পৃথা রায় চৌধুরী
বদ্ধ
সংকেত বুঝে চলার চেষ্টা করি,
কোনো ছুরি আমূল বিঁধে গেলে
নিঃসন্দেহে বলা যায়,
শিকার শেষ।
ধরে নিই, শিরদাঁড়া
বরাবর
চাবুক চাবুক আলাপ ফুটে ওঠে
লুকনো লাল নীল পাখনায়
থেকে যায় খেই,
পুরনো কিছু রেশ...
সংগ্রামী মোড়ে দাঁড়াই,
তোমার পুরুষ গন্ধ ছুঁয়ে
কত সহস্র গুটিপোকা
ভিজে ডানায়
মিলিয়ে যায় প্রজাপতি জন্মে।
জ্যোতিষী বলেনি, তবু
ধারণ করে থাকি,
তোমার নামের পাশে
জ্বলন্ত পান্নার বাস্তব
আয়নাজালে একা
মুখোমুখি
মেয়েছেলেটা
কাচ পরে থাক মেয়ে,
তোর চোখের কাজল গলবে এবার বুঝি
দুপুর আঁচে সন্ধ্যারতি, কোনো
বাজারে বাস,
নামের পাশে কালির ফোঁটা
দেখিস বারোমাস।
চিড় ধরেছে ঠুনকো আঘাত পেয়ে...
গুঁড়োয় মেশে ‘রাস্তা
রোকো’, কাঁকর পাথর কুচি
মোম জ্বালাবি, দেশলাইয়ের
রাশ?
শাড়ির ভাঁজের আনকোরাতে
মহৎ সর্বনাশ।
আবেগ গোছা মেয়ে,
ঝাপসা দেখার আদেশ কেবল ঘুমপাড়ানি
শিশি
প্রমাদ গোনে প্রজাপতির ডানা
রোদ উঠেছে, নষ্ট
ঝলক
বাজারদরে আনা।
জীবন অকৃত্রিম
ঠাকুরদালান আড়ি ভাব খেলে
হাফপ্যান্ট ফ্রক পাশাপাশি
তোর বর্ণ পরিচয়ের গোলাপিটা আমার
চেয়ে হালকা,
দ্যাখ দ্যাখ
ছোট করে লেখা ঋতু রচনা মুখস্থ করে
কয়েক বসন্ত পার।
ফ্যালফ্যালে ডিসকভারির পান্নায় লাট
খাওয়া সমুদ্রমানবী শশব্যস্তে
লজ্জা ঢেকে চুলের জট ছাড়িয়ে মিশে
গেল প্রবাল দেহে,
তুমি সূর্যাস্ত নিয়ে এলে ভোর
ছোঁয়ায়।
কৃষ্ণচূড়া পলাশ খুনসুটির নিঃশ্বাস
দিয়ে সঁপে দেয় পাল্লা ভারি আড়ি
কিছু ভাবলেশহীন ভাব জোয়ারে; তোমার
চিঠি প্রচুর জারজ অক্টোপাস বয়ে
উঠে বসে কোলে, কফির
ধোঁয়ায়।
পাখি ডাকে ডানা ভেঙ্গে যায় পড়ে
থাকা কিছু পালকের,
উপকারিতা বুঝে ওড়া শিখে শিকে ছেঁড়া
পাড়ে ভাঙ্গন রোধে
অনেক তুমি তোমার তোমাকে রাঙিয়ে
তুলো তুলো ছারখার।
এখন,
বিকেল গায়ে তুষার গুঁড়োর
বাড়বাড়ন্ত... আগুন ভেসে
পুড়ে যায় অভিমানী।
বপন
গত বছর ঠিক জুলাইয়ের মাঝামাঝি
পোঁতা এলেবেলে গাছ
নাম ছিল বুঝি, এসেছ
যখন থাকো।
এত হাতছানি, এত
ডাকাডাকি, শুনেও না শোনার ভান
জালের শাখাপ্রশাখা, শেকড়
হোক অশক্ত।
এখন সারিবদ্ধ উন্মাদেরা মেঘ দেখে
তলিয়ে যায় আকাশে
কিছুই না বোঝা পাবলিক প্রেম ফেলে
দেয়
তুলি শানিয়ে রঙের সওদাগর
চক্ষুবিশারদ পলকে ছুটে যায়
সাগর ছেড়ে অক্লেশে মৃত্যুমুখী
মরীচিকায়।
তবু সেই চরম জড়িয়ে থাকা চেটেপুটে
জমানোই পরম হয়ে থাকে
একজোড়া জীবন্ত আয়নায় শুধুই
প্রতিফলিত হৃদয়গন্ধী স্বেদ,
সমগ্র মহাকাশ জুড়ে একা অপরাজিতা
বিতর্কের মঞ্চে;
রাধাকৃষ্ণ জপের পরেও রাই, কপালে
তোমার মাধব নামের লাল নেই...
ঋতু বদলে চারা পরিপূর্ণা যুবতী, অথবা...
পূর্ণ যুবক।
পালা
গুনে গুনে চন্দনকাঠই সাজানো হয়েছে,
মণিকর্ণিকায় ভুরভুরে ধূপ, ভুত
ভুত ফুল
কিছু দিশি বোতল।
গুঞ্জন, ডোমেদের
লাল চোখে
শ্মশানবন্ধুর দায়সারায়...
সতীর চিতায় উড়ছে একলক্ষ প্রজাপতি;
স্নানের জলে পাপ জড়ানো,
শুধু ছুরি দৃষ্টি, নিরাবরণ
অনিবার্যের;
মুখাগ্নির আগে পিছে বেশ কিছু
পদস্খলন।
অনাচারী আহার বিহার দৃঢ় মশাল হাতে
রেডি ওয়ান টু থ্রি...