শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

সৈয়দ ওয়ালী


সৈয়দ ওয়ালী

হয়ে উঠবার গল্প

বেশ কিছু অদ্ভুতুড়ে অভিজ্ঞতা অর্জিত হবার পর
আপনি টের পাবেন, যা খুঁজছিলেন তা কারো ভাঁড়েই খুব বেশি নেই;
আপনি হতাশ হবেন, আপনি অবাক হবেন
এবং শিখে যাবেন, কী করে অমূল্য আয়ুর যথার্থ মূল্য দিতে হয়।
অচিরেই ঝরে যাবে অকবির দল আপনার পাঠ্য তালিকা থেকে।
আপনি নির্বাচনপটু পাঠক হয়ে উঠবেন।
কালক্রমে আপনার দুচোখের মাঝখানে তৃতীয় চোখের জন্ম হবে।
আপনি ক্রমশ হারাতে থাকবেন রম্যময় ভ্রমণের অতুল সোয়াদ।
আপনি রসিক থেকে রূপান্তরিত হতে হতে হয়ে উঠবেন খুঁতখুঁতে দর্পী।
শাপ-স্বরূপ আপনি স্বর্গ থেকে নিক্ষিপ্ত হবেন নরকে এবং
ধীরে ধীরে হয়ে উঠবেন একজন ছিদ্রান্বেষী... পুরাদস্তুর।








ঐকান্তিক অভিলাষ

ফেলে দেয়া দ্বেষ-চোখ নিয়ে
তর্কে
উৎসাহ নেই;
ওতে যার রুচি হয় হোক
খুবলে খুবলে খাক আপন মলিন;
সহজিয়া পুথিপাঠ কবিগান যাত্রা বেঁচে থাক
আয়ু পাক
দীর্ঘ...।

ফেলে দেয়া দ্বেষ-ছাঁচ নিয়ে
তর্কে
উৎসাহ নেই;
ওতে যার রুচি হয় হোক
খুবলে খুবলে খাক বিদিত মলিন;
আমাদের রসপান,মাতলামো তেষ্টা বেঁচে থাক
আয়ু পাক
দীর্ঘ...।

ফেলে দেয়া দ্বেষ-বাদ নিয়ে
তর্কে
উৎসাহ নেই;
ওতে যার রুচি হয় হোক
খুবলে খুবলে খাক জগৎ মলিন;
আমাদের হ্লাদ-রস সৃজনের চেষ্টা বেঁচে থাক
আয়ু পাক
দীর্ঘ...।







রমণসারথি

যদি শৈশবে কৈশোরে
শুনে থাকে
পেয়ে থাকে
কেউ তার ডাক
না পেয়েও সাক্ষাৎ, চারপাশ আতিপাতি খোঁজে
ভুতে পাওয়া অশ্বের মতো 
যদি কেউ যৌবনে দিশাহীন ছোটে 
যদি তারপরও সেই সে
তাল ঠুকে
সুর সাধে
চেতনে চেতনে 
অহর্নিশ গায় গান
প্রমোদ ও বিষাদের
যদি তারপরও করে সে
রূপময় গহনের নিয়ত বেসাতি
ভেঙ্গে ঘর
ছেড়ে ধর
ডুবে গিয়ে বিস্ময়ে
মেনে নেয় বেদের নিয়তি
যদি তারও পরে থাকে বুঁদ
অজর বিভাব আর অধরা পিরিতে,হায় চালশের পরে
রসিকেরা বলে তারে,আহা সে যে কবি গো, আমাদের রমণসারথি!





কবি-নাম

১.
নামটিতেই অবজ্ঞা, তুচ্ছতা, যেন সমার্থক আজ
একসময় সম্মানিত স্থানটি যার অধিকারে ছিল!

২.
বেসুরো কণ্ঠের অনেকেই বাথরুমে গুনগুন করে;
প্রাণের দোহদ বলে কথা...! মঞ্চ যে ভিন্ন বিষয়
কতজনে বোঝে সেই ভেদ, মানে,সাধ্য পরিসীমা।

৩.
কী ভাবি সারাদিন, কী...?
ভুল করি অহরহ, হিসেব নিকেশে...?
কেন হায় হেরে যাই স্বেচ্ছায়, ছেড়ে দেই সব ভুঁই, সব পদ, পদে পদে?
কেন হায় ডাক পাড়ি কেচ্ছায়, বহু নাম, যারা ছিল একদিন কাছেপিঠে?
কেন হায় ভুল হয় সংসারে, দফতরে, বাঁশ নিয়ে বাড়ি ফিরি আশের বদলে?
কেন হায় আর্তের কান্নায় স্থাণু হয়ে পড়ে রই, যাতনায় মরি দেশের অসুখে?
এই বুঝি সেই বিষ,অনন্তর ব্যথা!
এই বুঝি সেই মিথ, ঘূর্ণমান যথা!
এই বুঝি সেই ঋত, প্রিয়তম সুধা!
কী ভাব সারারাত, কী...?
ভুল কর অহরহ, হিসেব নিকেশে...?







কবি

কোন এক অজ্ঞাত অভিমানে ফুরিয়ে আসে
হরিৎ উষ্ণতা,
সদৃশ কাঁধের
টান;
বিবিধ নিমিত্তে
জড়ো হওয়া মৌসুমি মাছির দল, ভ্রমের কাজল
লেপে চোখে, কেটে পড়ে;
তুমিতো সর্বদাই একা...!

পেয়ারী নদীও এগিয়ে যায়, ত্যক্ত ভিটার ন্যায়
কবি,
পড়ে থাকে;
পকেটে পার্সে জমে ওঠে চালু সব
গৈরিক, সকলের;...শুধু যেন কবিই পেনিলেস হতে থাকে।