শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮

শেখ সামসুল হক



শেখ সামসুল হক

বৈশাখ আসবে

বৈশাখকে চাই আমার মতন করে
ঝড়ের উত্তাপ কাল মেঘেরে ঝঞ্ঝাট
এসবের দরকার নেই হে বৈশাখ
বৈশাখ আসুক আসবে না কেন তুমি
তুমি না এলে সবই অন্য কিছু ভিন্ন
রকম লাগবে পাল্টে যাবে দৃশ্যপট
তা হোক এমন আর চাই না বলছি
সত্যের তল্লাট জুড়ে যৌবন উচ্ছাস
নেচে বেঁচে থাকার সাহসী উচ্চারণ
জ্বলোজ্জল চোখের তারায় ভিড় করে
হেসে হেসে কত কথা বলে সারাক্ষণ
 বৈশাখ আসবে অধীরে আমার ঘরে।








বৈশাখ আসে

আসে বৈশাখ আসে যৌবন ক্ষেতে ও খামারে ঘরে পরে
হাসে বণিক পাবে বকেয়া পাওনা হবে যে পরিশোধ
মহামতি আকবর বর্ণিল করেছে পহেলা বৈশাখ
সেই থেকে আজতক বৈশাখের অর্নিবার আয়োজন
চলছে ধণিক বণিক-শ্রমিক-মজুর চাষীর ঘরে
আনন্দ ঝরছে এদিক ওদিক-সোচ্চার সবার কণ্ঠে
ঝড়ের বারতা হঠাৎ করেই আকাশময় ছুটছে
ভয়ের কিছুই নেই রয়ে যায় আশঙ্কা ভাঙ্গাগড়ার
হাজার বছর পরেও মলিন হয়নি একটুখানি
দিনান্তে শ্রীধর হয়েছে বিশ্বের এখান সেখান জুড়ে
বীর বাঙালীর গর্বগাঁথা এ মাস থেকেই যাত্রা শুরু
হিমালয় পাদদেশে সুন্দর বনের অনিন্দ্য আহবান
সত্য চির সত্যানন্দ জাগিয়ে যাবেই দেশ দেশান্তরে
মর্তলোকে স্বর্গসুখ দিবে ধরা হাতের মুঠোয় এসে।







বৃষ্টি পাগল

বৃষ্টি পাগল বৈশাখ এখন
চাতক চোখে গর্জায় অদূরে
মাধবী লতা পাতার বাহারী
রূপ লাবণ্য পুড়ে ছারখার
আসে না কাছে ভিজে না কিছুই
এমন কেন বৈশাখ অচেনা
জনের মত তুফানী মেজাজ
করে ফিরছে যখন তখন
হাতের কাজ যেমনটা ছিল
তেমনি পড়ে থাকছে আলস্যে
কালি ঝুলির বৈশাখ কোথায়
ফিরে এলেই বেঁচে যেতো রুদ্র মন।








মেঘ বৈশাখ

এই সেই বৈশাখ মেঘ বৃষ্টির
খেলা নিয়ে দেখায় হাসি তামাসা
জেলে মাঝি কৃষক হয় জাগ্রত
জাল নৌকা লাঙ্গল করে শাণিত
বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার
আয়োজন চলছে ঘরে বাইরে
কবে থেকে জানেনা কেউ জানে না
বৈশাখের তান্ডব আসে আসুক
ভালমন্দ সৃষ্টির যত আনন্দ
আঙ্গিনায় হোকনা এসে হাজির
যেমনটা হবার কথা হবেই
সৃষ্টিশীল নতুন এই বৈশাখে
প্রিয়তমা বৈশাখ তিলউত্তমা
হয়ে ফিরে আসুক মেঘ দূতের
পত্র পেয়ে অবাক হয়ে যাক না
ধরাতল চৌচির তৃষ্ণা অটল
ছুঁয়ে যায় ভেতর বলে দেজল
নাম তার চাতক দূর আকাশে
উড়ে উড়ে অক্লান্ত চাই মেঘ বৈশাখ
এসো তবে এখনি বজ্র নিনাদে।








বৈশাখী ঝড়

বৈশাখ এলো বৈশাখী ঝড়
এলো না কেন এলো না
মাটির চৌচিরতায়
বৃক্ষরাজির হরিৎ কান্না
লাঙ্গল ফলায় কষ্টাশ্রু
থেমে যাবার ভাব ভাবনা
এদিক ওদিক চোরাই চোখের
ক্লান্তিকর দৃশ্যপট খুঁজে ফিরে
এভাবে সেভাবে নিউক্লিয়ার্স আইসোটোপ 
ঝড়হীন উত্তাপ খোয়া তান্ডব ছাড়া
বৈশাখ এলো কে নিয়ে এলো
দূরের আকাশে বাজিয়ে বেসুরে বাঁশি
দুপুর উপুড় করে বিজলী বাতাস
নড়বড়ে ঘর
মাথা তুলে হেসে হয় খুন
এমন বৈশাখ এলো
ঝড়হীন বৈশাখ।








আদি অন্তে নিত্য

আহা কি সুন্দর ভেতরটা বাহিরটা পুড়ে যায়
বৈশাখী আগুন দাউদাউ কেন যখন তখন
চাতক বুঝেনা অসময় ডেকে পাবে না বৃষ্টিকে
আপন থাকে না আপনার কাছে কাল বেলা এলে
দুরন্ত দুর্দিন সুদিনের পথ ভুলে বসে থাকে
রাতের ভাবনা ছোটে সূর্যমুখী ফুল ফোটাবার
সুবর্ণ সোহাগ খুঁজে মরে চাঁদ জ্যোস্না সুপ্রভাত
এসব চাইনা মাধবী লতার নিদাগ ছোঁয়ায়
আকাশ বাতাস দিক হীন দিশাহারা হয়ে যাক
সদর রাস্তার গলিমুখে শূন্য বুকে ক্লান্ত চোখে
আত্মচিৎকারে খই ফোটা সাত তারা দেখে দেখে
ঝাঝর সময় কাটতে চায় না গুটিশুটি হাত
আসর জমিয়ে বসে ভুলে যায় কাবিনে কি লেখা
জল উদাসী একা কী করতে পারে নাশকতা ছাড়া।
আত্ম অহংয়ে সহসা নিধনে জানাতে পারেনা কাউকেও সে যে
এমন দুর্দশা কুরে খায় স্মৃতির মগজ যত
রক্ত চক্র ঘুরপাক খায় দিবস রজনী জুড়ে
হৃদয় নামক বৃক্ষ চির সত্য আদি অন্তে নিত্য।