দেবযানী বসু
ভাঙা শ্রাবণের চালচুলো
১. ইমনকল্যানে টইটম্বুর পথঘাট। রক্তের লোহায় মিশছে
শ্রাবণের ঝুলনগীতি। নক্ষত্রের আনন্দে ছিন্ন কপাট। ভিজছে ধুলোরচনা। এক পা ভাঙা মই
থই থই লাবণ্য পেরিয়ে চলেছে। ধনলাবন্য। দেখা না পাওয়ার স্তনমুখে বসে আছি।
অনুপপত্তি। ক্রমশ কঠিন আকাশ পায় শ্রাবণ। মুখখারাপের অনায়াস বমি। এক বিন্দু বন্যা
তালু পোড়ায়। বাসরভাসানো। রোগ ধরা দেয় না দেহ বুঝে। কাঁচা দেহ এখন বিভ্রান্তিতে
দিনে পাঁচ বার।
২. তিনশো বত্রিশ ম্যাগনাম আলোচনা পাওনা শ্রাবণের। আলোচনার
প্রতিরূপও নেই। কোথাকার মেঘ কোন গর্তে গিয়ে পড়ে কে জানে। তাও অপব্যাখ্যার দশক
পেরোতে হয়। জলফুসলানো শাওন। মর্ষক ভেকদলের সরগম। ইচ্ছে ছড়ানো জামগাছ। বিটনুন
পেয়ারার কথোপকথন। বিনিময় করি জড়ানোর প্রথম নিয়ম। চেনাজানা ছড়া ঝেঁপে আসছে।
রিলে করছে একটা একটা করে কদম ঝরানোর দৃশ্য।
৩. রাহাখরচ গলে শ্রাবণিকা। জানলা বন্ধ করার গন্ধ আঙুলে।
কেয়াপাপড়ির স্বচ্ছ হবার আগেকার শয়নপর্ব। এ কথা কেন উঠছে বলে ময়দানবের ঘর পিঠে
করে পালাচ্ছি। বেঘর মেঘ পায় তানপুরার খোল। রজস্বলা শ্রাবণণ।আস্নাত মন। গুম গুুম
করে বন্যা। তার প্রিয়দর্শিনী লেহেঙ্গা। চোখ থেকে চুলের গোছা সরিয়ে দাও। দাবদাহ
ভুলে যাবে। টুকটাক গল্প ফেলে ব্ল্যাক কমেডির শয্যা।
৪. বাঘিনী স্থির ধ্যানাসনে। জয়দেবের মানপত্র উল্কি লেখে
ত্বকে। নীলজাম মোরামের পথ। ঐ হেঁটে যাওয়াই শেষ মিলন আমাদের। বয়স্ক গাছেরা
বেহালার ছড়ে নিমগ্ন। নজরুলী শাওন রাতের যদিটুকু এনেছে তারা। বার বার কাগজের হরিণ
বাঘের ডেরায় ছুটে যায়। ইএম বাইপাস এর ভাঙা শ্রাবণ। আকাশবাগান। বিরহের গেরুয়াবাস
রাহি মাতোয়ারা করছে অপেক্ষায়। প্রেক্ষায়।
৫. কয়েদি হরিণ জন্মকথা মুছে ফেলে। শুঁকে নিই একে অন্যের
তুষজ্বলা গন্ধ। কঠিন কসরত। গীতিকবিতা লেগে থাকে স্ববীর্য চেটে নেওয়া দালির জিভে।
পেন্সিলের ডগায় বসানো চাঁদ রসবিন্দিয়া। দাবদাহের ঝরাপাতারা লিখেছিল শয্যারচনার
আকুতি। সময়কে ঠকাতে চাই না। চাই না বিষুবরেখায় সালভাদর গড়ে তুলুন ভেজা চণক ও
জলসত্র। শাঙনিয়া উত্তরাধিকার। ভাঙা প্যাস্টেল অতিবিরহ বুঝে চাঁদ আ়ঁকতে পারে নি।