নুরুন্নাহার
শিরীন
হৃদয়জ পঞ্চমী
এক।।
সে এক সোনালু
বেলা -
পাগল বাতাস
সারাবেলা।
কী যেন হঠাৎ
খুব উৎসাহময় -
কী যেন
মায়াবী গানে হৃদি নদীময়।
সে এক সমাজ
সংসার মিছে করা -
রবিকবির
গানের টানে জগত উদাস করা।
জলের মতোন
ছলোছলো কবিতার ভাষা -
জীবনে না
ভোলা সে আমার ভালোবাসা।
দুই।।
এই যে একেলা
বসে থাকবার কালে -
মগজে শিকড়
গজানোর মতোন ছড়ালে -
কবেকার হইহই
মাঠের আড়ালে -
ছায়া কবিতার
ঘুম সে শুধোয় 'কে জাগালে?'
উত্তর জানা
নেই হাওয়ায় হাওয়ায় ধায় -
ষোড়শপচারে
আহা বঙ্গীয় পিপাসায় -
অতল
বঙ্গোপসাগর রূপালিয়া ঢেউমাখা -
রূপসী জোয়ারে
সে কী ছিলোগো প্রথম দেখা?
তিন।।
স্বভাবদোষ
যায় না ছাড়া।
তাই স্বদেশের
ঘোরে হৃদয় পাগলপারা।
যখন যেথায়
যাই -
হৃদমাঝারে
স্বদেশটাকে পাই।
লোকজন যে
তেমন জানেও না -
তাতেও কী এসে
যায় বাঙালির মন যে মানে না।
বৈশাখ বলতেই
পদ্মাপারের ইলিশের ঝাঁক -
প্রাণের
মিলনমেলা বাঙালির প্রাণখোলা ডাক।
চার।।
জানিগো এদেশে
আজও হাভাতে লোকজন -
কেমন হামলে
পড়ে কোথায় পঞ্চব্যাঞ্জন -
তবু এদেশের
নামে আজও ঢাকের বাদ্য বাজে -
প্রাণ জাগে
ডিগম্বরীতলার মনোহর সাজে।
ভোরের পাখির
ডাকে মুখর জানলাতলে -
উঁকিঝুঁকি
পুরাতন সখীদের মুখ জ্বলে।
যেন সে আমার
চিরচেনা সূর্যের আলোগান।
সে আমার
ঘুমভাঙানি রবিকবির গান।
পাঁচ।।
যদি বা এমন
হয় জগতে কোথাও আমি নেই -
তা হোক কেবল
এদেশের জলমাটিতেই -
যেন বা আমার
চিরঠাঁই -
বাঁচিয়ে
রেখেছি শুধু একটুকু এই আশাটাই।
বাংলার গন্ধে
সকালসন্ধে জাগি -
জন্মাবধি
জেগেই আছি তাই যেন থাকি।
চিরদিনের
ঘুমের আগে বাংলাদেশের মুখ -
সে মুখ দেখেও
আহা এক জীবনের সুখ।
১৩ চৈত্র
১৪২৪ বঙ্গাব্দ