বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
প্রিয়জন, কেবল তোমার জন্য
এক একজন মানুষ এত ভালোবাসে
আমি তার যোগ্য হতে পারিনি এখনও
আমার সমস্ত দাগ মুছে দেয় জলে
প্রেমে অন্তরের বিশুদ্ধ দ্রবণে
শুভ্রতায় ভরিয়েছে কবিতা উৎসব
এই সাদা স্পষ্ট এক স্বপ্নচর্চী
মানুষের কাছে
ভালো লাগে
হাতের তালুতে তাঁর স্পর্শ লেগে
থাকে
ঋণ বলব?
তেমন স্পর্ধা নেই
কেবল প্রীতির ছোঁয়া লেগে থাক
প্রত্যহের পথে।
আলোর সীমান্তে
আলোর সীমান্তে এসে থেমে যায় পা
দূরের দীঘিতে ভাসে ঝাপসা
নীল গাছের গরিমা
ম্লান চোখে দেখেছি ইশারা তার
কেউ যেন জড়িয়ে রয়েছে জলে
চিনি তাকে ?
যে বেঁধেছে স্নেহের কাজলে
ঠোঁটে তিল, নিভে
যাওয়া হাসির দ্রাঘিমা
সে আমার মেজো পিসি নয় ?
অবিকল তার মতো
ছায়া ছায়া অতীত ফেরানো আঁখিতীর
আলোর সীমান্তে এসে সেও যেন থেমে
গেছে,
স্থির।
রোদ্দুর , পালক, ছায়াছবি
১
এই যে অবাধ্য পা, বেঁধে
বেঁধে রাখি
শেকলের দাগ মুছে বেলা বাড়ে
গনগনে হয়ে উঠে ভেতরের আঁচ
শেকলে রোদ্দুর এসে পড়ে ।
২
জলের ক্রমশ নীচে ডুবে গেছে জন্ম আয়োজন
সেই মগ্ন ছায়াতরু
যে ডালে ইচ্ছেকুসুম ফুটে
পাখিগুলি উড়ে যায় দিগন্ত শহরে…
কয়েকটি পালক পড়ে থাকে।
৩
তারে কেউ অপেক্ষা মেলে দিয়েছে
এই জলবাদলের দিনে
কেমন গুমোট গন্ধ
আমি ছিপ ফেলে বসে আছি
এক টুকরো রোদ্দুর
কখন ফাতনা নড়ে উঠবে ।
অসুখের রাফখাতা
নীরব মুহুর্ত কেউ ফেলে গেছে এখানে
ওখানে
সাদা খাতা কুঞ্চিত মুখের রেখা
ম্লান
পায়ে পায়ে অনেকদূরের পথ
ফ্রেমবন্দী
ডাকবাক্সে নিরালা দুপুর
নিজের ছায়ার সাথে কথা বলে
মুদ্রিত শব্দেরা
প্রলাপের ভাষা অক্ষরের ঠোঁটে স্মিত
জেগে আছে স্থির দৃশ্যে ।
শূন্যস্থান ভিজে যায় শুদ্ধ নীরবতা ।
তথাগত
এই বোধিবৃক্ষতলে প্রেম বাঁশি হয়ে
বাজে
সেই সুর কেঁপে কেঁপে জ্যোৎস্নায়
স্নিগ্ধ করে চারপাশ
শিল্প শব্দ সঙ্গীতের সমস্ত সরণি
তপস্যার এই পথ প্রসবযন্ত্রণায় কুরে কুরে খায়
কী খোঁজে ?
অনন্ত রাত্রিহীন ঘুমে ছেঁড়াখোঁড়া
তন্দ্রার ভেতর
জ্বরে তাপে শোকে শুশ্রূষায়
আরোগ্যভূমির পাশে অপলক চেয়ে থাকে শ্মশানের
ছায়া
কোথায় মুক্তির পথ ?
অখণ্ডমণ্ডলাকার সেই সত্য জীবনের রূপ রস ধ্বনি
তৃষ্ণার্ত অন্বেষণে অস্থবির হাত
ভেঙে দেয় ঐশ্বর্যের আলোমুখ ,
সুন্দরী একান্ত নারী , দাম্পত্যস্থাপত্য, অপত্যের মায়াবী আঙুল
তাকে ফেরাতে পারেনা ।
সত্য শুধু সত্য আর শিল্পের নির্মম
অক্ষর
সুজাতার পরমান্ন , নির্বানের পথ ।