শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১৮

মতিউল ইসলাম


মতিউল ইসলাম

মৌন মুখর

শব্দরা একে অপরের সাথে তখন ঘর বাঁধছে

তোমার আগমনে স্নাত হয়েছিল

কবিতার সব পংক্তি,

মৌন তখন হয়ে মুখর হয়ে উঠেছিল।


স্পর্শ যখন হাজার কথা বলে

কি প্রয়োজন বাগযন্ত্রের ব্যবহার?

মনের চোখে ফুটে উঠে হাজার ছবি

কিছু দৃশ্য কিছু অদৃশ্য।


কিছু সময় মহাজাগতিক নিয়মের উল্টো

হেঁটে স্থির হয়ে যায়,

তখন হাজার কুঁড়ি ফোটার মতো

জন্ম নেয় কালজয়ী কবিতা,

কেউ কেউ অজান্তেই বনলতা সেন।


কিছু মৌতাত রয়েই যায়

স্মৃতি গুলো জাবর কাটে আজীবন,

তুমি হেসে উঠলে বলে

হাজার কাব্যসন্ধ্যা অমর হলো,

অপেক্ষায় রইলো

এক পৃথিবী না লেখা কবিতা।







পৃথিবী টা ছোট হয়ে আসছে

অভিমূন্য চক্রব্যূহ ভেদ করেছিলেন,
বেরিয়ে আসার রাস্তা জানতেন না,
বুহ্যের বাইরে থেকে তার পরমপ্রিয় জন
দেখেছিলেন ইন্দ্রপতন।

আকাশ থেকে আগুন ঝরে
দুধের শিশু অবাক হয়,
হঠাৎ বিস্ফোরণে দেবশিশু লাশ,
প্রিয়জন কাঁদতে ও ভুলে যায়।

আমরা বসে থাকি নিরাপদ আশ্রয়ে
এখানে নেই কোন বোমারু বিমান,
আমাদের শিশুরা খেলা করে মাটি,
ঘাসের সাথে,
বোমারু বিমান ক্রমেই এগিয়ে আসে।

সংবাদপত্রের পাতায় পাতায় ভরা
শিশুর লাশ,
আমার অবোধ সন্তান প্রশ্ন করে
পাপা,কেন বাবুর গায়ে রক্ত?
কে মেরেছে?কে সে ভীষণ দুষ্ট?
নির্বাক থাকি, রক্তের আঁশটে গন্ধ
চেতনা স্তব্ধ করে,
ক্রমশঃ বোমারু বিমান এগিয়ে আসে,
পৃথিবী টা প্রতিনিয়ত ছোট হয়ে যাচ্ছে।







দুর্লভ গোলাপ

একটা ও তেমন লাল গোলাপ পাইনি

যেটা হৃদয়ের পরিপুরক হতে পারে,

যাকে হাতে নিয়ে মনে হয় আস্ত হৃদয়,

গোলাপের খোঁজে কখন অজান্তেই

পেসমেকার বসে গেছে রাখিনি খোঁজ,

তাই তুমি ও গোলাপ পেলে না

আর আমি তোমায়.

বাতানুকুল ঘরে খেলা করে ছেলেবেলা,

শ্যাওলার আঁশটে গন্ধে

তুমি আসো,বুকে রাখ হাত

হে পরমেশ্বরী আমার,

ঠিক তখনি ফুটে উঠে দুর্লভ গোলাপ.







মিথ্যা

সভ্যতার পশ্চাদদেশে আগুন দিতেই

ফানুসের মতো উড়ে গেল আকাশে,

পড়ে রইলো ক্ষুধা কাম আর বাস্তবতা ।

বিবর্তনের ইতিহাসে কোথাও ভাগাড় নেই

তখন তুমি যা পাও তাই খাও,

অরণ্যের অন্ধকারে মেট্রোর আলো নেই,

যৌনতার গুলবাগিচায় কোথাও নেই

পরিবেশবান্ধব কোন মগজ।

নিজের সুবিধা মতো তুমি আমি

আইন তৈরী করি

তৃতীয় পক্ষ পছন্দ না করলেই

সভ্যতার গালে কষিয়ে এক থাপ্পড়।

বাড়িতে আধুনিকতার বাগান সাজিয়ে

আদিম কামনা নিয়ে পথে নামা,

তারপর বোকাবক্সে কারো সাথে একঘন্টা,

সভ্যতা উড়ে যেতেই জলে উলঙ্গ অবয়ব,

লজ্জায় চোখ বন্ধ করতেই

সবকিছু ভীষণ মিথ্যা মনে হয়।






মুক্তি

শুধু বিন্দু বিন্দু রক্ত নয়,

নয় স্যালাইনে বাহিত

জীবনী শক্তি,

কিংবা মাতৃস্তনের অমৃত

নয় বাঁচার রসদ।

জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে

অশ্রু জলে পিচ্ছিল পথ,

দুশ্চিন্তা কে কফিন বন্দি করে

রাত্রির অন্ধকারে দাড়িয়ে আছি

নতুন সূর্যের আশায়,

আলোয় আমার মুক্তি।

নবকিরনের আলো মেখে

আমি বাষ্পিভূত হতে চাই,

মেঘ হবার স্বপ্ন আমার আজন্ম।