শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়
পিছুটান
বড় পিছুটান বড়
পিছুটান কবি
দুই পা এগিয়ে চার
পা পিছিয়ে পড়ি...
প্রদীপের নীচে ঘন
আঁধারের মতো
বাস্তব আজ খেলনার
হাঁড়ি-কুড়ি।
তোমরাই পারো ভুলে
ভরা সঙ্গমে
কাব্য শয্যা
সাজাতে অলীক ছাঁচে;
যযাতি যেমন চুরি
করা যৌবনে
পুত্রের দেহে উদ্বাহু
হয়ে নাচে...
পাথেয়
দহন আমার একার
পথিক,
তুমি অনঙ্গ বায়ু;
ভীষণ শরীরি
দাবিতে তবুও
অনুভূতিহীন
স্নায়ু।
সুখানুভূতিতে
ভেসে যেতে চাও
ক্ষরণের অভিলাষে;
বেদনার বোধ নেই
যে হৃদয়ে
সে কী করে
ভালোবাসে?
এ বারে তো আর অংক
কষেও
মেলাতে পারিনি
কিছু –
আর একটি বার
ভাঙতাম সিঁড়ি
তাকিয়ে দেখতে
পিছু।
আগুন তোমার
যতখানি প্রিয়
ততখানি প্রিয় জল,
একই আধারে তৃষ্ণা
ও দাহ
একাধারে হলাহল।
সামান্যতম আঁচড়
কাটতে
পারিনি তো এইবারে
বেদনাবিদ্ধ
চিবুকটুকুই নিয়ে
যেও সাথে করে।
অবশিষ্ট
মন খারাপের শপথ
নিয়ে খেলা
মন খারাপের দলিল
লেখে কবি।
আস্ত একটা আকাশ
ভরা প্রেম
মনের ভেতর জমানো
তার ছবি।
তোমার জন্য দারুণ
কিছু করা
নাই বা হল
আটপৌরেই থাকি।
তোমার চোখে না হয়
পাঁচপেঁচি,
বিশেষ কিছু থাকুক
তোলা বাকি...
যেই না বলে হঠাৎ
চলে গেলে,
পিছু ফেরার উপায়
যখন নেই,
তখন দেখো
পর্ণমোচীর মতো
সাজতে বসি জীর্ণ বসন্তেই!
দুঃসহ সময়
সময় বড় দুঃসহ, দুঃস্বপ্ন
নও তুমি
নিজের
প্রতিবিম্বে আঁৎকে উঠতে হয়
একি সেই আমি?
দিবাস্বপ্ন না
হলে স্বপ্নের স্থায়িত্ব
বড়জোর কয়েক লহমা।
ভয়াবহ দৃশ্যপট
ভাসে ও মিলোয়
ঘামে ভিজে শয্যায়
উঠে বসে নিশ্চিন্ত -
যাক, তাহলে
ওসব সত্যি নয়।
দুঃসময়ের বাস্তব
মুহূর্তগুলো অনন্ত
দৈনন্দিন বাঁচার
আপুসে অভ্যাসগুলো
বলতে বাধ্য করে, আর
কত দূর?
করাল স্বপ্নগুলোর
অপরাধ মাফ করে দিই
দুঃখের মতো, আর
যাই হোক
তারা চিরসাথী নয়।
আমন্ত্রিত জ্বালা
তুমি আমার
আমন্ত্রিত জ্বালা
লাগাতার
বিষন্নতার গান
অকারণ মন খারাপের
পালা
সুস্থ দেহে তুমুল
আনচান।
যেন ছোটা ঘুর্ণি
ঝড়ের পিছু
শেষটায় বিষাদ
সিন্ধু ডুব
অকারণ কথার পরেই
ঠিক
বাচালতা করার
লজ্জা খুব।
অভিমান দুর্বলতার
কাছে
গো হারান – পুড়ছি
নতুন করে
অবষাদ ক্লান্তি
আমার সাথী
তুমিও তো কাঁটার
মুকুট পরে।
লিখে ফেলো তোমার
পদ্যখানি
উপাদান আমার হাড়
পাঁজর
আমিও যে কলম ধরতে
জানি
শোনাবই সময়
খোঁজার পর।