সুরজিৎ
পোদ্দার
ঈশ্বর
সমস্ত ঘোরের
মধ্যে সেই গমরঙা দুপুর
অন্ধকার -
রঙীন চুলের বিস্ময়।
সেই গন্ধে
গন্ধে আমার ঘুম হয়ে ওঠে ঈশ্বর
স্বপ্নে নয়;কামনায় নয়;
জাগ্রতচেতনার
সন্তান সেই নারী
বিস্তৃত
ছায়ার মতো-
নিমগ্ন
ফ্লাগুন দুপুরের হাওয়ার মতো
বীজপত্রে
অর্ঘ্য করে দান!
তবুওতো ঝরে
পড়ে পাতা
সমস্ত পথ
জুড়ে ঘুমন্ত বৃক্ষের আকাঙ্খা
সেইসব পেড়িয়ে
মচমচে সন্ধ্যে কি আসে?
দূর আরো
দূরতম নক্ষত্রের খোঁজ পাওয়া যায়?
শাসন করি না
তারে শক্তিহীনতায়
যার রন্ধ্রে
রন্ধ্রে ঘুম হয়ে ওঠে ঈশ্বর
তার
মৃত্যুকামনায়
নিস্তব্ধ হৃদয়
নিস্তব্ধ
হৃদয় নিয়ে এসেছি আজ তোমার কাছে
যুদ্ধ নয়, জোনাকি জোনাকি গল্প সাজিয়ে রেখেছিল পথে
বিস্মৃত
বিকালের গন্ধ বুকে করে এনেছি
ক্ষতহীন
রোদের গন্ধ মাখা চোখে
সব গল্পের
শেষে নিঃশব্দে যে চিল আসে
তার ডানায়
উড়তে উড়তে
বহু বছরের
বহু বহু মন খারাপ
কর্পূরের মতো
উবে গেছে
তারা যেন
আমার নয়,
অন্য কারো
অন্য
কোনোখানে,
অজন্তার মতো দেওয়ালে ছবি
দুঃখ নেই, আনন্দ নেই
নিস্তব্ধ
আকাশ সাথে করে এসেছি এক
রেলিং এ
যতখানি রোদ আসে
ততখানি ধুলো
ঝেড়ে রাখি
কতখানি শান্ত
হাওয়া আসে
স্তব্ধতার
অভিসারে
অনাবিল
জীবনের জাবর কেটে যায়
দিগন্তের
কালো ধোঁয়া
কবি কাঁখে
কবিতা নিয়ে বসে থাকে
কলমের আয়োজনে
সাঙ্গ সন্ধ্যাবেলা
কেবল
নিস্তব্ধ আকাশ পরে থাকে
আকাশ-কবি-তারা
...
-
অনন্ত মৃত্যু
প্রতিটি
বিদায় মৃত্যুর মত|
অনন্ত
মৃত্যুর পরেও যেন পরবর্তী মৃত্যুর অপেক্ষা
তবু পরবর্তী
মৃত্যুর অপেক্ষা নয়তো!
শুধু তোমার
আসাটুকু ঈশ্বর
দিগন্তের ডুবে
যাওয়া গমরঙা দুপুরে
অপার
নিঃসঙ্গতার শেষে যেন আরও এক মৃত্যু
তবু শেষ সত্য
নয়,
নয় কোনোখানে
শুধু তোমার
ঢিমে চালে আসাটুকু
এক চিলতে
মরচে ধরা চায়ের দোকানে
ঈশ্বর এসে
পড়ে,
তারপর আবার মৃত্যুর অপেক্ষা যেন
তবু অপেক্ষার
মৃত্যু নয় তো!
আমি সারাদিন
আগুনের চারপাশে
পুড়তে পুড়তে
অবশেষে স্নিগ্ধ হই
বিকালের
সূর্যের দেশে
অবশেষে
অপেক্ষা,
ঢেড় অপেক্ষার পর
অনন্ত
মৃত্যুর পর,
মধ্যপ্রাচ্য বা য়ুরোপে
আগুন নিয়ে
অপেক্ষায় থাকো তুমি
জিহাদ নয়, তবু জিহাদ ই যেন অস্তগামী সূর্যের|
নিবেদনে
নিবেদনে মৃত্যুই কর্তব্য হয়ে থাকে...
এ পৃথিবীর
হাজার শক্তির কথা
শেষ হয়ে আসে
একদিন সহজ নিয়মে
একদিন শেষ
বিদায়টুকু,
অনন্ততম মৃত্যুটুকু
গন্তব্যের
স্বাভাবিক পথটুকু আলো জ্বেলে ওঠে
শুধু
অন্ধকারে হাওয়ার মত রয়ে যায়
রয়ে যায়, আগুনের অভাবে জড় হয়ে থাকে
যুদ্ধবিরতি
বহুদিন আগে
যেখানে ছিল বাঁকা কৃষ্ণচূড়া
আজ তার ছায়া
পথময়
আমি সেই
সমুদ্রের তীরে নিমগ্ন সমুদ্রতটের মত
-
বালুকারাশির মতো নিমগ্ন
ছায়া জোড়া
কৃষ্ণচূড়ার প্রতিভা
একটা পাখি -
রন্ধ্র রন্ধ্র করে দিয়ে যায়
একটা সাইকেল
আর ঝোলা ব্যাগ
লুকিয়ে রাখে
পিস্তল
উড্ডীন পাখায়
সেইসব বিশ্বাসের ঢেউ
ফেনিল-তারার
ঝোঁক
সব স্বপ্নই
কি রক্তে গিয়ে মেশে?
সমস্ত ছায়া
জুড়ে কৃষ্ণচূড়ার চিহ্ন
-সমস্ত
সমুদ্র পুড়ে লাল
কে যেন
সাইকেলে পিস্তল খুলে রাখে
কে যেন একটা
পিস্টন বেঁধে দেয় আমার পাখায় –
সেইসব বিরল
ক্ষণে পৃথিবীর সমস্ত সরকার
যুদ্ধবিরতি
চায়!
হলুদ
বাতাস ক্রমশ
আলগা হলে
আরাম দেয়
কক্ষচ্যুত ফুলের পাঁপড়ি
নির্বাক অথচ
কি হলুদ !
রাশি রাশি
রাধাচূড়া ছড়িয়ে
আমার
আস্তাবলে|
একটা
বল্গাবিহীন শালিক
তার ফাঁকে
ফাঁকে খুঁজে যায় মাটি|
সেই সময়
বিচ্ছেদবোধ অন্তঃস্থ
অমলিন এবং
হলুদ|