শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮

ইন্দ্রাণী সরকার





ইন্দ্রাণী  সরকার


নান্দনিক

নান্দনিক তার চলাফেরা, নান্দনিক তার হাসি

দুটি গজদন্ত শ্বাপদ হয়ে ছুঁড়ে দেয় খাবার বাসী
অপরূপ তার ভঙ্গিমা, অপরূপ তার কালিমা
সেই অপরূপে মন মেজে নিয়ে হয় বৃন্দাবাসী।
নাগর এসে একমুঠো করে ধুলো ছুঁড়ে দেয় বাতাসে
আমরা অভাজন তাই চেটে খাই আরও পাবার আশে
বার করে নেওয়াটাই আসল কথা নাগর দিল লিখে
জানো না কি অভিমন্যু শুধু ঢুকেছিল বেরোয় নি সমুখে !







পোস্টমর্টেম আগে ও পরে

এখন পোস্ট মর্টেমে আছি
এভাবেই কিছু কাল থাকতে চাই
পুরুষানুক্রমিক এই কাজে সিদ্ধ
কারো মৃত্যুর আগে কিংবা পরে
যতক্ষণ না একটা অর্ধমৃত শুকুন এসে
সবটা উদরস্থ করে ।
#
যে টার্গেট হয় পোস্টমর্টেমে
তার শরীরের সব জায়গায় হাত চালাই
হেটেরো অথবা হোমো হব বাছবিচার করি না
শকুনের এমনি নির্দেশ |
#
নিজেদের উপপতি ও উপপত্নীগুলি গুনে নিয়ে
তারপর ভার্চুয়ালে আসি
টার্গেটের নাড়ি নক্ষত্র শুঁকে শুঁকে দেখি
আমাদের জীবনের পরম মোক্ষ আর তৃপ্তি |
#
নির্বাণের আর দেরি নেই
স্বর্গ থেকে মায়ের আত্মা রোজ হাতছানি দেন
শকুন ড্রিবল করে বেরিয়ে যায়
পরের জন্মে পতিতাদের দালালগিরি করার তপস্যায় |







শৃঙ্খলতা থেকে মুক্তি

আমি কবিতা কখনো লিখি নি
শুধু তাকে হাত বদল হতে দেখেছি
যেন এই অন্ধ পৃথিবীতে সে মৃত।

তাকে বাঁচাতে উদ্ভ্রান্ত ছুটে যাই
ধূসর সভ্যতা থেকে আলোকিত উত্তরণে
নবজাগরণের মত সে একদিন
আমার বিস্মিত চোখ খুলে দিয়ে যাবে।

সেই আশায় হাতে ভরসার শব্দ মুঠি করে
পাতায় পাতায় লিখি তার আগমনী
নতুন দিনে নতুন আশার পদধ্বনি।

এই নির্দয় পৃথিবীর বাগিচায় নিয়মিত
কবিতাকে পদদলিত হতে দেখেছি
ভুলুন্ঠিত কবিতার চোখে জলের বর্ষা
যতবার তাকে আগলাতে গেছি
ততবার সে ছিটকে পড়েছে এদিক ওদিক।

এখন সেই শুভ দিনের অপেক্ষায় আছি
যখন কবিতাকে দেব শৃঙ্খলতা থেকে মুক্তি
সমস্ত মানুষের মনে খোদিত করে যাব
এক অপূর্ব ঐশ্বর্য ঐশ্বর্যশালী কবিতা
যার নাম শান্তির দূত বহনকারী স্বাধীনতা






বটতলার কাব্য

কিছু মানুষ আছে গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল
চিলের শিকার ধরার মত রোজ একদিকে চেয়ে
ছোঁ মেরে পেজা থ্রী রিপোর্ট লিখে দেয়
হরি হে তুমিই সত্য ! মাইরি বলছি।

সেই মানুষের হনুমানের বগলের তলায় সূর্য্যের মত
বাগদত্তা খলবলে প্রেমিকা,
যার কাজই হচ্ছে মানুষকে নিচু করা

পায়ের তলায় দুশো প্রেমিক প্রেমিকা,
দাদাবাবু আর দিদিমনির চামচা
কাটা ঘায়ে রোজ নুনের ছিটে দিয়ে বটতলার কাব্য লেখে।

প্রায়ই মনে হয় দুহাতে গোবর নিয়ে কর্তা গিন্নির মুখের ওপর
ঘুঁটে শুকোতে দিই আর মুন্ডু দুটো ঘুরিয়ে টার্গেট বদল করে দিই ।







পংক্তিমালা

#
নতুন খাতাটা ছিল না পাশে তাই পুরোনো খাতাটা তুলে নিয়েছিলাম
নৈসর্গিক শুঁড় নিয়ে কে যেন ঢুকে যায় সবেতে হয়ত: অনামিকা নাম
কথায় গরল চোখেতে অনল চিনি না সে যে কে, কারই বা সে বালা
ব্যাঁকা চোখে এদিক চেয়ে রোজ গড়ে নেয় তার বিষধর পংক্তিমালা
#
একাকী বালিকার চোখে ধু ধু জল, পালক মাতাপিতা নিয়েছে বিদায়
পূতিগন্ধমাখা অসহায় পিতা শুয়ে আছে জড়ের মত ঘরের দাওয়ায়
অস্ফুট সুরে বালিকা বলে ওঠে, আমি আছি বাবা এখনই বল না যাই
নীল গোলাপে গোলাপবালা আমি ভালোবাসা পেলে আর কিছু না চাই |