বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

মোহাম্মদ আনওয়ারুল কবীর


মোহাম্মদ আনওয়ারুল কবীর

অন্বেষণে

তুমি আমার স্রষ্টা, কিংবা আমি তোমার - ভাবতে ভাবতেই
শূন্য এসে সামনে দাঁড়ায় -


হেমলক পেয়ালায় ঠোঁট রেখে সক্রেটিস বলে, 'একচুমুক চেখে দ্যাখো অমৃতের স্বাদ!'
আমি শূন্যের চোখে চোখ রাখি
ফিসফিসিয়ে কে যেন বলে যায়, 'শূন্যেরও ভ্যালু আছে, নিরর্থক নয়!'


অতঃপর সক্রেটিস এবং আমি কোরাসে গেয়ে উঠি, ' থ্রি চিয়ার্স বন্ধু!'







রিপুকরা সময়ে

বাতিঘরে জ্বলে উঠেছে ভয়াল সংকেত
ঈশ্বরের ঘরে আগুন!
প্রেমপাথরে ফিনকি দিয়ে ঝরছে নোনাজল
শাস্ত্র ফুঁড়ে নেমে আসা ঋষিরা করছে যজ্ঞ
কোথায় মহেশ্বর!

থেমে নেই কিছুই
ফুলের পরাগায়ন, গাঙশালিকের বসন্তবাসর
বাড়ন্ত ভ্রুনের নিভৃত সঞ্চালন
প্রেমিকার চোখে প্রেমিকের মরণ আর
যুগল স্বপ্নের ঘাসফড়িং খেলা।

রিপুকরা সময়েই ফলাবো মুক্তা
মেয়ে তুমি দিয়ে যাও তোমার ছোঁয়া।







মায়ের মুখ

ঈশ্বরের মুখ দেখিনি কখনো
দেখেছি তোমার মুখ
মঙ্গল আলো দিয়েছো ছড়িয়ে
আজন্ম বসে আছি জন্মক্ষণ বিভায়।

নাড়িকাটা বিভক্তির নিবিড় টান
আমার শেকড় তুমি -
শেকড়েরও থেকে যায় চুম্বকমায়া।

জন্মস্মারক নাভি সাক্ষী
লগ্নশেষেও ইনশাল্লাহ্ আসবে ভেসে
মা, তোমারই মুখ।







হাজারো প্রশ্নে

হেঁয়ালী থেকেই যাবে শেষতক।

বেলাশেষে ডুবদেওয়া সূর্য বলে গেলো কানেকানে-
কী করে বুঝবে তুমি অ আ ক খ;
শুরুটা যে বড়ই গোলমেলে -

বিভ্রমে কত কি যে দেখা
বিগব্যাং, সময়ের ভ্রণ, অঙ্কুরোদগম, বিবর্তন, কত জারিজুরি!
খিঁচুড়ি পাকানো পরম -

হাজারো প্রশ্নে আটকে থাকে সঙ্গমের বাহাদুরী।








মৃত্তিকাঋণ

মৃত্তিকার কাছে আমার যত ঋণ
শোধাতে কি পারি!
মনু নদী আজো তোলে ধ্বনি কুলুকুলু
তীরে পোঁতা নাড়ি জানে কাহন
মা ও মাটির মায়ায় ছড়িয়েছি শেকড়।

শ্মশানঘাটে পোড়ে মড়া, ছাই হয়ে উড়ে দেহ
জন্মস্মারক নাভি থেকে যায় তবু
মমতায় পলিমাটি তোলে নেয় কোলে।

দেনায় দেনায় বাড়ে শুধু দেনা
মৃত্তিকা, নিশ্চিত জানি আমি
সহসাই ফুরোবে এই দিন
মাটির পুতুল মাটিতে যায় মিশে
একদিন আমিও হয়ে যাব মৃত্তিকা
ফলাবো সোনা।

মৃত্তিকার কাছে মৃত্তিকা তবু থাকে ঋণী।