বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

শাহানারা ঝরনা


শাহানারা ঝরনা

হলুদের ভেতর

সূর্যমুখী হৃদয়ের ভেতর আলোকিত হয় প্রার্থনার তিথি,

ইচ্ছের শ্লোগানে জাগা আটপৌরে মন নিয়ে
মেতে উঠি গেরস্থালীর সুনিপুন আবেশে।

রাতঘুম পাখির বার্তা পেলেই ফসলি দিনকে গাঁথি,
বুকের কিষান পাড়ায় বাজে রুনুঝুনু সুর
যখন তালসুপুরি পাতার ফাঁকে কিশোরি রোদ
এক্কাদোক্কা কিংবা লুকোচুরি খেলে,
মনে পড়ে যায় সই পুতুলের কথা
মনে পড়ে মাটি মানুষের গান
চোখের আয়নায় ভাসে মায়ের মুখ।
আমার বৈঠকি দিন নক্ষত্র বিলাসী হয়
আমি খুঁজে ফিরি কিশোরীবেলা
রূপোলী উঠোন
শাপলা পুকুর
কিংবা লতানো পুঁইপাতার শরীরে
মায়ের আদরের প্রতিচ্ছবি!

স্বপ্নের ডাকপিয়ন আসে না
অনুভবের তুলসিতলায় ঝরেনা সিঁদুর রঙা ফুল
আশা ও আস্থায় চলে বৈপরীত্য সারাক্ষণ।
সমর্পনের খেয়াঘাট ভাসে
নিরাভরন বাতাস এলোমেলো ছোটে
বিষন্নতা ভেঙে আমি হলুদের নির্জনতা খুঁজি
দেখি, হলুদের ভেতরে আমার মায়ের মুখ
শাশ্বত স্বরূপে অনন্যা চিরকাল ,,,!!!








সূত্র মেলে না

আমরা শৌখিন মানুষ তবু
লতানো জীবনের বাঁক বুঝিনা,
শুনিনা বদলের গল্পগাথা
খুঁজি না ঐতিহ্যের ঠিকানা।

যখন ঋণপত্রের ভাঁজ ভেঙে সামনে তাকাই
দেখি আমার জ্যামিতিক উঠোনে
কোন বুনো কবুতর নেই
ঝাঁক বেঁধে উড়ে যায় পাপেট দোয়েলছানারা
মুঠোবন্দী রোদ হার মানে সেকেলে সময়ের কাছে।

দ্বিধার হিমঘরে বসে কেউ
মায়ার সুতোয় বুনি কল্পনার তাঁত
প্রগতির সাফল্যে বাক সংযমী হই
বুদ্ধিমত্তার স্কেলে মাপি ভাইব্রেশন ক্ষমতার গতিসীমা

ক্রমাগত বিস্তৃত হয় আশাময় স্তুতির আকাশ
সমাধানের সূত্র মেলে না কোনদিন।








নিঃশব্দ আঙিনায়

শাহানারা ঝরনা

স্বপ্নের খুব কাছাকাছি আমাকে রেখো

রাঙা হাতে বেঁধে দিয়ো বিশ্বাসের মাদুলী

নিষেধের ঘুঙুর পায়ে যদি হাসে প্রজাপতি দুপুর

খুঁজে নিয়ো মাধবী সকাল --কেননা

ফেরারী সময়ও কখনো স্বপ্নদর্শী মেঘ হয়

মৌসুমি ঋতুর জমিনে খেলে আতশি রোদ ।

যখন মন আকাশে ইচ্ছের জোছনা ওঠে

বাঁধন ছিঁড়ে উড়ে যায় গীতিকাব্যের স্বজন

নিঃশব্দ আঙিনায় শুনি বাতাসের কলস্বর

মেডিটেশনের ধ্যানমুখী প্রহর আয়ুষ্মতী হলেই

ইচ্ছের সাজঘরে বা্জে মনোময় সানাই ।

সুখ্যাতির পান্ডুলিপি হাতে তুমিও আমাকে ডাকো

এলোমেলো পড়ে থাকে বিষাদের পাঠঘর ।









জীবনের পাঠশালা

শাহানারা ঝরনা

আলোছায়া মন বাড়ি স্বপ্নেরা নির্ঘুম

রজকিনী দিন ভাসে সুখ নাচে রুমঝুম

খড়কুটো ভাবনাকে  নকশাতে গাঁথি যেই

নিশিচারী রাত হাসে দেখি আহা তুমি নেই

বুনোফুলে রোদ খেলা মৌসুমি বেলা যায়

মাধুরীত আশা নিয়ে বসে থাকি নিরালায়

কেউ হাসে কাঁদে কেউ দুখে শোকে ঝরে জল

মেলেনা তো কোনদিন জীবনের যোগফল

সময়ের সূচি মেনে খুঁজে ফিরি শুভদিন

কখনো বা আস্থারা হয় বড় সঙ্গিন

জীবনের পাঠশালা কারো কাছে শোভাময়

অবহেলা সয়ে কেউ মেনে নেয় পরাজয়

সফলতা নাই থাক জীবন তো একটাই

বিনিময়ে ভরি মন এভাবেই সুখ পাই ।








মন আকাশে

মুহূর্তকে মুঠোয় ধরে দিকবিদিকে ঘুরছি রোজ

লিখন লিখি শব্দ সাজাই মন মা্নুষের পাইনে খোঁজ

উড়াল পাখি উড়েই তো যায় কেউ ভাঙেনা ডানার ভাঁজ

কনকলতায় শরীর বেঁধেও হয়না মনের নিবিড় সাজ

মিথস্ক্রিয়ায় বিষাদ জমে কল্পনা যায় দূরের দেশ

অরক্ষিত ইচ্ছে নিয়ে পাইনা তো হায় সুখের রেশ

পাঁচমিশালি ভাবনা বলয় ভাঙার সুযোগ যতই থাক

কৌতূহলেই কাছে টানে শক্ত কঠিন দ্বিধার বাঁক

আঙুর জীবন টইটম্বুর হাজার রকম ট্রাডিশন

কখনো বা মন ছুঁয়ে দেয় রূপ বিলাসি মায়ার ক্ষণ

মনাকাশে ঘুড়ি ওড়ে লাটাই থাকে কোন সুদূর ?

ডিজিটালিক রোদে পুড়ে যাবেই ঘুড়ি ইচ্ছেপুর ।