বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

শুক্লা মালাকার


শুক্লা  মালাকার

ইর্ষা

নতুন পাতাদের দুঃসাহসিক দোলন

রঙিন প্রজাপতিদের ওড়াউড়ি

ছলবল কলবল ঝকঝকে হাসি

স্লেটরঙা আকাশের নীচে পাতাঝরা

গাছের শুকনো ডাল আড়চোখে তাকায়

দিন ছিল তারও, তবু

ঢলে পড়া নবীনের টকঝাল শিহরণ

বাড়াবাড়ি মনে হয়



পঞ্চাশোর্ধ্ব হৃদয় ধুকপুক

দরজা আগলে বসে আছে শমন।









কথা ছিল

কথা ছিল নিজের মতো হবে

পরের হাতে জ্বালবে না মনের আলো

চিহ্ন খুঁজে এঁকেছ তোমার দেয়াল

দীর্ঘ ভাষণ ডেকে এনেছ ঘরে

বাসা গড়েছ নির্বোধ ভাবনার

তেল মেখেছ মশায়ের গরম পায়ে

সকলের মতো তুমিও পেলে স্বাদ

নিয়েছ কেড়ে যা যা কাড়বার আছে।



ভিতরে ভিতরে যেই লেগেছে ত্রাস

ভাঙবে সুযোগ এবার সর্বনাশ

ফুলকি দেখেই ভাসলে নতুন জলে

স্রোতের টানে ঘুড়িয়ে নিলে নৌকো

কথা ছিল, নিজের মতো হবে

সেই পরের হাতেই জ্বাললে সুখের আলো।  








কবিতার শব্দেরা

বেশ কয়েকদিন পর আজ হঠাৎ

ভীষন ভাবে কবিতা পেল

ঠিক যেভাবে কাম পায়

অনেকগুলো উপবাসী রাত কাটিয়ে

আগ্রাসী ঔরসের জমায়েত

ছিন্নভিন্ন করে নির্জন নিরবতার দূর্জয় শ্বাসন,

তেমনি, পঙ্গু দিশেহারা শব্দেরা

প্রবল প্রেমহীনতার তোড়ে

ভাসিয়ে নিয়ে যাবে দূর্ভেদ্য অবসাদ।



নারকীয় নিঃসঙ্গতার কাছে কবিতা- 

দুঃখী, ব্যার্থ মানুষের

মুক্ত শব্দভাণ্ডার।








নাচুনী কবিয়াল

ছিলাম বসে আলছায়ায়

আমি নাচুনী কবিয়াল

ভাদ্র শেষে মেঘ সরিয়ে চাঁদের উঁকিঝুঁকি

দিব্যি পেলাম হাঁড়ি

ভিতরে হিজিবিজি সুখ

ডোরাকাটা উল্লাস

আমিও ভরে ফেলি সোনালি পালিশ

টুটাফুটা রাস্তা শুয়ে থাকে

রূপসী স্বপ্ন মেখে পাড়ি দিই

না ফেরার দিকে

পিছন থেকে কে যেন চেঁচিয়ে বলল

তুই তো গর্বিনী।








আকাশ

আকাশের গায়ে সূর্য আলো ছড়ায়

জেগে ওঠে সবুজ পৃথিবী, চাঁদ

বৃষ্টির জন্য দরকার একখন্ড কালো মেঘ

কালো মেঘ জমে ওঠায় চাই আকাশ

আকাশ খোলা পড়ে থাকে

নীচে মানব যাপন



মানুষ হতে গেলে আকাশ হওয়া চাই।