তৈমুর
খান
দোলাও জীবন
তোমার সঙ্গে যেতে ভয় করছে না আর
মৃত্যু এখন ঘুঙুর হয়ে বাজে
সব কলঙ্কই জীবনের গলার হার
কত দূরে রাধাপুরে পুরুষ যেতে চায়
পুরুষরা সব কৃষ্ণপাখি বসন্তের
গান গায়
দোলাও জীবন, যেমন তুমি
চাও
এই অনন্তে ভাসাও তোমার নাও
নিষিদ্ধ ভ্রমর
তোমাকে হাতের কাছে পেয়ে
ছুঁতে পারি নাকো
ছোঁয়া এক নিষিদ্ধ ভ্রমর
কোন মধু চায় তার ?
অজস্র ফুলের ভিড়ে
তুমিও ফুটেছ কখন ;
তোমার ঘ্রাণের মায়া
পেতেছে সংসার ।
অধরা ছোঁয়ার গানে
ভিজে যেতে থাকি
কেঁপে ওঠে স্পর্শপাখা তার….
মানুষেরা ভেসে যাচ্ছে
একে একে
ওরা ডেকেছিল, আমি যাইনি
সারাদিন কান্নার সমুদ্রে ঢেউ
গুনছি
মানুষেরা ভেসে যাচ্ছে একে একে
আমিও ভেসে যাব
সন্ধ্যার পাখি উড়ে যাচ্ছে দূরে
ম্লান আলোয় আকাশ কোনও অপার্থিব
নির্নিমেষ
নিজের কথাও আর শুনতে পাই না নিজে
বৃক্ষের অন্তরালে ঘুমায়
স্মৃতিফুল
আমার অন্তর বাহিরে তীব্র স্রোত
অন্ধ এবং ভাসমান চোখ
দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে যেতে চায়
কথারা তবুও কথা, অনেক অনেক
পৃথিবী, অনন্ত
সময়
হৃদয় এক শূন্য কুমুদ
স্মৃতির ঘাটে আজও কারা জল তুলতে
আসে?
চেয়ে চেয়ে দেখি
জলের শীৎকার শুনি
পদশব্দের ঘ্রাণে জেগে উঠি
ঝরা আমলকী কুড়িয়েছি কত
বসন্ত গেছে
নিরুচ্ছ্বাস কোকিল এখনও অন্তরালে
ডাকে
নীরবতার কাছে আজও আমি ৠণী
হৃদয় যদিও মৃত, তাকে কি
জাগানো যায়?
তাকে কি বৃষ্টির রাতে একা একা
জানালায়
ডেকে আনা যায়?
প্রাচীন বিস্ময় ঘিরে স্মৃতির
আত্মারা ঘোরে
হৃদয় এক শূন্য কুমুদ হয়ে ফোটে
কিছুটা স্নিগ্ধ চাঁদ, স্বপ্নের
ভ্রমরী
গুন গুন রেখে যায় তার নিবেদিত
কম্পনে
উদ্যোগ
আমার হাসি দুল পরেছে
আমার খুশি চুল বেঁধেছে
আমার ইশারা, আমার নীরব
একা একা আসছে যাচ্ছে
ভাবনারা ক্লান্তিবিহীন
দূরে দূরে বয়ে যাচ্ছে তরী
নিশীথ কোলাহলের কাছে
এ আমার আত্মদ্রোহ
বিজ্ঞাপন কোথাও রাখিনি
তবু জ্যোৎস্না নীল হল
নীলাশ্বের কাছে
দৈন্যরা স্ফুরিত ঘুম
কাজল পরেছে
আমি সেই মুগ্ধতার খোঁজে
এখনও নষ্ট হই
এখনও বিলম্ব হয়
আমার সংগ্রাম
জ্বরপাখি
আমার নির্ঘুমপাড়া,
মুমূর্ষুপুরে থাকি
আমার হৃদয় জ্বরপাখি
সারারাত স্মৃতির বেদানা খুঁটে
খায়
কত আলো চলে যায় এপাড়া ওপাড়া
কত রাজহংসীগলা চেয়ে চেয়ে দ্যাখে
পদ্মবনে তরঙ্গ ওঠে সাঁতার কাটে
ওরা
আমার জানালা ঘিরে রাত আর রাতের
পাহারা
কত ভ্রম জোনাকির মতো
নিভে যায়, জ্বলে
কত ক্ষত চলাফেরা করে
সবাক নির্বাক তারা
দৃশ্যে অদৃশ্যে ঘোরেফেরে
জ্বরপাখি, ঠোঁট নেই?
তবু তার ভাষা আছে
ভাষায় কষ্টের গান
গানেও বিমূঢ় বিস্ময় ঝরে পড়ে!