শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

শাহানারা ঝরনা


শাহানারা ঝরনা

অপেক্ষায় থাকি

ক্রমাগত হারাচ্ছে বাঁকাচোরা  বিশ্বাস
অন্তলীন জীবাণুর ভেতর ভ্রুণের কলস্বরে
কেউ গুনি অস্থিরতার প্রহর
কেউ বা দীর্ঘশ্বাসের বাতাসে ভেসে
পাড়ি দিই সীমাহীন উপলব্ধির সাগর
পরিত্যক্ত বিষাদ কিংবা নিরুদ্দেশ যাত্রায়ও
জ্বলে প্রহসনের আগুন।
দেখি আর তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে আঁকি
 হীনমন্যতার ছবি   
কতকিছু  হারিয়ে যায়,,,,
হারানো কারুপণ্যের ভেতর
মূল্যবোধের ভারসাম্য নিয়ে    
বিশ্বাসের অপেক্ষায় থাকি হাজার বছর।






মেঘবতী মেয়ে গাঁথে

শব্দের যানজটে বসে মেঘবতী মেয়ে গাঁথে স্বপ্নের মালা,
সন্ধ্যার উলুধ্বনি শুনে কবিতার বধূ যদি
মধুবিলাসি রাতের সন্ধান পায় ক্ষতি কী তাতে! 
মসনদে বসে কেউ সুখ্যাতির সূচি সাজায়,
ডিজিটাল বারুদে পোড়ে সভ্যতার চোখ
তুমি চাইলে বিষাদ সুতোয় গেঁথে নিতে পারো হৃদয়,
অণুভাবনার মোড়কে মোড়া দুখলিপিকার নির্যাসটুকু
হয়তো অধরাই থেকে যাবে,
দুচোখে যমুনা বইবে না হয় পরাধীন থাকবে পুষ্পিত সময়,
ইচ্ছের মালিকানা চাইব না কোনদিন।
আমি নিশ্চিত জানি ইচ্ছেবাড়ির প্রধান ফটকে বসে
তুমিই একদিন অনুভূতির গোলাঘর সাজাবে।
প্রগতির বসতবাড়িতে কতোকিছুই হয়,
সৌহার্দ্যের রাশিফলে যোগ হয় দ্বান্দ্বিক স্বরলিপি।
বস্তুত,,,,সুখ দুঃখের প্লাটফর্মে কোনদিন
ব্যর্থ জীবনের সমন্বয় হয় না।






সময়ের সাথে

সুন্দর ছুঁয়ে থাকে মনের আকাশ
চোখে ফুটে থাকে স্বপ্নের তারাফুল
চেতনাসিদ্ধ পুঁথিপাঠ নিয়ে কখনো মিতালিতে মাতি, 
পরবাস্তব সময়কে রাখি বুকের ভেতর।
একদিন জল বর্ষার নূপুর পায়ে মেঘবালিকা আসে,
চাতক ঠোঁটে ঢালে তৃষ্ণার জল
আমার চাতকী মন অমৃত সাগরে ডুবে
এনে দেয় আশাজীবী জীবনের খোঁজ
চেতনার বৈধতা নিয়ে সৃজনিক বলয়ে ঘুরি
এভাবেই সময়ের সাথে করি লেনদেন।






অথচ জানি

শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতায় কাটে ব্যস্ত প্রহর
আমার কোজাগরী রাত কখনো  বন্ধক রেখেই
সুখের অঞ্জলি দিই সমর্পনের জলে
দৃষ্টি সীমানার ভেতর স্বপ্নের মায়াবীজ বুনি
ছুটে যাই দেশান্তরে
কখনো আমিত্বকে উজ্জীবিত করে
কাল মহাকাল,    
অথচ নিশ্চিত জানি,,,,আমি তো আমার নই!!
অমরত্বের আশায় জড়োয়া বিপনী সাজাই
কখনো মুঠোবন্দী করি সভ্যতার চাঁদ
বাসনারা মেঘ হয়ে বশিভূত চেতনায় ঢালে জল।






অনুভূতির পরমায়ু নিয়ে

দূরত্বের হাত ধরে যায় না আকাশ ছোঁয়া
তবু যদি বলিস কখনো,
"চল যাই, মেঘবাড়িতে ঘুরে আসি '" --
আমি তবে রূপোরং মুঠোয় ধরে 
আকাশে উড়িয়ে দেবো ইচ্ছের ঘুড়ি
অতিথি দিন হয়তো মেলে দেবে ভ্রমণ ডানা
কিংবা আহলাদি কিশোরীর মতো
খুনসুটি করবে চলমান সময়।
কিছু ঋণ শোধ হয়না কোনদিন
বসত করে পরম্পরার অস্তিত্বের ভেতর
খেলাপি ঋণের বোঝা নিয়েই
ভাবনারা বয়োবৃদ্ধ হয়   
তুইময় ক্যামেরার ভেতর ঝলসানো ছবিগুলো
হয়ে ওঠে আভিজাত্যের প্রতীক 
অভিমান জাগে না
বিষাদ বাড়ে না
অনুভূতির পরমায়ু নিয়েই খুলি
মানবিক সভ্যতার অবগুন্ঠন।