বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

তাপসকিরণ রায়


তাপসকিরণ রায়

বিস্ফোট

বিস্ফোট থেকে  জন্ম নিয়েছিল সে 

লেখা নেই তার জন্ম কথা,

একটু অনুকূল জন্ম গ্রাহ্য স্থান সেই জীবাশ্ম

জন্মাতে জন্মাতে তার লমলম সবুজ আধার

জ্বলে পুড়ে যেটুকু অবশেষ

তার আকৃতি প্রকৃতি একই মত ঢকপদ

তবু সে অজানা, সে বেজন্মা



অনুলোম বিলোম মিলে যে রাক্ষস সৃষ্টি হবে তাকে তুমি চেন না।

প্রকৃতি ফুঁড়ে এক ভূইঁফোড় জন্ম নিলো

তার বেদন কথা কেউ বুঝি জানে না

সব জীবের মাঝে একই ধর্ম কাজ করে না

প্রাণান্তে যে মাংস স্বাদ যেখানে

প্রাণ ভুলে থাকি আমরা

মাংসল স্বাদে চোখ বুঁজি

সে পাখির সৌন্দর্যতা কোথায় যে হারিয়ে গেলো!








পাঁক ও পঙ্কজ

এ দোদুল জীবনের মাঝেই তোমার স্থিতিস্থাপকতা--কখনও তোমার ভোর

দুরের পাখি চলে যাওয়া দেখতে দেখতে তুমি যদি আনমনা হও

প্রকৃতি তোমাতে মিশে যাবে ক্ষণকাল,

আর ওষ্ঠ গ্রীবায় তুমি এক চুমুক জলের প্রত্যাশা করতে করতে

দেখো কিছু থেমে থাকা লেগে আছে বুকের ভেতর

কখনো খুলে নিয়ে তাকে দেখে নিতে ইচ্ছে হয়--

কখনো আপন ঘরের চাবি খুঁজে মরি

কত যে চোরাপথ কোনাখামচি দিয়ে

অবাক হই এই আমির বিস্ময়

আমার ভেতর খুলে দেখি অন্য একটা মানুষ

আনাগোনার মাঝে

থেকেও না থাকার ভানগুলি রয়ে যায়--

কখনো তোমার মাঝে অলৌকিকতা,

তোমার মধ্যেই ফুটে ওঠে পাঁক ও পঙ্কজ !







প্রেক্ষাপট

স্থান-কাল-পাত্রের সবকিছু পাল্টে নিচ্ছে দিকদর্শন

যেখানে হাসার কথা ছিল তুমি কেঁদে ভাসালে, জীবনের উদ্গারে তুমি স্তব্ধ রয়ে গেলে

তোমার ভেতরের খাই খানা খন্দ দেখে আঁতকে উঠল নায়ক,

এখানটায় দুঃখ দিতে হবে--বেহালায় কোন  রাগের  ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিতে হবে

দর্শকমন কাবুতে আনতে হবে। তারপর - বিয়োগ ব্যথাগুলি খুলে খুলে

ধরতে হবে তাদের সামনে--না সে ব্যথায় মুরগি বা ছাগলের স্বর রাখা যাবে না--

তবে কারও কারও মনে  প্রমোদ ভ্রমনের কথা মনে পড়ে যেতেই পারে  

ওদের তৃষ্ণা পাবে এবং এতি-উতি চেয়ে সেই বুবুক্ষু ঘ্রাণ নেবার চেষ্টা করবে

তুমি সৃজনী হয়ে উঠতে পারবে না, আর ঠিক তখন বাস্তব মেনে

নায়িকা তোমায় মোক্ষম একটা চুমু খাবে।

প্রেক্ষাপট আবার অন্ধকার l








ডাস্টবিন

ভুলে যাওয়া স্বাস্থ্যপ্ৰদ। 

নিঃশেষিত আগুন তোমায় জিইয়ে রেখেছে, 

ওম চেতনায় উদ্ভাসিত হচ্ছে তোমার মন, 

আবার প্রেম তোমায় মোহ দিচ্ছে,

ঘ্রাণে মজে যাচ্ছ তুমি, দর্শনে ভেঙে পড়তে চাইছে তোমার অন্তর্দাহ

আগুনের দূরত্বে তোমার ওম,

খোলস ভেঙে বেরিয়ে পড়ছে অসংখ্য পক্ষীশাবক 

আবার সংস্পর্শে মাপন তাপের ভাপে তুমি নিবেদিত হচ্ছ 

ইচ্ছের মাঝে বারবার হেরে যাচ্ছ,

শুধু তুমি নও, একটি নষ্ট মেয়ে পবিত্রতা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসছে 

যে জন্ম নিচ্ছে সে তো শিশু।

তাকে জড়ো করে ডাস্টবিনে ছুড়ে মারতে পারছ তুমিl








বিরহ 

সেখানেও শুয়ে ছিল লতাগুল্ম। 

পৃথিবীর মত সবুজ রসায়নে লতাপাতা

পরিপুষ্ট ফলের মজলিসে সেজেছিল মৌ-বন

কাশ্মীরী রমণীর রং মাঝে একটি চমক লাল আপেল

তুমি দেখেছিলে, সেও হাসতে জানে

ঠিক তেমনি করে অমায়িক চেয়ে থাকে

সে উড়াল পাখিদের উড়ে যাওয়া দেখে

সেই ভাষাহীন নারী এক বল্কল ঋষিকে ভালোবেসে ছিলে।


আকাশে নির্বাক তাকিয়ে ছিলে সে

তারপর সেই ধানাবিষ্ট স্বপ্নঋষিকে দেখতে দেখতে

একদিন সাপ মুক্ত হল। 

সেখানে নিষ্কাম, সেখানে অজস্র পাওয়া ঠেকে থাকে অপেক্ষায়

সেখানে ভালোবাসা থাকে তার অবিচ্ছেদ্য বিরহ।