মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮

শুভদীপ সেন


শুভদীপ সেন 

মুক্তিপণ
   
তোমার হাসি ভাল লাগে না,কাকু
মায়ের সাথে কি এত কথা ছিলো?
ভালো সাজার ভাব করো যে'টুকু-
বুঝে নিতে হয়।গভীর রাতের আলো!

বাবা জানে কি? প্রায়ই আসো তুমি,
ধুয়ে নিতে এই বিভৎস চেহারা--
হাত দিয়েছো আমার'ও মৌচাকে,
কি আর করি;হারিয়েছি শিরদাঁড়া।

নিস্তেজ দুল,প্রতিহিংসা আঁকি
জানতে হবে নিজেই মানুষ কি'না!
মনে পড়ে যায় শব্দ শিখিয়ে দেওয়া,
দিনগুলো'তে তোমার আনাগোনা...

মানতে চাইনা,সন্তান পাবো না চেয়ে
বন্য প্রথায় বাঁচবো অভ্যেসেই,
অথচ তোমায় খুন করতে গিয়ে--
আটকে দেয় বিষ রক্তের দোহাই!

ঠিকাছে,নিজের আঠেরো বছর পরে
যমজ হবে,কুমারী যোণি'র প্রসব--
সেদিন হয়তো চুল বাঁধবো না ঘরে,
দিকে দিকে উঠবে মৃত্যু রব।

আজকে না'হয় বেশ্যা করলে তুমি
মাখবো আগুন,এটাই এখন দাবি
এগিয়ে আসছে তোমার শ্রাদ্ধভোজ,
ক্ষোভে ফুঁসছে,এ মহাপৃথিবী।

অনেক কথা দিয়ে রাখলাম কাকু
বেশিদিন স্রোত আটকাবে না বাঁধে,
ভালো রাখার ভাব করো যে'টুকু--
চুকিয়ে দেবো এই শরীরের রোদে।






সম্রাট

তুমি ডেকে নিও গোটা পৃথিবী'র স্নান
চটি'তে ঘষে যাওয়া ইলশেগুঁড়ি ছাতা
সাহেবী টুপি'তে কতো মেঘের দোকান
প্রতিটি পায়ের নখ,চুরি করেছে দেবতা...

অচেনা,তাই পরমাত্মা।কিন্তু অথচ বারবার।
অচেনা,তাই- তামাম শরীরে তাবিজ্ ।
সব ছাই উড়ে গেলেও,আকাশ তোমার...
কিভাবে করবে আজ,ইচ্ছেমৃত্যু খারিজ?

যারা বৃষ্টিতে ভেজেনি,তারা অলস ভোগী।
সত্যি'ই সে আড্ডার বেঞ্চ ফাঁকা নেই।
মীমাংসার ইতি,এই আণবিক ছন্দ প্রয়োগ'ই।
মাথা যতোই নিচু হোক,সূর্য তো উঠবেই...

নিষ্ঠুর থেকেছি শুধু রোদের ধারাপাতে
অপরাধের সাহস দিও,দুনিয়ার সব রাস্তা'তে।
           
 (স্মরণে হুমায়ুন আহমেদ)





ভাড়াটে গুন্ডা

নিভে গ্যাছে তারপর,জনসংখ্যা-হে আশঙ্কা
গোলটেবিল বৈঠকের উপশিরায়...
আমার সন্দেহ তাবু ফেলেছে
চালু না হওয়া বাসরুটের ভাড়াটে গুন্ডায়।

মুখ তুলে বাই-সাইকেলে দ্রুত আশ্বাস
তোমাকে ক্লাস বাঙ্ক করালো,
ঘুড়ি আটকে গেল, বিধির বিধান
শ্রেণি-সংগ্রামে বিরচিত,সুতরাং কিসের প্রতিদান
প্রথম জোড়া শালিখ-এ,কেনই বা বেলজিয়াম গ্লাস

এত এত মঞ্চ,এত এত শ্রোতা,এত এত বক্তা---
তোমার হিস্ট্রি সাজেশানের নিচে,দই ফুচকায়,বা ইচ্ছাকৃত ভুলে;
অস্ত যায় সমস্ত রাজনৈতিক দল। আর,
স্ক্রিনটাচ্ মোবাইল কভারের ভাঁজে
ভরসা'র বীজ বোনা শুরু হয়,বংশপরিচয় পিছিয়ে যায়...
ঢালু হয়ে নেমে যাওয়া,এলোপাথারি ভাড়াটে গুন্ডায়।







কাল থেকে বাড়ছে

এ শহরে পুকুর নেই একটাও।
ডিপফ্রিজের বরফকুঁচি?ওরা তর্ক করছে আজও।

ঐ থতমত অভ্যেসে হাত রাখি।
বোমারু বিমান দুপুরে উড়েছে;তবু রাত জোনাকি।

তাই আর লিখে যায়নি খয়েরি প্রকৃতির গান...

নিবপেন।কালি নেই।টেক্কা-বিবি-গোলামের পাশে
মুচকি হেসে খুলে দিয়ে গেছো মেইন সুইচের তার

এবার তো আমার লাস্ট দান!

হারজিতের মধ্যেই জলতেষ্টা পাবে যে আবার...

যে লিকার চা-এ চিনি জোটেনি সারাদিনেও
আমি সেই-ই, সব মিষ্টি'র খরিদ্দার।







সংক্রান্তি

পাগলি'টা যে যে জায়গায় শোয়,
সেগুলো অক্সিজেনহীন জলরং দিয়ে ছাপানো।
দৃশ্যমান আকাশের পরে আরেকটা যে শূন্যস্থান
কোমরে দু'হাত দিয়ে ন'পুংসক বড়লাট সাহেবের মতো
দাঁড়িয়ে আছে--
এক থাপ্পড়ে ভেঙে দিতে চায়,
সেই রক্তহীন ফর্সা ঔদ্ধত্য..
অথচ প্রতিবার ব্যর্থ প্রচেষ্টার তাপমাত্রা ওঠানামা করে,
নতুন একটা সূর্যের জন্ম হয়,
ও যে পাগলি,'কে হয়তো মানায়--
তাই বলে তুমিও!

খোলা স্ট্রবেরী চারাটায় লেগে থাকা দু'পক্ষের বদনাম,
পাগলিটার যমজবাচ্চা হয়ে মা'য়ের অধিকার দাবি করে;
ওরাই আমার জারজ গ্রহের আগামী প্রশ্রয়,
ওদের পার্শ্বরেখায় থাকে আমার প্রাচ্যের
হিজিবিজি সপ্তর্ষিমন্ডল...
ওদের হাত-পা ছোড়া'র তাগিদ থামলে
লাল স্ট্রবেরী'ও পাংশুটে।

যেদিন কর্ডন ঠেলে এগোনো শরীর দেখে
এন.আর.আই বন্ধু বিরক্ত হবে--
সেদিন ঐ পাগলি'টা বিধায়কের হাসিমুখ ছিঁড়ে
চিৎকার করতে করতে পুলিশের দিকে এগোবে,
চকচকে বেয়নেটগুলোকে রাষ্ট্রশক্তি'র কপালে তাক করবে।
'তো পাগলি,'কে হয়তো মানায়--
তাই বলে তুমিও!

শেষবারেও স্ট্রবেরী চারা'টা অক্সিজেনহীন সভ্যতায়
কুঁড়ি ফোটানোর চেষ্টা করেছিল--
তুমিও চরণামৃত নিয়ে বাড়ি ফিরে যাও,
ঐ পাগলি'র ভ্রূণ উৎপাদনের কোনও দায় নেই।
'তো স্ট্রবেরী,'কে হয়তো মানায়--
তাই বলে তুমিও!