সুকুমার
চৌধুরী
শিস্
ইচ্ছেটুকুই
সর্বস্য নয় জেনো
মরার পর
বাঁচার কথা
আমাকে বলো না
মরে গেলে
অচিন পাখি হয়ে
এসে বসবো
তোমার দোরে
তুমি দুর দুর
করে তাড়িয়ে দেবে
কখনো খুদকুড়ো দেবে
ও সব কি ভালো
তাচ্চেয়ে দুর
দুর, খুদকুড়ো, যা পাওয়ার
সব এই জীবনেই
ভালো
আর আসার কথা
বলো না আমাকে
মরার পর
বাঁচার কথা
আমার ভালো লাগে না
যাপন
অসুবিধে হয়
জানি । ব্যপ্ত চরাচরে শুধু
ফনিমনসার উলু
।
কতকাঁটা, সমাজ, সংস্কার, ভয়
ক্ষোভ, মুল্যবোধ ।
আমার ভালো
লাগা মুখোশখানা তুমি নাও
আমাকে দাও
তোমারটা ।আর এভাবেই
এসো ভুলে যাই
পারিপার্শ ।
হয়তো বা
ফাঁকি,
তবু এও এক
অন্যরকম অভিনয় ।আপাতসুন্দর ।
এসো শিখে নিই
আর
প্রতিবেশীদের
মতো রক্তমাংসময় বেঁচে বর্তে থাকি
ক্রিসমাস
তোমাদের শহরে
আবার এসেছে ক্রিসমাস
অথচ মজা
দ্যাখো তোমাদের বাড়ির ছাদে এ বছর
ফোটেনি গোলাপ
শুকনো ফুলের
ঝাড় কেঁপে কেঁপে ওঠে শীতের বাতাসে
শুধু এই সব
দেখি
আর শুনি
কানপুর দাপিয়ে বেড়াচ্ছো খুব আজকাল
খুব ভালো আছো
তুমি খুব ভালো
শুধু একটু
একটু কোরে শীত ছড়িয়ে পড়ছে তোমাদের শহরে
ন্যাড়া
ল্যাম্পপোষ্টের পাশাপাশি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে
সর্বশ্রান্ত
গাছগুলি
ভার্সিটির
গেটে পর্শু ভোররাতে মারা গ্যাছে সেই ভিকিরি বুড়িটা
আর আমি একা
একা শহরের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়াই
আমার অগোছালো
টেবিলে পড়ে থাকে
তোমাকে লেখা
শুভেচ্ছালিপি
তোমাদের শহরে
হাঁটতে হাঁটতে তোমার কথা
খুব মনে পড়ছে
আজকাল
মনে পড়ছে কি
ভাবে এক সন্ধ্যেবেলা থমথমে মুখে
তুমি একা
দাঁড়িয়েছিলে ভ্যারাইটি স্কোয়ারে
অফিসের
টেবিলে বসে জানালা দিয়ে মাঝে মাঝে
চেয়ে দেখি
এমাইডিসির বিচ্ছিরি আকাশ
আমার মন
খারাপ হোয়ে যায়
সিগারেট
ধরিয়ে চুপচাপ বসে থাকি আর মনে হয়
এই বুঝি বেজে
উঠলো ফোন এই বুঝি......
রোদ
বাগানের ভিজে
ঘাস অন্ধকার ছুঁয়ে একটু একটু কোরে
ছড়িয়ে পড়ছে
রোদ
মর্মরমুর্তির
ঘুমন্ত চিবুক বেয়ে চুঁইয়ে পড়ছে তরল রোদ্রকণা
কুচোপাথরের
লন বেয়ে বেবাক ছুটে এসে
বাজিয়ে
দিচ্ছে ওপরতলার কলিংবেল
ওঠো হে ওঠো
এই দ্যাখো বলে
বিষন্ন
রাত্রিবাসের ওপর ছুঁড়ে দিচ্ছে
রঙচঙে
সুগন্ধি সব ককটেলের চিঠি
রোদের সময়
নেই হ্যাংলা সানসেট থেকে
আবার লাফিয়ে
পড়ছে ব্যস্তসমস্ত রোদ
ওভারব্রিজ
পেরিয়ে হলুদ সাপের মতো একেঁবেঁকে
ছুটে যাচ্ছে
মেঠোপথ ভেঙে
নিকানো উঠোন
আর গোবুরে দেয়ালের গায়ে
আসঙ্গ
লিপ্সায় পিছলে পড়ছে খর্খরে রোদ
আগুড় খশিয়ে
অবলীলায় সেঁধিয়ে যাচ্ছে ভাঙ্গা দোচালায়
স্যঁতস্যাঁতে
মেঝে আর ফেঁসো দেয়ালের বুকে
ছড়িয়ে দিচ্ছে
তার দীর্ঘ অভয় হাত
ন্যাংটো
শিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছে
রাংতামোড়া
টফি ও বিস্কিট
রোদ ছুটছে
রোদ গভীরতম গোপন প্রদেশে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে
পড়ছে অবয়বনাশাতুর রোদ
রোদ আসছে রোদ
গনগনে
স্নিগ্ধ রোদে ঝিকিয়ে উঠছে
ওই কৃষাণ
বধুর শাদা দাঁত
৩৬ চৌ্রঙ্গি লেনের
দিকে
থার্টি সিক্স
চৌরঙ্গি লেনের দিকে হেঁটে যাবো পাশাপাশি
ইচ্ছে ছিলো
অথচ মুক্তমেলার দিকে হেঁটে গেল অবিশ্বাসী মন
মুক্তি কি
এতোই শস্তা খুকুমণি
ভয় নেই লজ্জা
ও কূহক
এই ভুল
ভেঙ্গে গেল ফুচকাওলার ডাকে শালঠোঙ্গা ইমলির ঝোলে
এ্যাকাডেমি
পুনর্বার ডেকেছিলো ভন্ড পাপীটিকে
অথচ শেয়ালদা
ষ্টেশনে কিছু শিল্পীদের দুখীগান
শোনা গেল
তোমার কল্যাণে
আর অমোঘ
দুঃখের মতো ভারী হলো
আমাদের বেঁচে
থাকা নিঃসঙ্গতাবোধ
যেন নির্জন
ঘুঘুর ডাক সন্তর্পণে নেমে এলো রক্ত বেহালায়
সুমিত্রা মনে
পড়ে
লোকাল
ট্রেনের ভিড়ে যতটা স্তব্ধতা ছিলো আমাদের ঘিরে
ততোটা কি
অনিবার্য ছিলো
আমাকে হারাবে
পথ
লক্ষ লক্ষ
যোজনের রাঙাধুলো নিয়েছি মজ্জায়
অথচ বালিগঞ্জ
ষ্টেশনে তোমার ব্যাকুলতা দেখে
কেন জানি
বিষন্ন মায়ের
মুখ মনে পড়ে গেল
হায়
অজ্ঞাতবাসের
আগে তাঁর সাথে দেখাও করিনি