মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮

বৈদূর্য্য সরকার


বৈদূর্য্য সরকার

স্বরূপ

দুর্ধর্ষ গাণ্ডীবে দ্রৌপদীকামনা শ্রীকৃষ্ণসুলভ
ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা বিজ্ঞ যুধিষ্ঠির হস্তীমূর্খ ভীম,
ভীরু দুর্যোধন অসম্ভব কর্ণ বাকী নাবালক...
সৃষ্টিশীল ব্যাসে আমাদের বাঁচা কী ধারাবাহিক !

প্রেরণা বলতে সেই মহাভারত কালীপ্রসন্নের
বীররস কাব্য, টানা গদ্যে লিখে প্ররোচনা দিলেন
কোমল লিরিক বর্জন করতে... সেই থেকে
মহারণ্য ঘুরে খুঁজে ফেরা নিজের চরিত্র ।






দুঃখ নদী

কাঠের ঘুণপোকারা কি জানতো এই টেবিলের
কাহিনী ধরে এগোলে কার নাম যেন বুকের ভেতর পোড়ে,
অতীতের সুখে ভাদ্র আসে কোনো গল্পের আসরে
মুক্তির বদলে আজ শরীরে বাসা বাঁধে অসুখ,
গ্লানিময় এ জীবনে লেখা হয় ঘুষের হিসেব ।
যা খুশি করার উপভোগে
অকারণ রাগ অভিমানের ওপর জেগেছে আমিত্ব,
বেশী কথা বলা হয়ে গেলে অনাগত ভবিষ্যতে
অফবিট প্রমাণ করতে গিয়ে হয়েছি প্রান্তিক ।
অনেকরকম খিদে আর বয়স বাড়ার কথা -
সংগঠন দরকারি অযাচিত বাহবারা অসহ্য না হলে
স্নেহময়ী এ আঁধারে কিছু দেওয়ার কিছু নেওয়ার নেই ।
বাস্তবের সাথে বেশী স্বপ্ন মিশে গেলে দুলে ওঠে চারপাশ
কাকে দিই ডাক, বাজার চলতি হওয়ার দায় ছিল না
অবেলায় ভাবি যে যার সাথে থাকুক ।
দুঃখ নামের নদী ভাসলে
সবাইকে শত্রু মনে হয় - তুমি সাথে না থাকলে ।






এ সামান্য মায়া

সাধনে যেমন ঘটে
এ সামান্য উপহারে ভরে থাকে মন,
অক্লান্ত ঝোলায় পুড়ে রাখি ব্যক্তিগত
সিগন্যাল না পাওয়া সুপারফাস্টের পাশ দিয়ে কখনও
বয়ে যায় লোকাল জীবন ।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে এলে বিএসেনএল নাম ফিরে আসে
বুকের মধ্যে যেমন জমে থাকে কবিতার ঘাম,
আমরা যে সবাই আসলে বিভ্রান্ত বলে ভেবেছি
আমাদের সবার শরীর ভাড়া নেয় পদাবলী ।

আসলে কিছুই নয় শুধুমাত্র ধূধূ  - ধ্বংসকে সামনে নিয়ে
বসে আছে যারা চোখে ভবিষ্যৎ মেখে,
দারিদ্র দেখাতে নেই যে কারণে ঠিক তেমনই
বিষণ্ণতা ঢাকি ঝকঝকে প্রোফাইল পিকচারে ।







ইন্টারভিউ

মেদিনীপুর পার করে শালের আভাসে স্টেশনের নাম
ভাদুতলা জঙ্গলমহলঅবাক হয়েছি সমাপতনে ।

নিজের দিকে তাকিয়ে হেসে বলতে ইচ্ছে করছে
ইন্টারভিউ নাকি আজ আমার নিজের সাথে পিকনিক !

চলন্ত ট্রেনে বৃষ্টি এসে আজ আলগোছে বান্ধবীর সাড়া,
প্রাচীন এসএমএস পেলাম আজকাল কেমন আছো ?

ডাউন মেমোরি লেনে আমার বিশ্বাস নেই, আজ তাই
সবার মুখই চেনা মনে হচ্ছে প্রশ্ন উত্তরগুলো এক ।

আসলে কেউ সঠিক উত্তর জানে না, প্রশ্নও খাপছাড়া
আঁধারনয়নে এসে সবাই অন্ধের মতো কাকে হাতড়াচ্ছে !






রহস্য

ঠাকুর দেবতার মুখ ঝাপসা হয়ে এলে
কে কাকে ডেকে নেয়, সাবেক বৈঠকখানায়
মৃত্যুদাগ মুছিয়ে দেয় কে অনীহার রাজরোগে !
ইচ্ছে করে কষ্টভোগ শিখিয়েছ তুমি,
অপশন আর কামনার দ্বন্দে ভুলে থাকো -
যেমন ঝুলে থাকে চাঁদ টানাপোড়েনে নিঃস্ব 
হাতে আঁকা অতীতের সেটে !

গা দিয়ে বয়ে যায় নদী...
মাটিতেই ফিরে যায় মাটির জিনিস
আদর শেখালে যদি,আবেশে অসুখ
উপবাসি শহর উথলে জিত নাকি হার !
শারিরিক উৎসাহ আগুণ গিলে খেয়ে
প্রবল উষ্ণতার গভীরে গতি সঞ্চারিত হলে
সুতীব্র সেই পরুষগন্ধে পাগল হয় কে !