শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১৮

সুদীপ্ত বিশ্বাস


সুদীপ্ত বিশ্বাস

চলো অনামিকা

চলো অনামিকা সব কিছু ফেলে দুজনে হারিয়ে যাই

এ শহর ছেড়ে অনামা বিদেশে স্বপ্নের সীমানায়।

চলো অনামিকা মেঘে মেঘে ঢাকা আকাশের ওই পারে

বৃষ্টি যেখানে নূপুর বাজাবে আপন অহংকারে।

হিসেবি খাতারা গুণ-ভাগ ভুলে আঁকবে গোলাপ ফুল

তোমাকে পরাবো নিজ হাতে বোনা ঝুমকোলতার দুল।

হাতে হাত রেখে হাঁটবো দুজনে,বৃষ্টির সীমানাতে

সুখ স্বপ্নেরা অঝোর ঝরবে দারুণ শ্রাবণ রাতে।

এসো ভালবাসি ঠোঁটে ঠোঁট রেখে,এসো অনামিকা, প্রিয়ে

এসো অনামিকা বরষার দিনে অঝোর শ্রাবণ নিয়ে !








এস অনামিকা

অনামিকা তুমি কোথায় এখন?

কিছুই তো নেই জানা;

অনামিকা তুমি দেখালেই দেখি,

না দেখালে রাতকানা।



ফাঁকা এ জীবনে কেন বেঁচে থাকা?

কেন এই একা একা

থোড়-বড়ি-খাড়া, খাড়া-বড়ি -থোড়

নিজের সঙ্গে দেখা?



আমার জীবনে কিছুই কি নেই?

আছেই তো কত নারী,

ইচ্ছে হলেই প্রতিদিন রাতে

সোহাগ করতে পারি।



তবুও কেন যে আলপিন ফোঁটে

তবুও কেন যে কাঁদি,

এ গানের সুর গোটাটাই ভুল

দারুণ বিসম্বাদী।







স্মৃতিপট-১


অনামিকা জানো কিছু কথা শুধু জমে জমে থাকে বুকে

কেউ কেউ জেনো,শুধু ভালবেসে থাকতে পারে না সুখে।

যদিও জেনেছি সব কিছু মুছে তুমি আছ সুখে বেশ

তবুও দুচোখে ঘুম তো আসে না,চেয়ে থাকি অনিমেষ।

জানি কত ব্যথা, তবুও কেন যে স্মৃতির কবর খুঁড়ি

বুকটা তো ফাঁকা শূন্য আকাশ, মনটাও গেছে চুরি।

নীরবে কাঁদছে গোটা ফ্ল্যাট বাড়ি, চিঠিপত্রের খাম

মুছতে গিয়েও মুছতে পারি না অনামিকা স্মৃতি, নাম।

কখনো তো ভাবি আসুক মরণ, মরে যাওয়া কত ভাল

অন্ধকারেই একা একা বাঁচি, সহ্য হয় না আলো।

নেভাতে গিয়েও নেভাতে পারি না বুকের আগুন শিখা

একলা এরাত ডুকরে কাঁদছে, অনামিকা অনামিকা...








স্মৃতিপট -২

এখনও বৃষ্টি অঝোর ঝরলে

মনটা কেমন করে

নরম পেলব কোমল স্মৃতিরা

মনে পড়ে, মনে পড়ে...



ওই ফুল ফোটে,ওই পাখি ডাকে,

ওই ছুটে যায় নদী

মিষ্টি লাগত এসব কিছুই

পাশেতে থাকতে যদি।



ভুলে যাব আমি, ঠিক ভুলে যাব,

সব কিছু একদিন

ভুলতে পারলে কবিতার কাছে

রেখে যাব কিছু ঋণ।



সহ্য হয় না কিছুতেই আর

একা একা বেঁচে থাকা

সব কিছু আছে তবু মনে হয়

জগত শূন্য, ফাঁকা।



তুষের আগুনে হৃদয়ে জ্বলছে

স্মৃতির বহ্নিশিখা

গোটা বুক জুড়ে সাদা পোড়া ছাই,

অনামিকা অনামিকা...








স্মৃতিপট-৩

অনামিকা দেখ, রেলপথে ছোটে প্রতিদিন কত ট্রেন

সঠিক সময়ে রোজ বেজে যায় সময়ের সাইরেন!

এসব দেখে তো আগে কোনদিনও অবাক হইনি আমি

মনটাই আজ উথালপাথাল, স্মৃতিগুলো বড় দামি।

সবাই কেমন ছুটছে অফিসে, করছে নিজের কাজ

আমিও ছিলাম ওদের মতই,স্তব্ধ হয়েছি আজ।

এখনও সকালে সূর্যটা ওঠে, এখনও তো রাতে তারা

অনামিকা তুমি কোথায় এখন, ভেবে ভেবে দিশাহারা।

অনামিকা আমি পথ খুঁজে মরি অন্ধগলির থেকে

তোমার চোখের গভীর বাঁকেতে পথ চলে যায় বেঁকে।

উদাস বাউল একাই গাইছে মন খারাপের গান

কাটছে না রাত, কাটছে না দিন, সেতারে বেসুরো তান।








স্মৃতিপট-৪

কবিতা আমায় বোঝে,কবিতা বুঝেছে সবকিছু
আমিও বেসেছি ভাল, ঘুরেছি প্রেমের পিছুপিছু।
আমিও পুড়েছি কত, আমিও কেঁদেছি কত রাতে
ভেবেছি বাউল হব, মেঠোপথে একতারা হাতে।
আমিও ছেড়েছি গ্রাম, আমিও ঘুরেছি কত দেশে
চালচুলো সব ছেড়ে,অভুক্ত ভিখারির বেশে।
আগুনে পুড়েছে মন, দাউ দাউ পুড়ে পুড়ে ছাই
মরণ সেও তো ভাল,গিয়েছি নরক সীমানায়।
সব ছোঁয়া বেদনার, সব কথা কান্নাতে  ভরা
আজ শুধু খুব একা,আজ শুধু স্মৃতি, মনে পড়া...