শীলা বিশ্বাস
জলটুঙ্গি
যত্ন করে তুলে রাখা স্মৃতিবীজ
জীবনের জলটুঙ্গি থেকে একে একে শস্য
ছড়িয়ে গেছ
জলধারায় ভেসে যেতে চাওয়া অস্ফুট
অক্ষরদানা
আমার বোধের ছাঁকনিতে ধরা পড়ে গেছে
ভেসে যাক দেখি
চাতকজন্ম
শুকনো নদীর গতিপথ ধরে
মধুর স্মৃতি নিয়ে নুড়িপাথর শুয়ে
কখন বয়ে যাবে স্রোত
মেলে রাখা সুডৌল শরীর ছুঁয়ে
মেরু
সত্তার দিক থেকে
শূন্যতার দিকে
যে আমাকে ঘুরিয়ে দেয়
তাকে বর্জন করেছি পথে ।
সে আমারই অহঙ্কার ।
শূন্যতার থেকে সত্তার দিকে
নিয়ে আসে নীরবে
আলোটি ধরে রাখে
সমস্ত পথের সামনে ।
সে আমার কবিতা
সম্পাদ্য
জমাট অন্ধকার উঁকি মারে না-মেলা সম্পাদ্যের
কম্পাসের কাঁটায়
বিন্দু হয়ে আসা এইসব চিহ্নরা ক্রমশ বড় হতে থাকে
ছিঁড়ে ফেলে নতুন অঙ্ক খাতা, বিন্দু
ক্রমশ দীঘি হয়ে যায়
ছেলেবেলায় আমার সম্পাদ্য মিলত না বলে অঙ্ক স্যার
খুব বকত ।
পিউদিদের বাড়িতে অঙ্ক স্যার আসত ।
ইন্দিরা গান্ধীর খুনিদের যেদিন ফাঁসি হয়েছিল
তার ঠিক পরের দিন পিউদি গামছায় ফাঁস দিয়ে
একেবারে ঝুলে পড়েছিল
অঙ্ক স্যারও নাকি গলায় দড়ি দিয়ে...।
পরিনত বোধে সেসব কাঁটাছেঁড়া করতে গিয়ে নতুন
প্রেক্ষাপট প্রস্তুত করি
ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট আর বেঁচে থাকার কষ্টের তুলনা
টানি
যারা স্বেচ্ছায় চলে যায় তবে তাদেরই কি মিলে যায়
সম্পাদ্য ?
আতসকাচের নীচে
প্রত্ন ডায়েরীর ধূলো ঝেরে শুরু হয়
আতস কাচের চিরুনী তল্লাশি
সূর্যের আলো লেগেও আনন্দপঙক্তি
কিরকম নিস্প্রভ নিঃসঙ্গ
কাচের নীচে হলুদ দুঃখপঙক্তি
আশ্চর্যরকমের বড় হয়ে যায়
তীক্ষ্ণ আলোকরশ্মিতে ভালোবাসার
উচ্চরণ
প্রথমে নিজে জ্বলে তারপর ডায়েরীটা
ক্রমশ জ্বলে যাই সমগ্র আমি......
।।