শ্রাবণী
সিংহ
ঈশ্বরের সমাধি
১)
বহুদিনের
পরিচিত সাবানের গন্ধটা
করোটির
অন্ধকারে মিশে যায় একভাবে-
একদল নিঃসঙ্গ
মানুষ একাকী মনের ব্যবচ্ছেদ করেন
মর্গের মত
দমবন্ধ ঘরে।
জীবন
থেকে পরীর প্রণয় যে
অনেকটাই
দুরত্বে...
২)
অস্পষ্ট
স্মৃতির মাইলফলক।
কোনোটার রঙ,
কোনটা সংখ্যা
উড়ে যাওয়া...
পৃথিবী তার
বুকের ঘাসের রঙ
বদলে ফেলে
ঈশ্বরের সমাধিতে,
মৃত্যু থেকে
সার্ধশত দূরত্বে
আলোর রেত পড়ে যেখানে
কবিতা জ্বলে নির্ঘুম নক্ষত্রপুঞ্জের মত!
সুখের পানকৌড়ি
জল পায়ে
দাঁড়াতে শেখেনি তাই
খরস্রোতা আমারই মত সঙ্গহারা।
কত কত শেকড়ের
ভেলা ভাসে তার
বেহুলাযাত্রায়...
অন্তিমে
পলিনির্ভর
সভ্যতায় শুধু রূপকথা নয়,
গন্ধমবীজও
ফলে।
দুঃখশালুকে
হেঁটে বেড়ায়
সুখের পানকৌড়ি। আমার একার
অবক্ষয়
প্রকৃতিও
অন্য ব্যাখ্যা দেয় চিরাচরিত শব্দের--
পঙ্কে জন্মে
যাহা, তাহাই পঙ্কজ নয়
পাঁকের জিওল
মাছ, এদের গতিবিধি বোঝা
দায়।
গ্রীষ্মদাহের
দুপুরে যে কুকুরটা অনেক বছর বেঁচে যায়,
তারও প্রশ্ন
উঠে –সে আদৌ কুকুর কি?
সব ঢেলে মাটি
হয়, ছাঁচে ঢেলে মাটিও
ঈশ্বর হয়
তবুও
মাটি বঞ্চনা পায় শহীদের অস্থিমজ্জা গিলে।
শিক্ষক থেকে
চেনা স্বজন হাতই
ধর্ষকের হাত
হয়ে ওঠে একদিন।
এ কোন্ নষ্ট
সময়ে জন্মালে শিশু?
রোজনামা
কিভাবে
ঘোলাটে সমুদ্র তৈরি হয় কাঁচের গ্লাসে-
সফেন দুধের
ভেতর সিলভারের চামচ
আলতো আবর্তিত
হচ্ছে
মন্থন মুদ্রায়,
ঘোরলাগা
সন্তানের চোখ যেন
নধর পাখির বাসা...
স্বপ্নেরা
ফিরে ফিরে আসে অনুক্ষণ ,মৃদু
ডানা ঝাপটায়
কিছু ঘাস
স্পর্ধা মেলে দেয় পাতা-ঢাকা রোদ্দুরে,
খেঁজুর গাছের
হাঁড়িতে চুঁইয়ে পড়া নরম লোভ ...
এমন সব
দৃশ্যের জন্য রোজ জন্মাই, রোজ মরি।
আঠারোয় পা
বুক চিতিয়ে
রইল গুটিকয়েক রাগী পৃষ্ঠা,
কবিতা হওয়ার
বদলে।
খানিক নেচে
নিই বন্ধঘরে 'উ-লালাল্লা-আ
কাঠপুতলি
শোয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই আর।
বেশ ছিল পাঁচ
সিকের গল্পগুলো ...
বর্ষবরণের
প্রস্তুতিতে ফিকে হয়ে আসে
মনখারাপের
দু-চারটে মুখ
মুচকি হাসি
ঠোঁট থেকে মেঝেতে গড়ায় ...
ক্রমে পাথরে, কাগজে ও বুকে
একটি দরজা
আপনা থেকেই খুলে যায়
আঠারোয় পা দিলে
প্রাপ্তমনস্কতার দিকে।