বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

দিব্যেন্দু শেখর দাস


দিব্যেন্দু শেখর দাস

মানুষ

দেওয়াল তৈরী হয় মনের ভেতর
বিনোদন যন্ত্রে ক্ষুদ্র স্বার্থে মানুষ হয় স্বার্থপর।
সূর্য চায়, চাঁদ চায় ভুরি ভুরি আয়োজন
এ বলে আমায় দেখে শেখ,ও বলে আমায় দেখ
শিকল ছেঁড়া হাতে নিঃশব্দে অন্ধকুটিরে
একরাশ কালো মেঘ সরিয়ে প্রদীপ বুঝিয়ে দেয়
গরীব হতে পারি কিন্তু বড়ো আমার মন।
দুঃখগুলো জমতে জমতে একদিন এভারেস্ট ছুঁয়ে ফেলবে
আর কতদিন আঁচল ভিজবে জানি না
কেউ পায় না শুনতে অগ্নিমূল্যের ক্রন্দন ধ্বনি
মঞ্চে মঞ্চে দরদী অভিনয়, অডিটোরিয়ামে ফেটে পড়ে হাততালি।
উলঙ্গ রাজার দেশে ছেলে প্রশ্ন করে বাবাকে
এরা কারা? এই তপ্ত দুপুরে মিছিল কেন করছে?
দীর্ঘ দিন দীর্ঘ রাত কেটে যায় প্রহরীর বেশে
গাড়ির কাঁচ তুলে বাবা বলে, ও কিছু না
কিছু স্বপ্নসন্ধানী মানুষ রাজপথে নেমেছে ঈশ্বরের খোঁজে।







অন্যজগৎ

মান্ধাতা আমলের মতো আমি নাকি প্রাচীন
লোকে বলে,আরও অনেকে খতিয়ে দেখে বিস্ফোরক সব তথ্য।
ভূগোলের সীমাবদ্ধতা নেই তাই নিজেকে গুটিয়েছি
গ্রহেরা চলমান আর আমি ভেতো বাঙালী
বাড়ি ভিড় করে হালখাতার দেনা ভর্তি কার্ড।
কী যে সব আবল তাবল ছাই পাঁশ লিখেছি ঘর সাজেনি
কেউ বোঝেনি হয়ত বোঝাতে পারিনি
রাতের অলিগলিতে জেহাদিরা ঢুকে পড়ে
ভয় দেখায় হিসাব চায় কী পেয়েছি কল্পনার জগৎ বোনা বন্ধ কর
কী করে বোঝাই আমি যে অন্য জগৎ -র স্বপ্ন দেখেছি।








চিত্রনাট্য

ধারাবাহিকের ড্রইংরুমে আমি পরাজিত সৈনিক
রাসবিহারী মোড়ের গেস্ট হাউসে আজকাল যাই না।
ত্রানের জন্য হাত পাতা বন্ধ করে দিয়েছি
কলকাতাতে মাঝে মধ্যে দেখি চেনা রবির অচেনা রূপ
সম্ভবত আমি এখন  টেলিভিশনের চর্চিত সিরিজ।
সাড়া পাই না
মনোরঞ্জন ছেড়ে চাকরি খুঁজতে বেরিয়েছি
চিত্রনাট্য বদলে ফেলে পুনরায় জমি দখলের লড়াইয়ে নেমেছি।








স্বাদ

জ্বলন্ত মরিচীকার বুকে দাঁড়িয়ে আছি
রক্ত শুকিয়ে কাঠ,বেমানান ভালোবাসা
আজ পরিচিত লোকেরাই করেছে বদনাম,
লাভ খুঁজেছে প্রতিটি শরীরে চেয়েছে অতিরিক্ত লাভ
হুইল চেয়ার সঙ্গী এখন জয়ের শিরোপা যার নাম।
খানিক রহস্য,আড়াল রেখেই জীবন উপভোগ্য
বিলাসবহুল চাই না আর,চাই মুক্তির স্বাদ।







সাক্ষী

উষা গোধূলীর লুকোচুরিতে কাঠের মিল,ধানের ক্ষেত
কারখানা জুড়ে অসংখ্য ছেলেবেলা হারায় প্রান
সময়ের বহমানতায় নতুন হয়ে যায় পুরনো
ঋণ স্বীকার করে না কেউ ক্যালেন্ডারে শুধু পাতা উল্টে যায়।
লাল কালিতে পয়লা মে প্রাচীন,ঐতিহ্যময়, অসামান্য
শ্রমিক দিবসের ডাক দেয়,হয়ত তোমরা আমরা শ্রমিক তাই রিমাইন্ডার দেয়।
শুরু হয় আগ্রাসন নীতি চারিদিকে দখলদারী
মাইকে শুধু বাতেলা ভাষন আমরা মেহনতি মানুষদের জন্যই।
যুগ থেকে যুগান্তর হাসি আর কান্না,
সুখ চাই না ওটা বিলাসিতা এটুকুই তো আমাদের সম্বল
ভাঙা গড়ার খেলায় কেউ ভাবেনি, কেউ কথা রাখেনি আছে চন্দ্র সূর্য সাক্ষী
মন্দির,মসজিদ অটুট রয় গরীব আরো গরীব
লোভাতুর চোখ গুটি সাজায় চাষার ছেলে যেন হয় চাষী।