শিল্পী গঙ্গোপাধ্যায়
নীলকন্ঠ
এই যে দশ দিগন্ত জুড়ে ব্যথাহরা
হাসি
ক্যালেন্ডারের মত ঝুলিয়ে রাখো
ঠোঁটে
শর্তহীন দিনরাত - অনুক্ষণ
কতটা হৃদয় খুঁড়ে তুলে আনো
এই নাগরিক হাসি?
আহারে মেয়ে, কাঁদতেও
এত ভয় !
দুঃখ ভোলানো ছলে ধূর্ত শেয়াল যদি
কাছে আসে, নিঃসঙ্গ
উঠোন ভরায়?
তাই বুঝি ..
কৌশলে নীলকন্ঠ হয়ে দুঃখ-
শোক-বিপন্নতা গভীরে জমাও,
হাসির আড়ালে রেখে একান্ত বিষাদ,
শান্তিবারি সহাস্যে ছড়াও..
বোধিবৃক্ষ
যদি নির্বান চাই, ভরা
সংসার ছেড়ে
যদি বলি, বোধিবৃক্ষ
হও তুমি
তোমার ছায়াতেই মগ্ন হয়ে থাকি
তোমাকেই আশ্রয় মানি...
আমার যাকিছু সুখ,বৈভব,যাকিছু সম্বল
নামিয়ে রাখব ভূমিতলে
তুমি বোধিবৃক্ষ হলে
নির্বান চেয়ে নেব আমি ।।
বিশ্বস্ত ছায়া ...
চৈত্রের কঠিন বৈরাগ্য শেষে,
বৃক্ষে বৃক্ষে ছড়িয়ে পড়েছে,
সবুজ প্রাণের বিস্তীর্ণ আয়োজন...
তাপিত, তুমিও
নিতে পারো,
তার নিবিড় ছায়া ।
বৃক্ষের কোন ধর্ম নেই জানো...
বৃক্ষ, তোমার
আমার
বৃক্ষ, হিন্দু
মুসলিম --- সব্বার
শুভেচ্ছা
সোনালী রোদ্দু চেয়েছিলে তুমি
মুঠো ভরে এনে অঞ্জলি দেব যেই,
বললে আমার "চাঁদের জোৎস্না
কই"?
জোৎস্না খানিক লুকিয়ে এনেছি,
আঁচলে রেখেছি বেঁধে,
এসে দেখি তুমি হারিয়ে গিয়েছ
আঁধার কে ভালোবেসে...
জোৎস্নাটুকু ছড়িয়ে দিলাম
তোমার চলার পথে---
'আঁধার কাটুক, আলোকিত হোক'
শুভেচ্ছাটুকু রেখে ।।
কথা ছিল
কথা ছিল, দেখা
হবে পরিচিত পথে
কথা ছিল, ব্যথাগুলো
ফুল হয়ে যাবে
কথা ছিল, মোহনায়
জেগে থাকা রাতে
স্বপ্নের পরীগুলো ঠিক ধরা দেবে...
যত কথা দেওয়া হয় রাখা হয় নাকি?
কত কথা ঝরে যায় হলুদ পাতায়
কত কথা ভিড় করে স্মৃতির খাতায় ।।