স্বপন কুমার দাস
দ্বন্ধ
ঘনত্ব বাড়িয়ে নিসঙ্গতার সঙ্গে কেটে
যায় সময়।
বিশ্রামহীন বাগানে জীবনের বসবাস
নয়..
বোঝাতে
রুমালি আকাশে দু একটা সাদাবক
কদাচিৎ উড়ে।
কোন দুরন্ত হাওয়াও কখনো এলোমেলো
করে যায়
সাজানো এক সামিয়ানা।
ভুলেগেছি কেউ যেন চিনিয়েছিলো
ঘাসের উপর শিশিরের দাগ।
ভুলেগেছি কারা যেন বলে গেছে
জীবনের অনেক আঁকাবাকা রেখা দিয়ে
আলপনাও আঁকা যায়।
মনের বাঁধ ভেঙ্গে যে সমুদ্র
জানিনা আজ কোন ডুবুরী তার গভীরে
যাবে।
সারেঙের আওয়াজে বন্দরে ঢুকছে
ক্লান্ত জাহাজ।
মায়া ভেঙ্গে ভেঙ্গে একদিন শেষ
গাজনের ধুম।
সব তরল অদৃশ্য হবে বাষ্পীয় ভবনে।
অনাবৃত জঙ্ঘার দিকে তাকিয়ে
চৌপালগুলি এখনো ভরে আছে অসম
দ্বন্ধে।
গোধুলীর সামনে
মৃদুতর ধ্বনির বিন্যস্ত বিকেল
সকালের সম্পর্ক হাতড়ায়।
শিশিরস্নাত শূন্যতা অন্তিম আশ্রমে
কোন দূরতম বিন্দুর দিকে তাকিয়ে
রামধনু আঁকে।
এখন এ পৃথিবীর বাঙময়তা ঘরে ফেরে
পাখিদের ক্লান্ত ডানায়।
সে কোন কলরবে উথালী মন
বিষামৃতের পাত্র বারবার অধরে
ছোঁয়ায়।
সবুজপাতা-পাথর-নরমধূলায়
বসন্তের গোলাপী পালকে নিজস্ব
স্পর্শচিহ্ন সব
ধীরে ডোবে রুদ্র সন্ন্যাসিনির
আঁচলের ছায়ায়।
লেহন
প্রজননহীন সময়ের লেহন শরীরে শরীরে।
মুদ্রিত কোরকে মন তোমারই কাছে
গচ্ছিত ছিলো।
সৃর্যাস্তের শিরিণ সভায় নতজানু
হয়ে..
যুগে যুগে তোমার তরঙ্গায়িত হবার
কাহিনী শুনেছি,
কারন তুমি দেখেছো এ পৃথিবীকে
সহস্রচোখে।
অতৃপ্তির আকরে ঝলসান প্রেম জীবনের
কিনারায়..
একদিন উত্থিত হবে বির্দীন বীজ ।
ভারসাম্যহীন তরলতায় ভেসে আছে
পৃথিবী গোলক।
আজ গন্তব্য স্থির নয়, তবুও
একদিন পৌঁছে যাবো।
সাহসীর মৃত্যু লেখা থাকে শুধু কোন
যুদ্ধক্ষেত্রে।
অসময়
অনিরুদ্ধ পথ।অঢেল অসময়।
কারোর হাতের বন্ধনে না জড়ালে
ভেসে যায় সব কানাকড়ি সঞ্চয়।
শাশ্বত অলস মন গহন রাজপাটে লীন-
ভেসে গেছে প্রেম তরঙ্গবিহীন।
গাছপালা নিবিড় এক জলাশয়ের তৃষ্ণা
ছিল
অথচ চাতকের মত আশায় আশায়
বুকে বাঁধা মেঘলা দিন।
এলোমেলো অন্তমিলে জীবনকে রেখে-
শেষ পংক্তির শব্দ যদি খূঁজে না পাই,
এই অনন্ত অভিভব শুধু আমারই থাক।
অপরাহ্ণ ঝড়ে যদি ঝরে যাবো,
পথে কিছু প্রাণ রেখে যাই।
অমাবস্যার আঁধারে জোনাকিকে সাথে
নিয়ে
আলো যেমন রেখে যায় পৃথিবীর আদল ।
শেষ বসন্ত
তোমার ঘুম ঘুম চোখে উড়ছে.. গুচ্ছ
চুলের গোছা।
এক কাহিনী লেখার কায়দায়।
আমার আপরাধী মনের কোন নিশ্চিত
ঠিকানায়
বারবার ফিরে আসা.. লক্ষ করেছে
বোধহয়।
ভিক্ষাপাত্রে প্রেম থাকে কিনা
জানিনা।
তবুও বন্ধ দরজার সামনে বসন্তের গান
গাওয়া।
আবিশ্বাসী সুর শুনে কোন কোকিল
ডাকেনি
কোন ফুলও ফোটেনি।
অথচ মেঠোপথে হেঁটে হেঁটে
রাজপথের রূপকথা লিখে চলা।
চৈতী হাওয়ায় অলস দুপুর থমকে
দাঁড়ায়।
প্রজাপতি মথেরা সব উড়ে গেছে।
সজনেফুল যদি বসন্তকে চিনে নাও..
নিয়ে এসো দখিনের বারান্দায়।