শুভঙ্কর দাস
সুতোর অধিক
ডানচোখের নৌকা জোয়ারে বামচোখে ভেসে
যায়,
আয়নায় দেখতে পাবে না,
স্পর্শকাতর একটি দিন
হতভাগ্য ভিখিরির মতো
একটি অচল পয়সায় পথ আঁকে
এত দেওয়াল,
এত অন্ধকার,
এত সারিবদ্ধ লাশ
কোথায় যদি মৃদু অথচ মধুর ডাক থাকে
সেই ডাকের জন্য
এ জন্মটা দিয়ে দিলে
কোনো আফসোস থাকবে না
এমন সুতোর পারাপার,
স্বর্গ থেকে নয়,
মূর্তি থেকে নয়,
বরাভয় থেকে নয়
শুধু স্নায়ুসূত্র গর্ভ থেকে।
আনা ফ্রাঙ্কের নতুন ডায়েরি
জীবনকে চারটুকরো করে
কয়েদির থালায় এমনভাবে সাজিয়ে দাও,
যাতে যেটা হাত দিয়ে ধরবে,
শ্বাসের কাছে উঠে যায়
সূচের মতো দেওয়াল।
মূর্তির পায়ে,
অলৌকিক আলোর পাতায়,
ঈশ্বরের পুত্রের হাতে এবং
স্বয়ং ঈশ্বরের চোখে টুকরোগুলো রেখে
এমন প্রশ্ন জাগিয়ে তোলো,
যা দেখে আনা ফ্রাঙ্কের ফ্রকের মতো
দেখায়
অথবা জীবন্ত একটি মেয়ে
যাকে ডায়েরি ভেবে
পাপের বোঝা কমাতে চেয়েছিল,
হে প্রমণ্য করজোড়।
নির্মাণ
শরীরের সবরঙা মাটি বের করে
সুপ্রাচীন বিশ্বাসের ইতিহাস
একটি মিনার তৈরি করো
যাতে যে অপমানিত, তার
মুখ।
যে আহত, তার
রক্ত।
যে পরাজিত, তার
হাত
আর যে লাশ, তার
পুনর্জন্ম দেখতে পায়
এখনও পৃথিবী এমন নির্মাণ দেখেনি
বলেই
এত প্রতিবাদ,আন্দোলন
আর অভিযান।
সময় মাঝেমাঝে মাটি হয়ে দাঁড়ায়!
পালকের গান
সিঁদুরের মতো লাল সূর্য
খনির ভেতর শ্বাসবায়ু হয়ে ঢুকে যায়।
পিতাপাহাড় জানে,
তিনি চলতে শুরু করলে
হাঁটার জায়গা কারোর হবে না!
মাতাগর্ভ সেই খনির কাছে হাত পেতে
রক্তমাংস হয়ে ওঠে
শুধু যারা সেই খনি থেকে বের হয়
তাদের গায়ে সূর্যের দাগ থাকে না,
কয়লা লেগে থাকে!
একটি সাদা পালক ওড়ে,
আঁতুরঘরে,রান্নাঘরে,শোবার ঘরে
সকলে দেখে
সামান্য পাখিকপাল বলে ছুঁয়েও দেখে
না!
ধুলোর মহিমা
শ্রীরামকৃষ্ণ তীর্থে এলেন।
চোখের সামনে কতলোক
আর কতদেবতা ঘুরে ঘুরে উদ্দীপন তোলে,
ঠাকুর শান্ত, সৌম্য, সুন্দর, অবতার।
চোখের কালো জল,
গায়ে হাড়ের চাদর,
মুখে বারুদের ক্ষুধা,
পেটটা পাথর
একটাই সাউন্ড সিস্টে,
হাহাকার।
ঠাকুর নেমে এলেন,
উদ্দীপন সব গুলে গেল।
তিনি কাঙালির একজন হয়ে গেলেন
অবতারের অধিক।