রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮

সুমনা পাল ভট্টাচার্য


সুমনা পাল ভট্টাচার্য

শূন্যের ঘাটে...
 (১)

হরপ্পার বুকে জমে থাকা সিন্ধুনদের ব্যপ্তিতে চাই নি তোমায়
এক আকাশ তারা, বা হাসনুহানার প্লাবনে ভেসে গাইনি তোমার গান..
বরং
জ্বরের কপালে শুকিয়ে ওঠা ওই একটুকরো জলপট্টির  মতোই অপরিহার্য করে রেখেছি নিভৃত জঠরে...
:
প্রতি মুহুর্তে গোপন অন্তঃশিলায় তোমার নিশ্ছিদ্র প্রসবণ..





(২)

উপত্যকার তালুতে নদীগন্ধ রেখে যে চর আজ বর্তমান,
তার গায়ে স্রোতের হদিশ মেলেনি কোনো,
হলুদ মলাটের মত ঘুমিয়ে আছে পদচিহ্নের নকশা পারাপারের ঘাটে...
পথিক দেখেছি কতো , শুধু বটের শিকড়ে জড়ানো সেই রাখাল ছেলেটির হদিশ পাইনি আজও...
:
বাঁশি ধুলোময়, সুর তুমি বেজে ওঠো একটিবার...
                                                                           




(৩)

তোমার এক চুমুকে ফুরিয়ে গেলো উদাস বৃষ্টিদিন..
ছলকে ওঠা রঙের সমুদ্দুর বুকের ভেতর পানকৌড়ি জলোচ্ছ্বাস

ন্যুব্জ ঠোঁটের পারদের জোয়ার, এক একটা ভরাট নৌকাডুবি...
:
এমন সময়....
  রাতজাগা ভোর, আর  দিনগোনা রাত মলাটে বাসি গন্ধ ...
:
উৎসবের চৌকাঠে চেনা পদচিহ্ন স্পষ্ট, সুস্পষ্ট।।
                                                                       




(৪)

এক প্রান্তিক স্টেশনে এসে থেমেছে সফর..
অজানা ইঁটের ভিতর সেই চেনা উপন্যাসের পান্ডুলিপি

তোমার কিম্বা আমার জীবনের গল্পগুলো সব  বড় এক
শুধু, বৃত্তাবর্তে পরিক্রমা
গন্তব্য গুলো যার যার মতো হেঁটে চলে..
:
কখনো নির্দিষ্ট স্থান পেরিয়ে এগিয়ে যাই অচেনার সাথে,
কখনো গতি থামার আগেই নেমে পড়ি ভুল কোনো ঠিকানায়, কখনো বা, ভুলে যাই কোথায় যাবার কথা ছিল, শুধু সময়ের চক্রে আবর্তিত হয়, দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তর...
:
তারপর,
কেন্দ্রবিন্দুর মাধ্যাকর্ষণেই দেখা হয়ে যায় আবার আমাদের, সেই এক প্রান্তিক স্টেশনে....
                                                                              




(৫)

শূন্যের তালুতে অঙ্ক জমিয়ে আবার শূন্য কুড়িয়ে নেওয়া
হিসেবের খাতায় আঁকিবুঁকি কাটে যাপনকাল

যে পথ দিয়ে নিত্য আনাগোনা, তার সবুজ বা নীলের পরিমাপ আজও চেনেনি চোখ,
শিকড়ের টান করেনি অনুভব আত্মস্থ ভিটেমাটি...
:
এক প্লাবনের ঘাটে পায়ের  জমি সরে গেলে, ঘরের আকুতি খোঁজে উর্বর পলি
চারাগাছের কদর সেদিন বোঝে বিশাল মহীরুহ...
:
নতজানু হয় শূন্যের কাছে, সব অঙ্ক উড়ে যায় পরিযায়ী বাতাসে...