শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১৮

সৌমী শাঁখারী


সৌমী শাঁখারী

কোনও কবিতা নয়

কোনোও কবিতা নয়,তবুও আমি ঘ্রাণ মাখি শব্দের
হারানো হিয়ায় শিশিরের টলটলে কান্না ঝরে নিঃশব্দের!
চাঁদপথে আমার অবাধ যাতায়াত নেই..
জোৎস্নীল সঙ্গমে তবুও আকাশপ্রিয়া আমি!
অমলিন অনুরাগে সাগরে যে ঢেউয়ের বসন্তকাল..
ফাগ বিনা আবিরের চরম উল্লাস অনর্গল
সেখানে ক্লান্ত,ধ্বস্ত আমি,যমুনার সহচরী..
কী করে মিশবো বলো,আমার শ্যামের কলরবে?..
জোড়া পায়ে হাঁটা পথ সাজানো ছবি..
বাদামী রঙ চুঁইয়ে পাহাড়ের গায়েও কোমলতা!
ঝরণার পেলব শরীরে দুর্দান্ত প্রেমিক সে..
স্পর্শে রাতজাগা ভোরের শিথিল দেখো নাকছাবি!
এতঃপর কাহিনীর ঘনঘটায় অন্য মোড়..
অশ্রু ঝরানো বিকেলে আমার বৃষ্টির মাদকতা!
কোনোও কবিতা নয়,উপবাসী আমি আকন্ঠ জনমের..
দুদন্ড স্বপ্নের জালে জড়িয়েছি কলমকে বড়োজোর!!

                  





অভিমানী_বৃষ্টি

দীর্ঘকালীন মেয়াদে বিদায় বড়ো নিঠুর..
বর্ষা পথে অভিমানী মেয়ের চোখের জল রুখে দাঁড়ালো!
কথা দিয়েও মেঘের ভারে নামলো না সে চকিতে..
পদ্মাবতীর গোপন প্রেম ভাঙ্গলো তপ্তবেলায়!
ঝড়ের খেয়া উড়লো অবাধ্য দিশায়..
পাতাদের বুক চিরে আজন্ম লালিতের অভিশাপ বুঝি নামলো!
স্নিগ্ধ স্নানের অপেক্ষায় মুখিয়ে আছে শহরের কোণ মেঘসারিতে..
মানুষের দায়ভার পড়লো হঠাৎ রিক্তবেলায়!
ঘূর্ণি আঁধার মুখ ঢাকে লজ্জায়..
আধো লালিমায় সঙ্গোপনে দাঁড়িয়ে আমার রুখাশুখা বেগবতী চন্দ্রললনা!
সেই কবে প্রবাহমান স্রোতে মিশে গেছে আকুল হাহাকার..
যন্ত্রচালিতের মতো বৃষ্টিকে কানেকানে পাই!
পথ ভুলে অভিমানী কেয়াপাতায় বৃষ্টি..
কোনো বাউলের মনগীতি পারেনা ফেরাতে তার ঘর সংসার!
নিরুত্তাপ দখিনা বায়ুতে মন্দ মিঠে শোক উথলে ওঠে..
বড়ো প্রয়োজন বৃষ্টির আঁখিজল মোছানোর!!







আকাশ ঘিরে মেঘ করেছে

            একলা আকাশ নিশান হারায়..
তোমার খোঁজে আছে কি সুখতারাটি অবেলায়?
 আমার নামে দূরন্ত বাতাস..
ঝড় ঝাপটায় গাছের যেমন বুকটি ধড়াস!!
গেলো বছর নদীর ঘাটে..
টুকরো আলোয় জোনাক জ্বলা সন্ধ্যা হাটে..
মেয়েটি গেলো কলস ধুঁতে!
আচমকা এক দামাল তরী ভাসালো খুঁতে!!
শরীরে তার আঁচড় রেখা..
মন ছাড়া পাশবিক বলের কলমে লেখা!
 তাঁর কাঁপনে সময়ের জ্বরটি মাপো..
কিশোরীর হাসি নষ্টা চাঁদের বানে ঢাকো!!
কোন শাস্তির পরিনামে অঝোর?
 বাস্পকণা মেঘের গায়ে মুখটি বুজে অমর!
লাশের ঘরে জীবিত প্রাণ..
মরণ সেরেও পায়না একমুঠো শ্রদ্ধার ত্রাণ!!
আকাশ ঘিরে মেঘ করেছে..
সইবেলা চিরে রোদেলা যৌবন নিভৃতিতে কেঁদেছে!







বৃষ্টির আত্মকথা

সাথে থাকো মেঘ,ছেড়ে যেও না..
আমি গুমোট কান্নায় জড়ানো বৃষ্টি বলছি!
ওই যেখানে মাটির বিষম খটখটে মনখারাপ..
সেখানে রোজই ঢুলুঢুলু চোখে স্বপ্ন বুনছি!
অনেক,অনেক দূরে আমার আকাশ সাথী..
মানের চোটে লুকিয়ে আমি চাঁদ দেখি!
হাওয়ার সাথে নিষিদ্ধ প্রেম,নষ্ট স্বভাব..
মনের টানে সেই সুখের ঘরে আত্মঘাতী!
এতো আবেগ পথের কোণে ধূলো সরায়..
আদর টানে নদীর বাঁধে ধাক্কা চরম!
বিরহী বাঁশি বেজেই কারো মিলনেরই জপ..
সরল গন্ধে শ্যামল ছোঁওয়া মনকে ভাসায়!
সাথে থাকো মেঘ,ছেড়ে যেও না..
প্রতিশ্রুতির প্রবেশ দ্বারে একবারটি থমকে দাঁড়াও!
বৃষ্টি সেজে তোমার প্রাণের ডাকনামে চুপ..
আমার রিনিঝিনি চুরির সুরের আলিঙ্গনের বাজনা!!






বৃষ্টি মন

চাঁদবেলা জলে থৈথৈ,
সন্ধ্যাতারার ঘোমটাতে আড়াল।
মন শুকনো কৈ,
সেও তো তোমাতেই ঝাঁপতাল!!!
মেঘের অভিমানী ঠোঁটে,
সাজানো কান্নার গীতি।
ভালোবাসার দূরত্বেরা একজোটে,
তোমার অনুভবে জড়ানো বীথি।
পলকে চোখ মোছা,
আবেশে গান গাওয়া।
পথখানি নীরবে খোঁজা,
তোমায় আরো বেশী পাওয়া।
চুপঘন থাকা শ্রেয়,
শরীরে মনে কাছাকাছি।
কথারা অনেক অপ্রিয়,
ভুল বোঝে আমাদের পাশাপাশি।
ভিজে রাস্তার পদ্যখানি,
জলছবি আঁকে সত্যিকারের।
গহীন বৃষ্টির মনখানি,
আমিও পড়তে চাই আকাশপারের!!!!
  





               
বৃষ্টির সাথে হবে পরিচয়

চৈতী দিনের প্লাবন থেমে গেছে দূর গাছতলায়..
কাঠফাটা রোদ্দুরে পাখিটি অক্লান্ত হেঁকে ঝিমিয়ে পড়েছে
নোনা গন্ধে হাওয়া বয় শান্ত বালুধারায়
উড়ে যায় তখন দগ্ধ হওয়ার বিভীষিকাময় ভয়!
ঘর্মাক্ত যাপনে কান্নারা প্রার্থণা সঙ্গীতের ছিলো পূজারী..
শীতল স্পর্শ বহুকাল ছোঁয় নি তাদের গহনাঙ্গ!
বেলা বয়ে রোদের স্নান সারা হলে..
বিকেলের কুঞ্জে আধডোবা সূর্যের দেখতে পাই পরাজয়!
ওপারে নীহারিকা তখন ধ্যানমগ্না স্থিতধীর আশ্রয়ে সমৃদ্ধা..
আকাশের অসহ্য তাপ শুষেও নিজস্বী আয়নাতে রূপসী!
ঝিলিমিলি চাদরে ঢাকে তার সর্বোত্তম সর্বাঙ্গ..
জানে প্রেম,আদ্যোপান্ত পোড়ার পরে বৃষ্টির সাথে হবে পরিচয়!!