তৈমুর খান
মোকাবিলা
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে
এবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছি
যারা অস্ত্র ও আগুন নিয়ে সামনে
দাঁড়িয়ে আছ
তারা শুনে যাও : এটাই সেই মুহূর্ত
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার
আমাদের ধৈর্য ভেঙে পড়ছে
আমাদের সহিষ্ণু আত্মারা অসহ্য হয়ে
উঠছে
আর ভয় দেখিও না
আর তরবারি দেখিও না
আমরা পাথর হয়ে উঠছি এখন
নিবরা
দু একটা ফুলের গোছা, জলচৌকি
আঁচল উড়ছে
এলোচুলে বসে আছে নিবরা
ভোর হয়ে এলো, লগ্ন
অতিক্রম করে যাচ্ছে
ধান দূর্বা চন্দন ––সমস্ত
মন্ত্রপাঠের আয়োজনে
এখনও সংকেত এসে পৌঁছাল না
আমরা ঘর-বাহির করছি
আমরা বিপন্ন পিতা-মাতা…..
আমরা যা চেয়েছি
আমরা বিকেল চাই
চায়ের দোকান চাই
এক খণ্ড ছায়া চাই
আর খুব গল্প চাই
উড়ে যাওয়া স্মৃতির মেঘের গল্প
গোধূলির রঙিন নখে
রমণীরমণ শোভা জলে নেমে এলে
আমরা স্মৃতিরঞ্জিনী নূপুরের বাজনা
চাই
আর প্রত্যেকের বুকে বুকে ঢেউ
আমরা পাখির যৌবন চাই
বনপথে মর্মর আবেগ চাই
আমরা হৃদয় চাই
হৃদয়ের জাগরণ চাই
একটি হ্রদের পাশে
আমাদের রাধা হওয়া মন
পৃথিবীতে খুঁজে পেতে চায় বৃন্দাবন
নৌকা
এই নৌকায় প্রতিদিন দাঁড় টেনে যাই
যতই হাওয়া দিক
অনুকূল আসে না আমার
জলের সঙ্গেই কথা
কষ্টের সঙ্গেই সংসার
দার্শনিক দু একটা বক দূরের চড়ায়
চুপচাপ
ঢেউ ভাঙে
কিনারায় গড়ে যায় ধ্বস
সব ঐশ্বর্য আলোকিত হয়ে জ্বলে
ধ্যান ভঙ্গ হয়ে যায় আর্যৠষির
কুরুক্ষেত্র মাঠে জমে ওঠে
প্রণয়শিবির
নৌকা তবু দুলতে দুলতে চলে
আমাদের শীতমাস নষ্ট কৌতূহলে
সিরাজউদ্দৌলা
ইতিহাস বিলুপ্ত হয়নি
শূন্য বাড়িঘরে এখনও চলাফেরা
এখনও শুনি তোমার পদধ্বনি
চেয়ে আছে নির্ঘুম রাতের নক্ষত্ররা
এখনও তোমার উজ্জ্বল মুকুট
ধ্বনিময় একটি যুগ ফিরে ফিরে আসে
আস্তাবল জুড়ে ওঠে চিৎকার
পরামর্শরা তোমাকে জাগায় এসে
যত ঢেউ ওঠে গঙ্গায়
যত রক্ত গড়ায় আমাদের
রক্তের ভেতর জেগে ওঠে দেশ
আত্মত্যাগ আর অবিরাম যুদ্ধের
মীরমদনের ছায়া, মোহনলালের
বিক্রম
আজও দেখি আমাদের অঙ্গীকার
তুমি সেই আলো, সেই
দীপ্ত পথিক
আমাদের তীব্র পৌরুষের দৃপ্ত অহংকার