শাহানারা ঝরনা
বর্ণালি দিন কাটে
চোখ মেললেই
আকাশ দেখি মন মেললেই তুমি
বুকের ভেতর
স্বপ্ন ছড়ায় ইচ্ছের মৌসুমি
কতকিছু বলার
থাকে হয়না তো সব বলা
তবু কেন যখন
তখন মন হয় চঞ্চলা
চুপ থাকলেই
চুপকথা যে স্রোতের ধারায় ছোটে
মনকথারা
গল্পে গানে ফুল হয়ে সব ফোটে
মন নদীতে পাল
উড়িয়ে একলা ভেসে চলি
শব্দ সুতোয়
মালা গেঁথে নিত্য দিই অঞ্জলি
দৃষ্টি জুড়ে
বৃষ্টি ফোঁটা অবাক করা খেলা
অনুভূতির জল
পুকুরে একলা ভাসাই ভেলা
শুকসারি দিন
পথিক হয়ে মনের পথে হাঁটে
বুকের দেউল
সাজিয়ে তবু বর্ণালি ক্ষণ কাটে।
বৃষ্টি মানে
বৃষ্টি মানেই
মন বাড়িতে গৃহকাতর ঢেউ
বৃষ্টি মানেই
হৃদয় জুড়ে তৃষ্ণা জাগায় কেউ
বৃষ্টি মানেই
মেঘ বসতি স্মৃতির ভেজা পথ
বৃষ্টি মানেই
বন্ধুরে তোর স্বপ্ন সুখের রথ।
বৃষ্টি মানেই
কল্পডানায় উড়ে যাওয়া দূর
বৃষ্টি মানেই
কাব্যকথায় হৃদয়টা ভরপুর
বৃষ্টি মানেই
বধূর হাসি গোলা ভরা ধান
বৃষ্টি মানেই
জলে ভেজা প্রেমের উপাখ্যান।
বৃষ্টি মানেই
স্মৃতির চিঠি নকশা কারুকাজ
বৃষ্টি মানেই
খুলে দেখা কল্পরেখার ভাঁজ
বৃষ্টি মানেই
সুরের দোলা ছন্দ বিরামহীন
বৃষ্টি মানেই
বন্ধুতাময় প্রহর অমলিন।
বৃষ্টি ও স্বপ্নচারী
পেখম মেলে
ময়ূর নাচে বৃষ্টি পড়ে উঠোনজুড়ে
সন্ধ্যারাগে
সানাই বাজে শংখধ্বনি হৃদয়পুরে
কোন্ বিরহির
দুঃখেকাতর ডাহুক ভেজে ডোবার দামে
রোদ চাইনা
সবুজ পাড়ায় বৃষ্টি নামুক প্রিয়ের নামে
হলুদ খামের
আঁচল উড়ুক দস্যি ছেলে ঘুমোক একা
মন দরদীর
গোপন দেশে হয়নি যে হায় পত্রলেখা
লজ্জাভাঙা
বৃষ্টিবেলায় নিন্দুকেরা থাকনা দূরে
শিকল বেড়ি সব
ছিঁড়েছি জল কালিয়ার বাঁশির সুরে
সাক্ষী থাকুক
কলমি কদম যাচ্ছি ভেসে জল বিহারে
স্বপ্ন ভরা
রথ থামাবো অচীন নদীর ঐ সে পাড়ে
বৃষ্টিরে তুই
অঝোর ধারায় দে ভিজিয়ে নিঁভাজ শাড়ি
জলে ভেজা এই
আমাকে দেখবে আহা স্বপ্নচারী!
হে মেঘদূত মেঘ
জলফুলে মেখে নিয়ে আরতির আবীর,,
কে তুমি নৈবেদ্য সাজাও ভাঙাচোরা জীবন দেউলে!!
পূজারি নেই আজ অভিসারি বৃন্দাবনে
নেই সেই রাধিকা
জলঘাট,
শত সহচরী
নেই নায়রি বউ
ঝিয়ারি,
জারি সারি ভাটিয়ালি
নাব্যতা হারানো নদী, নিজেই বিরহী এখন।
প্রতীক্ষায় থাকে তবু চাতক চোখ, অনুলিখন নিয়ে ছোটে বালিকা মেঘদল।
ঠাঁয় বসে আছে পরম্পরা স্বজন,,,
হে মেঘদূত মেঘ--তোমারি অপেক্ষায়!
স্রোতের নকশা
বনেদি জীবনপ্রবাহ কখনো ভেসে যায় বুনো লোভের স্রোতে, বিসর্জন ঝুঁকি দেখলেই কেউ
কেউ পাল্টে নেয় পূনর্বাসন ধ্যান
ধারণা।
ইচ্ছেরেখার পরমায়ু
নিয়ে স্রোতের নকশা আঁকি, নদী যখন নেচে
নেচে গান গায় মনে পড়ে মায়ের হাসি মুখখানি,, আহা নদীমাতা দেশ আমার!
দখলের উত্তাপে পোড়া শরীর নিয়ে নিস্তেজ সারাক্ষণ।
ঐতিহ্যের মহিমা ছু্ঁয়েছে গ্লানির পাহাড়।
কিউবিজম করা অনুভূতি নিয়ে তবুতো জীবন গাঁথি, প্রগতির জোয়ারে
ভাসাই অবচেতন বিবেক।
কখনো বিলাসি ঋতুর হাতে দেখি ঋণপত্রের হিসেব। সবকিছু দেখে
বুঝেও মস্তিস্কের বহির্বিশ্ব কার্যক্রম স্থবির এখন।
আদতে আমরা আছি শনির বলয়ে বাঁধা গৃহভৃত্যের মতো। জীবন ও জীবিকা ঘুরছে ক্রস ফায়ারের ঘূর্ণায়মান
আবর্তে।