায়
আমি সেই দুঃখের পূজায় সময় পার করি
তুমি দুঃখই দাও; জমতে থাকুক দুঃখের কালি
পূজার থালায় অর্ঘ্য হয়ে
আমি ভালোবাসাই দিবো।






মোহ

কোনো কোনো মানুষ কারো কারো
জীবনে এক জীবন্ত ইতিহাস
ভুলে ভালে কেউ কেউ ক্ষণিকের
মোহজালে পড়ে করে হা-হুতাস।







ভালো কেউ বাসে না

তুমিও তো ভালোবাসনি
ভালোবাসার কথা বলে কেবল
কথায় কথায় কথার ফুলঝুরি
ছড়িয়েছো বৃন্দাবনের চারপাশে
মেঘবতীর জোয়ারিত জলে
নিন্দুককে দিয়েছো হাততালি দেবার
আয়েশী হাসি রাশি রাশি
ভ্রুকুটি চোখ কানামাছি খেলে
জীবনানন্দের অরণ্যের ব্যালকুনিতে
ভালোবাসার কৃষ্ণাগ্নি খেলায়
পেতেছো বাঁশরীর কৌশলী ফাঁদ
ভালোবাসার ছলে ভুলিয়েছো ;
ডুমুরের ফুলে উদাসী হাওয়ার ছোঁয়ায়
বিভাগী করেছো গৃহলোক থেকে
যদি ভালোই না বাসো তবে
এই গোল্লাছুট আয়োজন কেন করেছিলে
ভালোবাসা কী মরণ চেয়েছিলো ?