শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

কোজাগরী মোহানা


কোজাগরী মোহানা

ঝাউপাতার কবিতা

শুরু ও শেষের অর্থগুলো বেশ গভীর
মায়ের আঁচলে ঝাউপাতার পৃথিবী দেখেছি
শব্দ ছুঁয়ে ছুঁয়ে অন্ধকার মেঝের উপর কবিতার আঁকিবুঁকি।

ঘষা চোখে সমুদ্রস্নান
সমুদ্র ও পাহাড়ের মাঝখানে যে টুকু দূরত্ব
সেটুকু দূরত্বে বিষাদের এক আশ্চর্য রঙ-তুলি

শুরু ও শেষের অর্থ গুলো
এক একটি ফেরারি চিল....







একটি শীতকালীন অকবিতা...

বর্ষার প্রথম ঝিরঝির প্রশ্ন রেখেছিলো বৃষ্টির মানে কী!
জীবনের ত্রিতাল মাত্রায় এক একটি ফোঁটার সমীকরণ দেখেছি।

বুকের মায়াবী বারান্দায় চতুরাশ্রম..

আমার আশ্চর্য সন্ধে!
শীতের টবে টবে ফ্যাকাসে চাঁদ, দুচোখে কুয়াশা.

পৃথিবীর পথে পথে পৌষালী সেতুবন্ধন ; মায়াজাল..

ঋতুময়ী রাত
বাগানে  টুপটাপ টুপটাপ....







শিমূল-

কথা ফুরোয়, জাগে আঙুল
হৃদযন্ত্র তবুও সতেজ

হিজিবিজি হাতের রেখায় নিঃস্ব অভিমান
দিনের শেষে ফেরে ছায়া..

অভিধানে  অভিসার..







আর একবার ছুঁয়ে দেখি..

থাক কিছু ছিমছাম অন্ধকার
বুকের ভেতর হলুদ পাখি
পানকৌড়ি জীবন থেকে খুঁটে খুঁটে দেখেছি প্রেম

ঘুমের মধ্যরাতের বারান্দায় নিস্তব্ধতা ডেকে গেছে
ভুলের চাদর সরিয়ে দেখেছি কালো চুলে মৃত্যুর ঝর্ণা

ভোরের কলিং বেলে বাবুইপাখি

সব পাখি কথা বলে ; ফিরে যায় আকাশের পথে

থাক কিছু  ছিমছাম অন্ধকার
তমসার পাশে আরও একবার নিজেকে দেখি...







একটি আত্মহত্যার কবিতা

টেবিলে টলমল রাত্রি। রিমঝিম সন্ধের ঝিম ট্যাবলেট। আমি একটি আত্মহত্যার কবিতা লিখতে বসি। দরজা খুলে এগিয়ে আসে মেঘশরীরে এক একরকম রাত্রি।

প্রতিদিন এক একটি মৃত্যু ঝর্ণায় ডুব।এইটুকু ভবিতব্য মনে করে আরেকটুকু এগোতে থাকি টেবিলের দিকে।

প্রবল বর্ষা নামে। জানলা দিয়ে চোখ যায় উঠোনে। দেখি পলাতক বন্যায় যে শিউলি গাছটি মরে গিয়েছিলো ঠিক সেখানেই জন্ম নিয়েছে আর একটি।

টেবিলের দিকে এগোতে এগোতে স্মৃতির ট্রিগারে হাত রাখি। মিঠু, গুড্ডু, মা, ঝুমু, বাবার মৃত্যু, প্রেমিকের ছেড়ে যাওয়া ইত্যাদি এক একটি মৃত্যু দেখতে দেখতে বুলেট ভরি পাঁজরের  ম্যাগাজিনে।

দেবদূত এসে সামনে দাঁড়ান।গ্লাস ভর্তি জল নিয়ে মেঘ ট্যাবলেট চুমুক দিই।ঘুমিয়ে পড়ি  পাশবালিশে হাত রেখে। চিরকুট লিখে রাখি-- প্রতিরাতেই মৃত্যু হয়েছে বহুবার এর আগে।

কিন্ত প্রতি সন্ধেয় আবার শিউলি ফুটেছে। অপেক্ষা শুধু দু"একটি শিশির বিন্দু ঝরে পড়ার....