সুরজিৎ্ পোদ্দার
খণ্ডে খণ্ডে উত্তর
১
অজস্র ঘন্টা ধ্বনি...মৃত মেষপালকের
চারণভূমি যেন
অসীম থেকে হাওয়া এসে আবার অসীমে
আমাকে একটু ঘুমোতে দাও হে সভ্যতা
বিচ্ছিন্ন করো সময়ের থেকে একবার
হয়তো কোন প্রাচীন মেয়ে আজও
হিমালয়ের জঙ্গলে
হয়তো কোনো অজানা কারণে আমরা এখানে
তবু...তবু জানতে পারিনি কোন দৈবী
কারণে
নিঃশব্দে সময় পেড়িয়ে গেছে হতাশ
শহরে..
২
কাল রাতে জ্যোৎস্না ভাসিয়ে নিয়ে
গেছে
মৃত কৈশোরের ফসিল
টুকরো টুকরো পাথুরে চৈতন্যে
পালিয়ে গেছে যে মেয়ে ,অগভীর
নিশ্চিন্দিপুরে
তার মৃত চোখের বিস্ময় ...চাঁদময়
অতীতগ্রস্ত এক অচলপুরুষের মত
সেই আলোয় দেখেছি কিভাবে
পথ বক্র হলে সরল হয় মানুষ
কিভাবে রাত্রি গভীর হলে সূর্য জেগে
ওঠে একে একে
কিভাবে সহজ হয়
বিশ্বাস...মায়াইঁদুরের পায়ে পায়ে
৩
পতন নিশ্চিত জেনেও তো একটু একটু
করে ওঠা
আধো আধো করে অন্ধকার গিলে
কাল চাঁদ গলে পড়েছিল ছাদে
অসহায় অপটু সাঁতারুর মতো
সম্বিত পাথর হয়েছিল
স্মৃতি নয় অসহায়...শুধু সেই
নাবিকের হালে
যার মুখ দেখেনি কেউ কোনোদিনই
তার প্রতি বিস্মিত প্রেমে...
সেই আলো মুহূর্তে অক্ষম ছেঁড়া
পাঁপড়ির মতো
শুধু ছড়িয়ে গিয়েছে আগুন
অচেনা প্রতিটি মুখ অচেনা
অন্ধকার সব এক করে দিলে
মৃত্যু তরল হয়
মিশে যায় জীবনের জলে
সেই জলে রোজ আগুন ছড়ায় জ্যোৎস্না
পতন নিশ্চিত জেনে...
৪
আজ সব চোখেই নিমন্ত্রণ তবু
শূন্যতা ছুঁয়েই রক্তের স্বাদ পেলাম
একটা ন্যাড়া গাছ
নির্লিপ্ত প্রশ্নচিহ্নের মত বেগবান
সারারাত শাদা বরফের মত তিলে তিলে
পাথর করেছে আমায়
কোনো অভিশাপে নয় , আশায়
আশায়
গলে গেছে সময়
নিথর যে একভাগ মাটি
তাও মাটি হয়ে গেছে প্রতিযোগিতায়
৫
বিষাদ নদী তৈরি থেকো
গঙ্গাপাড়ের কদম, কৃষ্ণচূড়া,
বট,
অশ্বথ্থের সারি তৈরি থেকো
তৈরি থেকো শেষরাতের মালগাড়ী তোমার
ঢিমে চালে
ভাঙা পিচ, বাধানো
পাড় ধুইয়ে রেখো
হাওয়ায় হাওয়ায় পৌছে যাবে খবর
ছাইয়ের টুকরো টুকরো জুড়ে নিও
অভিমানে
কাদা-মাখা ফিচেল ছেলের নৌকাস্নানে
মনে রেখো, পায়রা
ওড়া ট্রামলাইন সরিয়ে রেখো ।
শেষ বর্ষায় তোমরা সবাই তৈরি থেকো