অতনু তিকাইত
অপেক্ষা
শরীরের ভিতর যেমন কঙ্কাল, জীবনের
ভিতরেও থাকে।
জীবনকে উলঙ্গ করে
সমস্ত আবরণ একেক করে সরিয়ে নিতেই
বেরিয়ে এলো টুকরো টুকরো 'অপেক্ষা'
অপেক্ষাদের ধরে আছাড় মারতেই
তার থেকে বেরিয়ে এলো
স্বপ্ন, আশা
ভালো থাকা।
বিশ্বাস
ঠিক কত বছর লেগেছিল হরিণের
বৃহৎ হাতির হাত দুরত্বে সবুজ খেতে
তার হিসেব কেউ দিতে পারবে না।
দেওয়ালের টিকটিকিটা কাল
খাবারের খোঁজে মাটিতে নেমে পড়েছিল
বাবা এক হাত দুরে বসে পান
চিবোচ্ছে।
ভয় পায়নি দুপক্ষের কেউ অথচ
ঘরের ইঁদুরগুলো দেখলে পালায়।
বিশ্বাস কতদিনে আসে, তার
হিসেব কেউ দিতে পারবেনা।
গাছ ৪
দুরত্বরা জানে কতটা কাছে আসা
হয়েছিল
শীতলতা জানে তোমায় ছুঁয়ে থাকা
উষ্ণতা
আমরা সব বুঝে, গাছ
হয়ে গেছি
গাছ হয়ে ডাল পাতা নাড়ি শুধু
যদি মেলে কিছু ঘ্রাণ,
যদি মেলে অনুভূতি
আমাদের ক্ষমতা নেই এর বেশি।
(আমরা মাথা নত শাসনে
আমরা মাথা নত ভালোবাসায়)
আমরা সব বুঝে, গাছ
হয়ে গেছি।
বারুদ
ভোরের আলো যেমন করে তারা লুকোয়
তেমন করে আড়াল দিয়ে রাখতে পারি।
দিনের শেষে ক্লান্ত হলে তোর বুকেতে
মাথা গুঁজেই কাটিয়ে দেব একটি জীবন।
সমাজ নিয়ম থাকুক যারা সমাজ মানে
আমরা বুঝি ভালোবাসায় পাপ থাকেনা।
চুলের মুঠি ধরবে সমাজ? ভয়
কি তাতে!
হৃদয় ভর্তি বারুদ রেখেই
ভালোবেসেছি।
২২'শে অক্টোবর
প্রতিবছর আজকের দিনে বাড়ির
পরিবেশটা একটু অন্যরকম থাকে। সকাল সকাল স্নান সেরে মন্দিরে পুজো দিতে যায় মা। একটু
অন্যরকম রান্নাবান্না হয় আজ। আজ মা'য়ের সাথে খুব কম কথা হয়
সকলের। বাবা বিকেল বেলা একটা বড় কেক নিয়ে এসে ফ্রিজে রেখে দেয়। মা সন্ধ্যাবেলা সেই
কেক ভাগ করে প্লেটে সাজিয়ে বাড়ির সকলকে পরিবেশন করে। ডিনার টেবিলে মাকে খুব ভাবুক
দেখায়। কেউই কারন জিজ্ঞেস করিনা। আঁড়চোখে বাবা সব দেখে, আমিও।
নীরবতা ভেঙে একসময় মা বলে -- 'খোকা
পাতে এসব খাবার দেখলে খুব খুশি হতো'
আর অদ্ভূতভাবে সকলের দৃষ্টি গিয়ে
পড়ে,
দেওয়ালে মালা জড়ানো দাদার ছবিতে।