রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮

তৈমুর খান


তৈমুর খান

কাঁপন

একটি কাঁপন লিখি
কাঁপন কি লেখা যায়  ?
হুহু শব্দের কাছে দীর্ঘশ্বাস রাখি
দীর্ঘশ্বাস কি রাখা যায়  ?

যারা গোপন আলো জ্বালে
নিজেদের মুখ দেখবে বলে
আয়নার সামনে দাঁড়ায়
আমি তাদেরই কেউ হই

বাদাম ভাজা খাইনি কোনওদিন
যাইনি গড়ের মাঠে
মাটির দাওয়ায় ভাঙা সূর্য পেলে
কুড়িয়ে নিয়েছি তপ্ত রোদের ঢেউ

বিষাদের স্বাদ যতই তেতো হোক
দুর্ভিক্ষে খেয়েছি তাই
ক্রীতদাসের মতো চাবুক খেয়ে
রাত জেগে বাজিয়েছি বাঁশি

আগুন আমার কাছে এসে
ভিজতে ভিজতে ফিরে গেছে
কথা চলে গেছে বহুদূর
কাঁপন ঢেউ তুলেছে আকাশে


                    
  




নিশিবেলায়
           
পাখির মতো ক্লান্ত দিন
চলে যায়

যেতে যেতে ডাকে
ডাকার সংকেতে
নিভে যায় আলো

আঁধারের চুলগুলি জড়াই
প্রিয়ার মতোন চোখেমুখে







আমার ঘর     

এখানে শহর নেই
মাটির বাড়ির দাওয়ায়
নিঃস্ব পিতার ছায়া পড়ে আছে
মায়ের নিকোনো উঠোনে বৃষ্টির দাগ
আমাদের কিশোরবেলা আজও ছুটোছুটি করে

অদূরে মাটির কলসি ঠাণ্ডা জল নিয়ে বসে আছে
পিপাসা পেলে যাই তার কাছে
পাতার জ্বালে সেদ্ধ হয় ভাত
নতুন ধানের গন্ধে ঘর ভরে আছে








নামের তালিকা

একটি ঝরনার পাশে একটি মোরগ ডেকে উঠল

সূর্যের রোদ পড়েছে

ঘাসে ঘাসে অতিজীবিতের মুখ

কণ্ঠে সকাল দুলছে বালিকার


যুবতী স্রোতের কাছে কে চাইবে বাঁশি   ?

বংশীধ্বনিতে পুড়ছে শহর


প্রেমের আরোগ্য নেই

যদিও উদ্বোধন হল হাসপাতাল

মসৃণ নার্সদের শুরু হল চলাফেরা

দীর্ঘ রোগের বিছানায় আমাদের সহিংস প্রলাপ


একটি মোরগ শুধু কম্পন লেগে থাকা ডানায়

ডেকে উঠল

গৃহমুখী আলোয় প্রত্যাশার কারুকাজগুলি

হেসে উঠল বলে

ঝরে পড়া ব্যগ্র চুমুগুলি ভাসল ঝরনায়


ধোঁয়াময় শহর জুড়ে আমাদের নামের তালিকা

নির্বাচনের কোলাহলে উডতে উড়তে ঘুরপাক খেল








অভাগীর সন্তান

ধরা যাচ্ছে না পিছল পিতল নাভি

এখানে চৈতন্য বাস করে

দাঁড়কাকগুলি তীর্থ খোঁজে

তীর্থে হাহাকার জমে আছে


তবুও অব্যয়টি ক্রিয়ার পাশে আলোকিত হতে চায়

কিনারা জুড়ে আঘাত প্রত্যাশার

ধ্বস ছাড়ে , দুধুর্ষু গ্রাসের কবলে গ্রাম


বসবাস উঠিয়ে দিয়ে উঠে পড়ি যাযাবর বাসে

লক্ষ্যহীন বেতাল পঞ্চকের দেশ

অবশ্য কারো কারো মাথার দাম নির্ণীত হয়


আমাদের মাথা নেই , বিগলিত ইন্দ্রিয়

রোজ রাতে জেগে ওঠে সঙ্গমের ঘ্রাণে

চতুর বিশ্বাস এসে হাত রাখে

যদিও নির্বীজ হাত ব্যঞ্জনায় সদর্থক হয়


ভুল ব্যাকরণ নিয়ে বুকের বৈরাগী

তার উন্মুক্ত দর্শনে নিষিক্ত করে রাখে

আমরা পর্যুদস্ত অভাগীর সন্তান

এক একটা গাছ কাটি, স্বপ্নের উদ্দাম গাছগুলি