শিল্পী
গঙ্গোপাধ্যায়
অস্তিত্ব
বৈশাখী ঝরে
বেসামাল সন্ধ্যায় ভেসে যায় গোছানো সংসার
ভোরের আলোর
সাথে ফের গান গেয়ে ওঠে পাখি ...
নদীকে
ভালোবেসে জীবনের শুন্যতা মুছে ফেলি বারবার
এভাবেই আমরা
বেঁচে থাকি,
বৈশাখী মৃদুল হাওয়ায় জুড়োই হৃদয়
কবিতার
আঙিনায় ঝরা বকুলেরা সুগন্ধ ছড়ায় ।।
অনির্বাণ
কি নামে
তোমাকে ডাকি?
"সুখ"?....
কিছু দুঃখ যে
জোনাক-আলো জ্বেলে
আজও অনির্বায
আধারের গভীরতা মাপে,..তবে
"পাওয়া"?....
না-পাওয়াগুলো
বারবার বলে যায়
প্রতিটি 'পাওয়া'র জন্য দিতে হয় কতটা
ক্লেশ,..তবে
"জীবন"?....
জীবন তো একটা
বৃত্ত, দুটি বিন্দু
ছুটে চলে
প্রান্ত ছুঁতে, ছুঁয়ে দিলেই চলা
শেষ,..তবে
"মৃত্যু"?....
সেও তো সত্য
ঠিক জীবনেরই মত,তবু
সে যে ঝরা শেষে নতুন পাতার স্বপ্ন আঁকে,..তবে
"সত্য"?...এই বেশ
তোমাকে বরং 'সত্য' বলে ডাকি,
'সত্য'ই যে একক ও অনির্বাণ জাগ্রত থাকে ।।
অমানিশা
শীতের যত
অভিমান ভেঙে দিলে,
পলাশের রঙে,
এখন আকাশ
জুড়ে
সূর্যটা
ছড়িয়ে দেয় বৈশাখী রোদ,
বৈতালী
হাওয়ায় মুছে যায়
দিনের তপ্ত
ক্লান্তি
অসমাপ্ত
গানের কলি সুর খোঁজে
ফুলদানি সেজে
ওঠে রজনীগন্ধায়,
শুধু তুমি
আসবে বলে ।।
অচেনা মাধুরী
এক জীবনে
কতটুকু পাওয়া যায় বল?
ঝরা বকুলে
আঁচল ভরেনি,
এক আঁচলে
কতটুকু ধরে?
গোধূলির রঙ
চুরি করে
ভরে তুলি
জীবনের ফাঁকা ক্যানভাস,
তবু কত
শুন্যতা রয়ে যায় ফাঁকে-ফাঁকে
এত যে সাগর,বনভূমি, নদীতট
সোনালী আকাশ
বিস্তৃত পর্বতরাজী,
এত সুর, এত গান!
এত যে
জড়িয়ে আছে আমার অস্তিত্ব জুড়ে
এরচেয়ে বেশি
আছে জীবনের অধরা মাধুরী
অধরা মাধুরী
চিনে নিতে
এ'জীবনে ফিরে আসি
বারবার
বৈশাখী
বৈশাখ মানে
কালবৈশাখী,
বৈশাখ মানে
সান্ধ্য হাওয়ায়,
মন যেন কেন
পাগলপারা!
বৈশাখ মানে
আমার বাগানে
বেল-জুঁই আর
সন্ধ্যাতারা...
বৈশাখ মানে
রবীন্দ্রনাথ
তোমার আমার
হৃদয়হারা।।