অন্তরা
চ্যাটার্জী
মুখোশ
দিগন্তে
যেখানে বয়ে গেছে সীমাহীন রেখা,
সমুদ্র ঝড়ের
বেগে চিবিয়ে খেয়েছে নামহীন মেঘ---
সেখানেই কালো
হয়ে মিশে গেছে
কে ঠিক, কে ভুল তার হিসেব।
বিক্ষিপ্ত
মোহনায় আঁচড়ানো
কাটাকুটির
ছেলেবেলা
স্তব্ধ থেকেছে দ্রাঘিমার ওপারে।
তুমি চুষে
খেয়েছো শুকনো বাতাস
আর আমি
শেষবেলায় দেখেছি ক্লান্তির ঘুমটুকু।
রঙিন দাবানল দুলছে...
তর্জনীর ইশারায়
বেঘোরে।
নীল হয়ে নিভে
গেছে
আমাদের
অগোছালো রাত।
মুখোশধারী
ছাড়ল মুখোশ...
গ্রীনরুমে।
দেখো এবার
মিলে যাবে ঠিক অঙ্কটা।
অবসান
অভিনয়ে
মানিয়েছো হার
রূপালি
পর্দার নামী-দামী অভিনেতাকে।
দেওয়ালের
গিরগিটিটা
লজ্জায় করেছে
আত্মহত্যা
শুধু তোমার
রঙ বদলের গতি দেখে।
বিশ্বাসঘাতকতার
আঁচে পুড়ে
আমার ক্লান্ত
দিন এখন
ধুলোমাখা
অতীত হয়ে পড়ে আছে রাস্তায়।
আরে ,আমি তো সেই নগণ্যা—
যে তোমাকে
মেঘ মনে করে
আঁচল পেতে
বৃষ্টি কুড়োতে চেয়েছিল,
পুর্ণিমার
রাত থেকে জ্যোৎস্না চুরি করে
তোমার
অমাবস্যার বারান্দায়
ছড়িয়ে দিতে
চেয়েছিল,
লক্ষ
জোনাকিকে বন্দী করে
তোমার ঘরের
বর্তিকা জ্বেলেছিল।
বৃথা চেষ্টার
আগুনে নিজেকে পুড়িয়ে
আমার আকাশটা
এখন মুখ থুবড়ে
পড়ে আছে
তোমার উঠোনে।
না! ওখানে
প্রেম আর থাকেনা!
কারন ভালবাসা
নিয়েছে অবসান।
অভুক্ত ঈশ্বর
অস্পষ্ট
দিগন্তে মিলিয়ে গেছে
যেখানে
অভুক্ত ঈশ্বরের ম্লান মুখ...
সেখানেই নদীর
ভেতর শুকিয়ে গেছে বিবস্ত্র জল।
পেটের ভেতর
উহ্য ক্ষুধার্ত সত্ত্বা,
চিবিয়ে
খেয়েছে মরীচিকার বিষাক্ত গল্প---
ছদ্মবেশে
এগিয়ে গেছে প্রাণহীন জীবন।
গোছানো
পাণ্ডুলিপির এক-একটা অক্ষর
জানিয়েছে
প্রতিবাদ,
মিছিমিছি,
ভেসে গেছে ছন্দসফেনে।
সত্যটা স্থির
সূত্রে গাঁথা,
সাজানো
গল্পটাই কেবল অস্থির।
কুয়াশাই
মিশেছে তঙ্কন!
আর সামনে পড়ে
আছে কাটাছেঁড়া নগ্ন ইতিহাস।
পোস্টমর্টেম
মেঘের আড়ালে
ক্ষত লুকিয়ে
কিছুটা
বিশ্রাম নেবার বৃথা চেষ্টা।
অপেক্ষার
প্রহর গুনতে গুনতে
হৃদয়ে জং ধরে
ক্রমশ।
হৃদপিন্ডে জোর
করে ধরে রাখা প্রাণপাখিটা
ঝাপটা মারে
ভীষণ জোরে।
গতজন্ম থেকে
চিঠির অপেক্ষা করতে করতে
ডাকবাক্সটা
শুকনো হয়ে নেতিয়ে গেছে।
পথের সামনে
পড়ে থাকা কাঠখোট্টা বাস্তব
যে দূরত্ব
বুনে দিয়েছে
তা প্রতিনিয়ত
বুক খামচে ধরে।
যদি কখনো
তুমি পোস্টমর্টেম করে দেখতে
সন্ধ্যায় গলে
যাওয়া একটা সূর্যর গল্পকে,
তাহলে হয়তো
বুঝতে--- চাঁদেরও একটা ইতিহাস আছে।
দূরত্ব
যেভাবে আঁচড়
কেটেছো জংধরা হৃদয়----
আমি প্রতিবার
হয়ে গেছি মূক।
দূরত্ব থেকে
আরো যতটা দূরত্ব বাড়ালে
বিশুদ্ধ
বাতাস ঘোলা হয়
আমি ততটাই
দূরে বসিয়েছি ল্যাম্পপোস্ট।
সুখ হয়ে ঠিকরে
বেরিয়েছে আলো
তারপর বিলীন
হয়ে গেছে দুখের কিনারায়।
মুহূর্তেই
হারিয়েছে অগোছালো কথার ঝাঁক।
স্তরে স্তরে
সাজানো নবীন হৃদয়...
হয়েছে
প্রবীণ।
ঘড়ির কাঁটায়
ঝোলানো সময়
নিশ্চূপ...
চায় বিশ্রাম।
দূরত্ব থেকে
আরো যতটা দূরত্ব বাড়ালে
বিশুদ্ধ
বাতাস ঘোলা হয়
আমি ততটাই দূরে
বসিয়েছি ল্যাম্পপোস্ট।