মৌমিতা দে সেনগুপ্ত
নৈশব্দ্যেরও কান্না আছে
আজ কুয়াশা পড়ে
শহর জুড়ে,
আবছা-আবছা
আমার তল্লাটে !
পাতা উল্টে
স্মৃতির ভাঁজে,
বাঁশরি বজায়
এক মনে কে !
কুয়াশা পড়ে
আমার কবিতার খাতায়,
তোমরা শব্দ কি
তার শুনতে পাও ?
কান পেতেছো
কখনও শূন্যেতে ?
নৈশব্দ্যেরও কান্না আছে !
আমার শব্দরা
কখনও শ্রাবণধারার মত আসে,
কখনও সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ হয়ে আসে,
কখনও শরতের শিউলি গন্ধ নিয়ে আসে
আমার শব্দরা--
তাদের নিয়ে বুনে চলি,অহোরাত্রি;
কখনও বেনারসী কখনওবা ধনেখালি,
তাদের গায়ে পরম মমতায় হাত বোলাই |
হেমন্ত বিকেলের হলদে রোদ হয়ে
ভাসিয়ে দিয়ে যায় আমায় !
একলা ঘরে বসে শব্দের সাথে
আমার এ খেলা চলতে থাকে অবিরত;
খেলতে-খেলতে কখন শব্দগুলো ধ্বনি
হয়ে
পাড়ি দেয় দূর-বহুদূর....
সাঁঝের অতিথি
অনেকদিন বাদে বৃষ্টি এল
আমার আঙিনায়--
বহু যুগ কাটলো শুধুই অপেক্ষায়,
প্রতি মুহূর্ত,প্রতিক্ষণ
পিয়াসী এ হৃদয়;
বৃষ্টিকে ছুঁতে চেয়ে আকাশপানে
হাত বাড়ায়--
হঠাত্ ঝরে পড়লে
সাঁঝের অতিথি হয়ে,
বিহ্বল-ব্যাকুল ধূসর আকাশ
রোমাঞ্চিত প্রতি পল-অনুপল;
শ্রাবণধারায় নিবিড়
এ সময়--
আঁজলা পেতেছি
আঁজলা পেতেছি আজ
তৃষ্ণার্ত বুক নিয়ে,
যদি ভরিয়ে দাও আমায়
শ্রাবণ-ধারা হয়ে !
ধূসর মরু একা চলেছি হেঁটে,
বৃষ্টি আসবেই জানি
পথের কোন বাঁকে !
সিক্ত হবে তৃষ্ণার্ত হৃদয়
বহু যুগ বাদে;
আঁজলা পেতেছি আমি
অনেক সাধ নিয়ে !
মেঘলা বিকেল
জানলা দিয়ে মেঘলা বিকেল
দিচ্ছে উঁকি--
সঙ্গে তার ধূসর মলিন
ছেঁড়া-ছেঁড়া স্মৃতি !
আটপৌরে জীবন থমকে
মেঘের মুখোমুখি;
নিবিড় কথোপকথনে
ভিজতে থাকি--
জানলা দিয়ে মেঘলা বিকেল
দিচ্ছে উঁকি !