কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
অনুধ্যান
প্রতিবার পড়লে যার প্রতি অর্থ
ভিন্ন,
তাকেই কবিতা বলে জানি ।
প্রতিবার ভাবলে যার অন্য অন্য মুখ,
সে-ই তো মূর্তিমতী প্রেম ।
আলাদা আলাদা যার প্রত্যেকটা ঢেউ,
সেই কি সমুদ্র নয় ? বলো
!
সেই তো ধ্রুপদী সৃষ্টি,
প্রতিবার কান পাতলে যাতে
স্রষ্টার ভিন্ন ভিন্ন কান্না শোনা
যায় ।
অগ্নীশ্বর
প্রান্ত নয়
প্রান্তর আমার লক্ষ্য ।
তাই তোমার মধ্যে অশেষের কামনা
আমাকে মাঝে মাঝে জান্তব রূপ দেয় ।
অন্ত নয়
অন্তর আমার লক্ষ্য ।
তাই তোমাকে বিছানায় ছিঁড়ে খুঁড়ে
ফেললেও
অলক্ষ্য ভালবাসায় আমি অগ্নীশ্বর
হয়ে উঠি ।
হয়ে থাকি ।
গোপন রমণীস্থান
তুলে নাও তোমার শরীর,
ও নিয়ে অনেক কবিতা বহু আগে লেখা
হয়ে গেছে ।
তোমার অলকরাশি, চোখের
নিভৃত নীড়,
সেও তো পুরোনো হয়ে গেল ।
হাতের পাতার শিল্প, কোমরের
খাঁজ,
গোড়ালির অলংকার কিংবা শ্রোণীর
উদ্দাম দোলা,
সব, সব কলুষিত বহুকাল
আগে
অগ্রজ কবির ঘামে, রক্তে,
অনুভবে ।
এবার অকলঙ্ক কিছু দেখাও রমণী,
যা নিয়ে, পুনরুক্তি
নয়,
সৃষ্টি হিসেবে কোন কবিতা লিখব আমি
।
দেবী-ভ্রমরা
ঈশ্বরীর মতো ভেবে
সর্বক্ষণ প্রার্থনায় নতজানু —
আমায়
উদ্ধার করে নাও ।
বর্ষার ফুলের মতো আমিও স্নিগ্ধ হতে
চাই ।
গভীর বর্ষণধারে সিক্ত হতে চাই ।
আমার গোপন রক্তে
পবিত্র পরাগের দল ।
আমিও রিক্ত হতে চাই ।
ধূপ
ধূপকাঠি জ্বলেপুড়ে যায় ।
হাড়ের ওপরে মাংস লাগানো ধূপ
পুড়ে খাক হয় প্রেমের আগুনে ।
পৃথিবীতে ভালবাসা ছাড়া আর কোন শব্দ
নেই
সে ভাবে ।
নিঃশব্দ চরাচরে কালো পেঁচা তবু
ডেকে ডেকে ওড়ে অবিরাম ।