সুকুমার
চৌধুরী
বিদিশা
তারপর একদিন
ঠান্ডা অলিন্দের থেকে ঝুমঝুমি অন্ধকার ফুঁড়ে
জেগে উঠলে
তুমি
তোমার মিহিন
চুলের থেকে সন্তর্পনে নেমে এলো রাত্রি
রাত্রি নেমে
এলো আমাদের বিষণ্ণ শরীরে
এবং দেওয়াল
ঘড়ির ওপর
সচল করোটি
তন্ত্রে শুরু হোলো রাত্রির অভিসার
ছড়িয়ে পড়তে
পড়তে রাত্রি একসময় গিলে ফেললো
আমাদের হিমঘর
দীর্ণ অধুনা
তোমার চোখের
নীলে ভেসে উঠলো স্মৃতি ও বিষাদ
তুমি ডায়েরির
ধূসর আড়াল থেকে লঘুছন্দে উঠে এলে
ইতিহাস ও
আদিখোশা মাড়িয়ে মাড়িয়ে
চাঁদের
ক্রমণে ক্রমে বেড়ে উঠলো রাত
তোমার আমার
মাঝে আদিগন্ত কুয়াশাকে লুটে নিলো
নৈঃশব্দ ও
জোৎস্নার করুণা
শেষ তারাটির
সাথে যখন মিলিয়ে গেলে চুপিসারে
তোমার গল্পের
রেশ চুলের গন্ধের সাথে মিশে গেল অন্ধকার গেরুয়া চাদরে
অথচ কখনো
ফেলে আসা গদ্যময় দিনের চিতায়
তোমার আমার
কোন নিভৃতির গল্প নেই আলিঙ্গন
আমাদের মনেই
ছিলো না
কোজাগর
চব্বিশ
ঘন্টায় জাগি
এবং জাগাতে
থাকি প্রাণগুলি...
কত প্রাণ, কত জান
থাকে একটি
জীবনে
কত প্রেম, কর্মযোগ
লোভ ও লালন
কত কাম, স্বপ্নাচার
অবচেতনার গান
কত মোহ থাকে
মোহন আন্দাজ
চব্বিশ
ঘন্টায় জাগি
এবং জাগাতে
থাকি প্রতিটি জীবন ......
আরব্যরমণ
আরব্য রজনী
তুমি ভালোবাসো জানাও নীরবে
সন্ধ্যেবেলা
টুপ টুপ বিষ্টি পড়ে, ঠান্ডা বাতাস
আমারও গল্প
হোতে সাধ হয় আর অবচেতনার কত
আমিষাশী গল্প
উঠে আসে । তোমাকে শোনাই
আর চিত্রময়
হোয়ে ওঠে তোমারও নির্জন,
বুনো ঠোঁটে
হঠাৎ কাঁপন,
একটু উষ্ণতার খোঁজে
তুমি ঢেকে
রাখো তৃষ্ণাগুলি আর আমি কামাতুর
পায়ের পাতার
থেকে শুরু করি, তুমি আরো
সাগ্রসর চাও
। রাত্রি নেমে আসে ক্রমে
চারদিক
নির্জন । নিমগ্ন হওয়ার আগে আমি
আরো ঘটনাবহুল
হোয়ে উঠি,
আরো আরো
লিবিডোপ্রবণ, রহস্য বিছিয়ে রাখি । নেটশব্দে
বলি, ' অন্য কিছু নয় শুধু দরজা খুলে রেখো
আজগুবি
গল্পগুলি প্রাণ পাবে, স্বপ্নগুলি
সুখ......
আরব্য রজনী
তুমি ভালোবাসো,
আমি আরব্য রমণ
ক্রীতদাস
তুমি বললে
তোমার নির্জন কোন ঘর নেই
যার ভেতর
আমরা চুপটি কোরে বসে থাকবো
অনন্তকাল
আমি নিপুণ
হাতে হত্যা কোরলাম আমার প্রহরীকে
তুমি বললে
তোমাকে চারপাশে ঘিরে ধরেছে
প্রবল পৃথিবী
আমার দম বন্ধ
হোয়ে আসছে
আমি ইঁটের পর
ইট সাজিয়ে বন্ধ কোরলাম
দরজা-জানলা
ফাঁক ও ফোকর
বাইরে থেকে
তুমি বললে দরজা খোলো ক্রীতদাস
অপার্থিব
নির্জন ঘরের মধ্য থেকেআমি তোমার
কন্ঠ শুনতে
পেলাম না
বুনো
আঁধার রেতে
গা ছমছম মহুল ফুলের বাস
ড্যাবরা চোখে
ছিটিয়ে পিরীত
ধরলি কথায় দেহাতী
গীত
পাগলা দুহাত
দাপিয়ে ওঠে গরম হলো শ্বাস
রক্তে মাতন
উঠলো যেন লৈলঙ্কার ঢেউ
নেশা ধরায়
তুর অমন আদল
বুকের ভেতর
ছৌ এর মাদল
পাগলা সুরে
উথলপাথল বাজায় বুঝি কেউ
এমন রেতে আমরা দুজন পাতায় ছাওয়া ভুঁয়ে
আঙ্গরা হোয়ে
ছড়িয়ে যাবো
লকলকিয়ে বনকে
খাবো
মাতাল দুজন স্বগগে
যাবো পাশাপাশি শুঁয়ে