শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮

গৌতম কুমার গুপ্ত



গৌতম কুমার গুপ্ত

কাগুজে কথা

কুড়িয়ে রেখেছি কথার কাগজ
ভাঁজ করে রাখা আছে ভালবাসার রাংতা
বোহেমিয়ান এই শীতের গল্পে
উত্তুরে হাওয়ার রোজনামচার র চা
ব্ল্যাক কফির তাপমাত্রা
সাঁঝবেলার একটা নেপথ্য গান
ভেসে থাকার আরাম কেদারা।

যে ভাবে উড়ে যাবে আগামী পাখীটি
আকাশের পরিচিত পথে
যে ভাবে মৌমাছি উড়ে যাবে
সদ্য ফোটা ফুলের পাপড়ি খুলে দিতে
পথ খুঁজে নিয়ে চলে যাবো আমিও
চুপিচুপি বলে দেবো তোমাকে
শীতার্ত উষ্ণতার উপভোগে
প্রিয় সব কাগজের কুড়োনো কথাগুলি।

বার্তা ছড়াবে ক্রমশঃ দেশে দেশে
ভালবাসার অমর কাব্য প্রিয়
কাগজের ভাষা শুধু কথার কথা নয়।







সমুদ্রনীল

সমুদ্র জেগে আছে চোখে রাত্রিজ ঢেউ
গোপন নয় মহাফেনিল রাশি
একা একা লবণের মুক্তোহাসি।

কুচি কুচি কথারা ছড়ানো বালির দহনে
বসেছিল দুই প্রেম তুলি আঁকা গুঞ্জনে।

হাতে হাতে পরিচিত উত্তাপের চিঠি
মুখে মুখে চুম্বন সুপ্রিয় সর্বনাম
আদর এঁকেছে  ঠোঁটে চিত্র মহান।

কেউ শুধিয়েছে, জেগে আছো একা?
অন্তর্লীন নীলে নীল প্রেমের পরিধি আঁকা।






সম্পর্ক

কি ভাবে হৃদয় জানাই এই দ্যাখো
প্রসারিত হাত,উদ্বাহু ভাষা করমর্দনে
সহজ চুপকথা প্রগলভতা ওষ্ঠ চুম্বনে
বাতাসের মতো হতে পারি প্রবাহ ঋণে

অথবা জলের মতো সহজ সরল দিন
বৃক্ষের মতো সবুজ বনানী শাখা প্রশাখা
ফলে ফুলে পৃথিবী ভরা জন্মমৃত্যু আঁকা
তবু তো বাড়িয়েছি হাত আমার অবতরনিকা

মুগ্ধ যা কিছু দিয়েছি আলোর ঋজু পথ
চোখের দৃষ্টি দৃশ্যে ধরা প্রচুর প্রখর জ্যােতি
কিছুটা ভীরু কিছুটা প্রকট লোভনীয় ক্ষতি
মেনে নিতে রাজী  সম্মোহন আমার প্রতীতি







কা ল বে লা

স্পেকট্রাম থেকে আলো গড়াতেই
স্নাত হয়ে উঠল রাত্রি
তখনও কালিমা লেপনের ইতিহাস
বয়ে চলেছে যাপনবেলা

পরিছন্ন উদযাপনের দায়বদ্ধতা ছিল
স্বয়ংক্রিয় সাবানের
আজ তার ফেনিল পরিক্রমা;
তাই নক্ষত্রও আবিষ্কৃত হয় নি আকাশে আজ

ডাহা হেরে বসে আছেন গ্যালিলিও
ব্যর্থ টেলিস্কোপের আকাশমণি অন্ধকারে
ছায়াপথে ব্যাপৃত হচ্ছে তখন মতবাদ

একটা নিপুণ সাজসজ্জা থেকে উঠে আসে
আতর অভ্যর্থনা ;প্রসঙ্গ মোহ সুখবাসর

সময় সময়ান্তরে সিঁড়ি বদলায় শুধু







এ ই মা ত্র

এইমাত্র রাত হবে
ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হবে
শরীরের আজকের শ্রম ও উপার্জন।

বালিশের নীচে যে সব ক্লান্ত চুল
খুঁজে নেবে বিষাদের তুলো
সেখানে ছড়ানো ঘুম-রঙ-অন্ধকার।

চাঁদের সখ্যতা আকাশের দিকেই থাকে
দূরের মাটিতে কথার জন্ম শুধু
আজ পূর্ণিমার অবকাশ হয়ে থাক।

এভাবেই ফুরোবে সময়সারণী
সূচিতে গাঁথা হবে ধৌত মুখে চন্ডী পাঠ
জুতো সেলাইয়ের শেষে একটি দৈনিক ক্ষয়।

আমরা ক্লান্ত শ্রান্ত হবো পুনরায়
প্রতিটি নির্জন বিকেলের অধ্যায়ে
ফুরোবে রাতদিনের অবশেষ শেষ।