শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮

নুরুন্নাহার শিরীন



নুরুন্নাহার শিরীন

হৃদয়জ পঞ্চমী 

এক।।
সে এক সোনালু বেলা -
পাগল বাতাস সারাবেলা।
কী যেন হঠাৎ খুব উৎসাহময় -
কী যেন মায়াবী গানে হৃদি নদীময়।
সে এক সমাজ সংসার মিছে করা -
রবিকবির গানের টানে জগত উদাস করা।
জলের মতোন ছলোছলো কবিতার ভাষা -
জীবনে না ভোলা সে আমার ভালোবাসা।







দুই।।

এই যে একেলা বসে থাকবার কালে -
মগজে শিকড় গজানোর মতোন ছড়ালে  -
কবেকার হইহই মাঠের আড়ালে -
ছায়া কবিতার ঘুম সে শুধোয় 'কে জাগালে?'
উত্তর জানা নেই হাওয়ায় হাওয়ায় ধায় -
ষোড়শপচারে আহা বঙ্গীয় পিপাসায় -
অতল বঙ্গোপসাগর রূপালিয়া ঢেউমাখা -
রূপসী জোয়ারে সে কী ছিলোগো প্রথম দেখা








তিন।।

স্বভাবদোষ যায় না ছাড়া।
তাই স্বদেশের ঘোরে হৃদয় পাগলপারা।
যখন যেথায় যাই -
হৃদমাঝারে স্বদেশটাকে পাই।
লোকজন যে তেমন জানেও না -
তাতেও কী এসে যায় বাঙালির মন যে মানে না।
বৈশাখ বলতেই পদ্মাপারের ইলিশের ঝাঁক -
প্রাণের মিলনমেলা বাঙালির প্রাণখোলা ডাক।








চার।।

জানিগো এদেশে আজও হাভাতে লোকজন -
কেমন হামলে পড়ে কোথায় পঞ্চব্যাঞ্জন -
তবু এদেশের নামে আজও ঢাকের বাদ্য বাজে -
প্রাণ জাগে ডিগম্বরীতলার মনোহর সাজে।
ভোরের পাখির ডাকে মুখর জানলাতলে -
উঁকিঝুঁকি পুরাতন সখীদের মুখ জ্বলে।
যেন সে আমার চিরচেনা সূর্যের আলোগান।
সে আমার ঘুমভাঙানি রবিকবির গান।









পাঁচ।।

যদি বা এমন হয় জগতে কোথাও আমি নেই -
তা হোক কেবল এদেশের জলমাটিতেই -
যেন বা আমার চিরঠাঁই -
বাঁচিয়ে রেখেছি শুধু একটুকু এই আশাটাই।
বাংলার গন্ধে সকালসন্ধে জাগি -
জন্মাবধি জেগেই আছি তাই যেন থাকি।
চিরদিনের ঘুমের আগে বাংলাদেশের মুখ -
সে মুখ দেখেও আহা এক জীবনের সুখ।


   ১৩ চৈত্র  ১৪২৪ বঙ্গাব্দ