নুরুন্নাহার
শিরীন
আষাঢ়শাওনে একাকী
মনপবনে
এক।।
বরষা দেখেছি বহু।
কাগজের নৌকো ভাসানো জগতবাড়ির ঘাটে
এখন অচেনা শত ধান্দাবাজ পদচিহ্ন হাঁটে
জলজ হাজার ভাব জানলায় জ্বলে ধু ধু।
আমাদের কলোনিয়াল আকাশতল ভেসে যায়
ভাবের বয়স কাঁদে কী জানি কী বেদনায় !
প্রিয়তা হৃদয় খুঁড়ে কী জানি কাহারে চায়
এমন বরষা আহা তাহার কী আসে যায় !
দুই।।
সে ছিলো সুদূর মিতা বসেনি আসন পেতে।
আমার কাগুজে ডানা উড়িয়েছি ডানহাতে।
বাঁ হাতে জলজ রেখা
চোখের নিমিষে একা।
হাজার পলকহীন রাতের গভীরে নেমে
দিবসরজনী দেখা আজও যায়নি থেমে।
এভাবে কদিন আর।
চারপাশে আকাশখাকি বাতাসখাকি জলভার।
তিন।।
সে ঠিক জানতো সব।
তাই সে অদেখায় জ্বেলেছে ভাবের শব।
তাই সে মেঘদূতের কবিতার মতো
ধোঁয়াটে খেয়ালে আঁকে জলরেখা অবিরত।
জীবন সে প্রতিনিয়ত উধাও বেলা
আমরা তাহার সনে খেলছি রুমালচুরি খেলা।
বরষাভেজা রুমাল যেন কাদামাখা ছবি।
সে ছবি তুমুল রঙে হৃদয়ে উড়িয়েছিলো কবি।
চার।।
ওড়াউড়ির দারুণ ছিন্নপত্র মনে আছে?
কত যে লুকোচুরির কথমালা মনে আছে?
রূপোলি জলের ধারা তরুণীর মতো নাচে
যখন পড়শিদের ছাদে -
তখন আমার ভাঙা জানলাতলে চাঁদের আলো।
তখন আমার রাঙা অস্তগামী সন্ধে লাগে ভালো।
যখন ধূসর দিন
রাতের ভিতর স্বপ্ন জ্বেলে ডাকে
জীবনশিথানে
বৃষ্টিগন্ধী ঘুম ডুবে থাকে।
পাঁচ।।
ঘুম ও বৃষ্টি দুই রকম জীবনধারাপাত।
জীবন লাফিয়ে ধায় ধরেছি তাহার হাত।
ধরেছি যা কিছু আজ জলের অধিক
ঝরোঝরো নদীময় একেলা পথিক।
যেন শ্যাওলায় ঢাকা পরাণের পদাবলী
প্রথম প্রেমকে আজ দিয়েছে জলাঞ্জলি।
তথাপি দুচোখ ঘুমে আঠালো মরণ যেন !
বৃষ্টি তথাপি জীবনঘোর থামেনা যেন !