দেবাশিস মুখোপাধ্যায়
রুটিন ব্রেক ১
নদী দেখি । খিদে চাগিয়ে ওঠে । ঠেকের সঙ্গীত । তবলা বাজায়
কাঠে
ঠেস দিয়ে বসেছে দেয়ালে । লেখা ।
খাবার পর শান্ত । তমাল দূরন্ত মাথায় বিদ্যুৎ
দূত আসেনা রাজার । জারের প্রজাপতি বিস্কুট । স্কুটি চেনে
লেন রাশিয়া নয়
নয়নে নয়ন দিয়ে ফেরানো যায় না
এমনই কৃষ্ণচূড়া
রুটিন ব্রেক ২
ভাঁটফুল । লজ্জা হারিয়ে খোলাখুলি । খুলে দিচ্ছে রূপ । পাশে
পড়ে ঝোপ তেরঙা ছাপানো
নোকরি । রিবনের লাল রঙে বাঁধা ।
ধাইতে পারে না । নালার ভিতরে
শিশু রক্ত আর দুর্গন্ধ
ধস নামছে নিজের
ভিতর । তোরণ ভেঙে পড়ল অন্দরমহল ত্রস্ত । তমসার সার শুধু অন্ধজন্ম দেয়
দেয়ার পর দেশ ফেরি হয়ে যায় নীরব ফেরিওয়ালার হাতে
রুটিন ব্রেক ৩
রঙময় মাহল । হলুদ ফুলের পাশে জবা । বাহবায় মাথা নাড়ে সাদা
সাদা চেরি
ঋতুরাজকে রঙ্গে পেয়েছে । ছেয়ে
আছে সবুজ । বুজে আসছে চোখ
পলাশে । লাশের শিশুগুলি গভীর
মাটিকে ভালোবেসে ফেলে
লেখা ফুরিয়ে আসে কলমে । মেহেন্দির রঙ মিলিয়ে গেলে হাত
শূন্য । নজর নজরুল হতে পারে না
নাবালক সময় জানালায় ডায়াল করে রং নাম্বার
রুটিন ব্রেক ৪
মিড ডে মিল । মিলনের জায়গা । গা ঘেঁষে বসে গা। গ্রাস তুলছে
খিদে আর পাহারা বসেছে কঠিন চোখের
খেরো খাতা জমানো কবিতা । তার
প্রেম । মরা নয় জ্যান্ত । নত মুখশ্রী
এক ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে জাপটায়
পট আঁকছে কিশোরী কৃষ্ণরাধার । ধারবাকির সংসার । সারী গান
গাইছে পথ আর গাছের শুক
শুকুনি বিলুপ্ত হলেও মাঝে মাঝে জেগে ওঠে আমাদের শশ্মান
পাড়ায়
রুটিন ব্রেক ৫
ফুলের বিছানা । বিছে না । নান্দনিক। নিকোনো গোবরে উঠান
স্নানের গন্ধ ছড়ানো প্রভাত
ভাত ফুটে উঠলে দিন । নষ্ট সাহস
ঢেলে দিচ্ছে পাতে । পাতা শালের
বন ডেকে আনে আর ক্রমশ মাংসাশী
শিকারী চোখ । খুনির ভূমিকায় । কায়া থেকে খুবলে নেয় নরম
মাংস তার কামতীরে
রেসের ঘোড়া জানে বাজিজন্ম মৃত্যুর আগে অবধি অবোধ চারপায়ে
রুটিন ব্রেক ৬
কুয়াশা । শাড়ি কাচছে । ছেড়ে যাচ্ছে দাগ । গর্জন ছড়িয়ে পড়লে
ত্রস্ত হয়ে পড়ি সংক্রমণের আশঙ্কায়
কায়াবর তরু । রু র ভিতর । রকবাজি করছে পাঁচটি শূন্য ডাল ।
লক্ষ্যের ভিতর কোকিলটির কুহুতান আর অনিশ্চিত উড়ান
নখ অসময়ের । রস নষ্ট করে দেয়
ফুলের জলসার । সারা বাগানে পোকার কান্না খুঁজে যাচ্ছে
প্রকৃত মালি
লিবিডো ডোর থেকে বেরোনো হয়
না বলে আয়না খুঁটে খায় তাকে
রুটিন ব্রেক৭
ছিপের হাসি । সিনকে দুপুর করছে
পুকুর ঘাটে । টেলিভিশনের মিষ্টার
বিন চারা তুলছে পাথরের ছায়ায়
আয়নার উপমা । মাকে সরিয়ে রাখছে দেয়াল থেকে । কেশ চিরুনির
দাঁতে এখনো তার চশমার গন্ধ
ধরা পাখির বুক । করতলে । লেপের কাল শেষ হলে ছাদটি
আশা করে শীতল প্রহর
হরপার্বতীর যুগলমূর্তিটি প্রেমিক প্রেমিকা ডাকে নির্জন মোড়ে