বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

অর্ঘদীপ পানিগ্রাহী


অর্ঘদীপ পানিগ্রাহী 

আমি সরে আসি

... বিগত তিরিশ বসন্তের রেশ ধরে,

অসহ্য বিরহ বেদনার জাঁতাকলে পিষে গেছি আমরা |  মানে আমি আর আমার তুমি আর আমাদের আদ্রর্তা মোড়ানো শৈশব | নির্বাক শিহরণ প্রতি পদে পদে |  নাগপাশে জড়িয়ে নেওয়া সুখ |

ভাষাভঙ্গির দিকে খেয়াল না ক'রে নিরিবিলি পাখির ব্যথাতুর শব্দের ভীড়ে , অনুভূতির আলতো প্রলেপে তুমি

- উইল ইউ বি মাই ভ্যালেনটাইন

( হঠাৎ ক'রে আজ তুমি এত নিশ্চুপ..! শান্ত |  তোমার রূপের খুঁটিনাটিতে আজ বড্ড এলোমেলো | যেন বিদায়বেলা পাথর বুকে অদম্য ইচ্ছেগুলোকে কুক্ষিগত করার অভিপ্রায় | ভয় হয় আমার | আমি সরে আসি )

আমি হতবাক ময়ালটাকে শরীর দিয়ে ঢেকে নিয়েছি | প্রবাহিত বসন্তের খোলশে টুকরো টুকরো বেরঙিন বিষের মিশেল | অভিব্যক্তির সূত্র ধরে কথাদের আলগা হাতে...

- সত্যি কি আমাদের ভালবাসা ? ভালবাসা বলে কি কিছু আজ ও বাকি..! তবে সে ভালবাসা একতরফা সহমর্মিতা |








প্রতীক্ষা শুরু....

শব্দেরা নিহত | ইচ্ছেপূরণ আর হয় না | প্রবাহিত মানুষের স্রোতের মাঝে শ্বেতপাথরে নুয়ে পড়েও ছুঁতে চেয়েছি |  কি ক'রে আর পাব..! ভ্রমর ভীড়ে নিজেকে যে তুমি সরাতে পার নি | ভালবাসার দিবসে খুব কাছাকাছি আমরা | আবেগি মন বারবার হস্তক্ষেপ ক'রে যাওয়া আমাদের সুখ | আমার তৃষ্ণার্ত শরীর | আজ প্রতিশ্রুতি নেই প্রেমের অনিশ্চয়তার গভীরে |  ভালবাসি আমিও | বোঝাই কেমন..!

চন্দ্রমল্লিকা হয়ে আমার কবরে রাত দিন তোমার গন্ধে চিনিয়ে গেছ আমার দুনিয়ায় তোমায় | হলদে পাতায় প্রতি বসন্তের আহ্বানে আমরা যৌবনের পানসি ভাসাই মনের মরা গাঙে | 

মাতাল হাওয়া | মহুয়ার কোলাজে ভগ্ন দুপুর | সাফাই শুরু হল কবরের চারপাশ | সুখ শান্তির নাকি ধর্মীয় সমাবেশ হবে | আমাদের কথা অবিরত | তুমি থমকে যাও নীলকন্ঠ হয়ে |  আমি একাকীত্বে ভুগছি | খুব একা |

আমি থেমে যাই হঠাৎ , তুমি রাতে তো আর আসো নি | চেয়ে দেখি তোমার সমাধি | তোমার মুখে তখন ও জীবন লেগে ছিল |

প্রতীক্ষা শুরু | অন্য কোন বেশে বিরহ বেদনার






অপার্থিব ভালবাসা

~~কতটা ভালবাসো তোমার বৃষ্টিকন্যের ভালবাসায় ? সত্যি বেসেছ ভাল ! নাকি তুমি ও বিদায় নেবে কালক্রমে কোন পাথরের স্মৃতিসৌধে ? আর আমি শোকের বাসরে...! যদি সত্যি তাই হয় বেসো না ভাল ; আমি সেই ঝিনুক নয় যে মুক্তো হারা হয়ে বেঁচে যাব...

~~সত্যি কি ভালবাসি না..! সত্যি ছেড়ে যাওয়াতে ভালবাসা নেই..? তবে ছেড়ে যাওয়া না যাওয়া সব ই তার আজ ও.. নিয়তি কুক্ষিগত করার সাধ পারে নি তোমার অবাধ্য মেঘ.. সে তো শুধু বিরহে আপন মনে সৃষ্টি ক'রে বৃষ্টি আর যতদিন এই মেঘ জন্ম নেবে ততদিন বৃষ্টির অস্তিত্ব.. বৃষ্টি মেঘ হারা যেমন বাঁচে না তেমনি মেঘ বিরহের জ্বালায় মরুভূমির বুকে মিশে যাবে , আর একটা ভালবাসার নীল নদ মরে ও বাঁচবে না..

~~আর তোমার সাধের নিকোটিন সে..? যাকে তুমি তোমার সঙ্গী সাথী বা স্ত্রী র অধিকার দিয়েছ ; রাত ভর ধোঁয়ার কুন্ডলীতে আমায় বিষবাষ্পে বাঁচিয়ে কি লাভ পাও..! তাতে বরং আমি সরে গেলে তোমার খেয়াল নেওয়ার কেউ থাকবে না , আর রাতের আকাশের এই তারা না হয় তোমার খেয়ালে বেঁচে যাক |  সমাপ্তি হোক্ ভুল বোঝাবু্ঝির.. জীবনের খাতায় শূন্যটা না হয় আমি ই পেলাম..

~~বাঁচিয়ে রাখি নি তো..! বরং বেঁচে আছ |  কিভাবে শরীরের শিরা আর ধমনী আলাদা করি..? বেঁচে থাকা বলতে শুধু ছবিটুকু আর এই ঘরে তোমার অপূর্ণ নিঃশ্বাসেরা ; যা আজ ও আমার প্রশ্বাসে স্বপ্ন দেখে নতুন পৃথিবীর.. আর তোমার ছবি যা রোজ এঁকে যাই বুকের অভ্যন্তরে হয়ত তাও রয়ে যাবে আদি-অন্ত কালের বিলীনে..! আমি আর আমরা তবে আজ থেকে না হয় পাশাপাশি তারার মধ্য গগনে ভালবেসে আর একটা স্বর্গে ফিনিক্স পাখির জন্ম দেব | আর পড়ে থাকুক অপার্থিব এই ভালবাসা |








ওলট পালট ..

যদি এমন একটা রাত...!

যে রাত হাজার সন্তান হারার বুকে গড়ে ওঠা তরুণ মরুর অবগুন্ঠনে গড়ে দেবে শান্তির মরুদ্যান |  কান্নাদের ভীড় যেথা খুঁজে নেবে আশাবাদী শত পুঞ্জীভূত মেঘ |  যে মেঘেদের ভীড় কখন ও কোন সময় কোন মায়ের বুকের সন্তান কেড়ে দিয়েছে হাজার শূন্যতা |  তাদের ই জয়ধ্বনিতে, প্রতিপদে মায়েরই আর্শীবাদে প্রশস্ত সেথা সন্তানের কন্টকাকীর্ণ পথ...

এমন একটা রাত....!

যে রাত শীতল আবেশে মরে বাঁচা সেই মানুষদের হাপিত্যেশে উপস্হিত হবে অসময়ের শান্তা ক্লজের বেশে, কখন ও সেই রাত মৃত্যু দূত হয়ে চালিয়েছে হাজার রকমের ছিন্ন অবসন্ন বেদনার ধ্বংসলীলা..

যদি এমন একটা রাত.....!

সুখ দুঃখের বিভেদগুলো এক সুতোয় গেঁথে, উৎসবের মিলন ক্ষেত্রে রাঙিয়ে নেবে এক শতাব্দীর রঙিন বসন্তে, পলাশের হলদে আভায়....

যদি এমন একটা রাত.....!

শুধু রাত নয় যা জন্ম দেবে হাজার রাত আর হাজার রাতের বুক চিরে জন্ম নেবে হাজার প্রেমিকা |  ঠিক তোমার মত তারা ও তারা খসা দেখে নয় বা বিরহের গানের চেয়ে সুখ হয়ে আমার মত (অ)প্রেমিকদের হাতের কবজে, শরীর জুড়ে হাজার বসন্ত কাটিয়ে বেঁচে যাবে অন্য যুগে....

যদি এমন একটা রাত...!







সেই রাতের কথা

শুনশান রাস্তা |  বোবা গাছগুলো নিজের মধ্যে নিস্তঃব্ধতা চেপে ভিজছে | আকাশের তো সেই সকাল থেকে মুখ ভার | ল্যাম্পপোস্টের ছায়ায় আস্তে আস্তে কেমন এক মায়াবী রাত | প্রশ্ন করি রাস্তার পাশে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা সারাদিনের যে মানুষদের মাথায় ছাতা ধরার কেউ থাকে না তাদের আশ্রয় বা ওই সারমেয়রা যাদের এদিক ওদিক ছুটে বেড়িয়ে লাথি ঝাঁটা খেয়ে শেষমেশ একটা আস্তানা ,একটা শেড ,যার নিজের বলে কিছু নেই শুধু দাঁড়িয়ে থাকে মাঝেমাঝে সৌন্দর্যয়ানের কথা মাথায় রেখে ঘসা মাজা রগড়ে রগড়ে তার জং ধরা পাঁজরে লাগানো হয় সিলভার কালারের প্রলেপ |  বেশ লাগে ওই কয়েকদিন | তারপর যেই সেই সাহেবী বাবুরা ঈষৎ মুখ বেঁকিয়ে পানের পিকে যেই শুভারম্ভ ক'রেন, তারপর তো হামেশাই কে আর খেয়াল ক'রে ! রকমারী পোস্টারের পড়ে একে একে আর তার মাঝে নিজেকে খুঁজে পাওয়া বড় দুষ্কর যেন খড়ের গাদায় দেশলাই খোঁজার হাল | প্রশ্নটা ছিল এমন সারাদিনের এত পরিশ্রমের পর কি পাও ? উত্তর - " আপনাদের সুখ "  হঠাৎ  'রে চমকে দেখি সেডের তলায় বসতে বসতে চোখ দুটো জুড়িয়ে গেছিল প্রায় ৪ ঘন্টার জন্যে | কিন্তু উত্তর কে দিল ? পরে আরেকবার উত্তর , " আমরা ঠিক আপনাদের মত অন্যের সুখ মিটিয়ে হারিয়ে যাই হাসি মুখে "