জয়ন্তী
কর্মকার
রক্ষীতার
কুঠুরি
এই ছেলেটা,
প্রতিশোধের
খেলায় মেতেছিস যে,
আর তো মাত্র
দু'দিন ,
সেই তো ফিরবি
-পুরোনো ডেরা
পুরোনো
কাঁচের বাসন
ছেঁড়া চেয়ারে
বসা হেলানো বারান্দার স্মৃতিতে
যেখানে অমলিন
হয়ে আছে
তোদের হাসি
কান্নার কুচো স্মৃতি
প্রতিটি
দরজার পাশে।
এই ছেলেটা,
হিংসায় বুক
ভরেছিস যে,
সেই তো সোহাগ
করবি -টান টান করা বিছানায়
খোলা মাঠের
বুক ভর্তি ঘাসে
এলিয়ে দেওয়া
একফালি কাঁধের ওপর ভর করে
ফিরবি যখন
নামহীন বাড়িটাতে।
এই ছেলেটা ,
আজ মুখ
ঘুরিয়েছিস যে,
সেই তো মুখ
লুকোবি -ওই আঁচলেই
খুঁজবি নতুন
সুখ
বাড়ির পুরোনো
বউটিকে ফেলে আসবি
পুরোনো
আসবাবদের সাথে।
সেই তো
পুরোনো প্রেম
আবার নতুন
হবে কোনো এক ভবিষ্যতের রাতে।
তবে কেন মিছে
প্রতিশোধ নামক অভিমান?
তবে কেন
অভিমান ,নাম বদলে আজ হিংসা?
কেন তবে
মঞ্চে নতুন নাটকের অভিনয়?
রক্ষীতার
কুঠুরি যে আজও খোলা -
তোর অপেক্ষায়।
নিঃশব্দ
চুপচাপ দুটো
ডাক
গিঁটে বাঁধা
সর্ম্পকে
একটুখানি ফাঁক।
দুটো হাঁস
জীবনের গতিতে
খালি হাসফাস।
দুটো ঝিল
অনাবিল
রজঃসলার
কাপড়ে কিলবিল।
দুটো কাটা
হাত
কাঁচা রক্তের
সপাট
মাঝরাতের বাজিমাত।
দুটো স্তন
পাকা হাতের
লোপাট
সব খেল ওই
উর্ধ্বতন।
দুটো জাত
হল কুপোকাত
আজও মানবজাতি
চুপচাপ নির্ঘাত॥
মরাগাঙ
হা ঘরে
প্রেমের গল্প করতে নেই
পাপ লাগে
তাতে
যে শরীর বহু
মন মাড়িয়ে
পচা ঘামের
গন্ধ নেয়
তাতে নোনা জল
থাকে না
এক টুকরো
ভালোবাসার মৃত ছায়া পড়ে থাকে,
যেই আদরগুলো
শুধু নখের দাগ বহন করে
তার ছায়া
পড়ে থাকে মর্গের বিছানায়।
ব্লটিং পেপার
নিংড়ে নেয় দুঃখ মাখা রক্ত গুলো
ঘুন ধরা
জীবনে ভালোবাসারা ছেঁড়া চটি ভর করে
বহুদ়ূর
পালিয়ে বাঁচে
হা ঘরে
প্রেমের গল্প করতে নেই
পাপ লাগে
তাতে॥
মানুষরূপী অমানুষ
দেখতে তুমি
একই
দুটো হাত
দুটো পা
দুটো চোখ আর
নাকটাও তো আছে
অবিকল
মানুষের মতো,
কিন্তু তোমার
চামড়া সে কথা বলছে না তো!
আচরণও বেশ
নকল করেছো
চেষ্টা করেছো
মাত্র,
ব্যবহারের
আড়ালে যে মুখ লুকিয়েছো
ওমা! এ তো
অমানুষের পাত্র।
মানুষ তুমি
কবে আর
কবে মানুষ
হবে ?
সব শেষ হবে
কি সেইদিন-
অমানুষ আর
জানোয়ারের ভীড়ে,
শুধু মানুষের
ছায়া পড়ে থাকবে যেইদিন।
মনবারিষ
বর্ষাও ভীড়
করেছে
মনের
ক্যালেন্ডারে।
গ্রীষ্মের
তাপদহনের মতো
যতো বার
পুড়িয়েছো হৃদয়
যতবার ছারখার
করেছো
আমার ভাবনার পাতাগুলো,
ততবার আমাদের
প্রেমের পান্ডুলিপি
মনবর্ষায়
সিক্ত হয়ে
পুনর্জ্জীবিত
হয়েছে।
এক ফোঁটা
মনের রক্ত দিয়ে
কবিতা লিখেছে
কব্জির নীলচে শিরা।
হয়তো আগুন
হতে পারেনি
বারবার ঠকে
যাওয়া কর্ণিকা,
তবে বর্ষা
হয়ে এসেছে প্রতিবার
আমাদের
প্রেমের পান্ডুলিপিকে বাঁচাতে।
মেঘ উড়াল
আমিও তো মেঘ
হতে চাই
পড়ন্ত
বিকেলের পাড়ে
তবুও সন্ধ্যে
নামলে কেন
নয়ন উঠোন জল
থইথই করে।
আকাশ কুসুম
কল্পনাহীন
পাখনা লাগায়
রোজ
গোধূলী বেলায়
সাঁঝ বয়ে যায়
ভর করে
মিথ্যে অলীক বোঝ।
আমিও তো মেঘ
হতে চাই
ধূ ধূ
মরুভূমির বুকে,
সোঁদা মাটির
গন্ধ উঠুক
এক টুকরো
মেঘের সুখে।
চর শুকোনো
বালির গায়ে
দিব্যি ঝিনুক
কুচি
নদীর বুকের
জলগুলো সব
পালন করে
ব্যস্ত নিয়ম সূচী।
আমিও তো মেঘ
হতে চাই
চড়ব উড়ালপুল
মাটির সাথে
মিলিয়ে আকাশ
ভেজাবো
দুকূল।