মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮

সুদীপ ব্যানার্জী


সুদীপ ব্যানার্জী

জন্মান্ধের রোজনামচা

বেশ তো।এভাবেই থাকি।
রেইনকোট পরে বৃষ্টি না ঘেঁটে।
নড়ুক।যারা পালাতে চায়।
স্ট্যাচু। লোমহীন চোখ।
যতক্ষণ না কেউ ভাঙছে, আমি শেষ হবো না।


স্বার্থ শব্দটি খুব খারাপ।
কষ্ট হয় আরও যখন গায়ে মেখে ফেলি।
এখন লিকুইড সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সময়।
ঘামের গন্ধে নিজেকে চিনতে চাই।
সবাই নিজেকে মুছে দ্যায়
মন ভালো ক'টা ফোঁটায়।
আমিও...


মার্কেটিং। অভিজাত। কুলীন।
রোজ বাজার যাই। শার্টের বোতাম লাগানোই।
চেনা দোকানে চোখ বুজেই থাকি।
তুমিও চোখ বেঁধেই ট্রে ঠেলতে ঠেলতে
মিশে যাও ঘণ ধোঁয়াশায়
খোলা অর্থনীতিতে সবাই জন্মান্ধই..






একটি টানহীন গান

পরিযায়ী তুমি পাখিদের ওড়া শিখে নাও

নিরবে যাতনা গোনা থাক দু-এককলি রোদের আলাপনে

আর উড়ে যেতে যেতে ছুঁতে পারো যদি তারাভরা মিনার
হাততালি দিতে দিতে মিলিয়ে যাব আমিও
    
অভিকর্ষের সব টান পুরে ফেলেছি স্যুটকেশে






বুঝিনা

কিছু ক্ষমা চোখ জুড়িয়ে শোভা লিখেছে আমার রাস্তায়

এলোমেলো ধারালো এ চলা ছুটবে কি ছায়ার ব্যবধানে

বেলা বেড়ে এলে কমে গেলে দৈর্ঘ্য
ধৈর্য হারিওনা ঠিক ছন্দের আনন্দ ফিরে পাবে

আর তোমার প্রতিটি না বোঝাতে বুলিয়ে ঠোঁট
একচোট হেসে নিয়ে মস্তিষ্ক বিলি করবো ডিস্কাউন্টে

কেউ পড়েনা কেনার কথা থাক
আমি সেলসম্যান হয়ে লুটিয়ে পড়ি পা'য় নয়া তরিকায়
হায় এখনও পাপড়ি মেলেনি ফুল ফুল কথা

রাত হাত বাড়াচ্ছে নিয়তির চলা ফেরা মেপে
অথচ ক্ষমারা শোভাযাত্রায়

পাখি শাবকের চোখ ফোটেনি

বিশ্বাস ছেড়ে পালাব এমন কুঠুরিও খালি নেই

ছায়ার ব্যবধান পেরিয়ে মিশে যাচ্ছি জীবিত আলেখ্য হয়ে

 




পুরোটাই দেখা নয়

ভূমধ্যরেখা কল্পনা। সুবিধার ভূগোল।
দুই পার্ট বাদাম। চিটে আছে।
ন্যাচারাল ব্যাপার।ভাবায় না।
"অপারেশন সেপারেশন"।

গভীর ডায়াবেটিস।ক্ষত শুকোচ্ছে না।


রাখে হরি তো মারেও হরি।
খালি এনক্যাস করার ইচ্ছা দমিয়ে দাও।
ভুলে যাও সমীকরণের সম্ভাব্য এক্সিট পোল।

একগুঁয়ে দেশভক্তিকে কমন নিয়ে,
এক ব্র‍্যাকেটে চলে আসুক x,y,z...

দ্যাখো আমার পতাকা কেমন বুক ফুলিয়ে উড়ছে।

গেরুয়া,সাদা,সবুজ...

 





ওয়েটিংরুম

            এক

জানলেই অবাক হওয়া নীল উপচে আসে
স্ট্রীটলাইট জ্বললে ছেলেবেলার রেলকলোনি
পড়তে বসা অনেক আলোর অচেনা মানের মাঝে

            দুই

এই পার্কের কোন স্বপ্নে এসেছিল
বি ফ্ল্যাট স্কেলে লালগোলাপ
প্রতিটি পাপড়িতে বোনা
হৃৎস্পন্দন আর গানের দোলাচল
গাইতে গাইতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা
কিশোর স্ট্যাচু এখনও মোড়মাথায় দাঁড়িয়ে

             তিন

এরপর জ্বলন বললে জ্বলন
পুড়ছে দাহ্য আকাঙ্ক্ষা
এ দহনবেলা নীরব দুপুরের মালভূমি
হাঁটাপথ, উঁচু-নীচু টিলাচত্বর পেরিয়ে
একঝাঁক পাখিডাক শোনা
ঘরোয়া বিলের পাশে

     
              চার

এক জংশন থেকে শাখাপ্রশাখা
অনেকটা আকাশ ঢাকছে
লক্ষ্মীপাঁচালি পড়ছে কেউ
খুব চেনা কন্ঠস্বর
শহর পেরিয়ে ওভারব্রিজ খুঁজছি
তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে মেঘলাবেলা,গুমোট গরম
অপেক্ষা ক্রমশ শুষে নিচ্ছে মৃত্যুর সাদাবরফ