মণিজিঞ্জির সান্যাল
কার্শিয়াং পাহাড়ের
কোলে
সেদিন গিয়েছিলাম পাহাড়ের কোলে
চা বাগান ছাড়িয়ে অন্ধকার অবশেষে
জোনাকির খেলা আশেপাশে,
নিস্তব্ধ পাহাড়ে হিম মাখানো সোঁদা গন্ধ
সারা শরীর জুড়ে,
হিমেল বাতাস আমার প্রশ্বাসে নিশ্বাসে,
কার্শিয়াং পাহাড়ের কোলে অবশেষে,
কাঠের পাটাতনের ওপর সাজানো ঘরবাড়ি
অভাবী সংসার
অনাবিল মুখের হাসি
অভাব নিয়েই যেন এদের পৃথিবী
তবুও মাটি কামড়ে পড়ে থাকা,
একই আকাশের তলায় আমরা সবাই
তবুও ভাল থাকা আর না থাকার
কত ফারাক !
খাবার, কথা , পোষাক , জীবন
সব যেন অন্য কথা বলে
সুখের পেছনে ছুটছে অসুখ
জন্মের পেছনে মৃত্যু
বাকি থাকে হাসি কান্না
আমি যেন অনাগত অতিথি
সেই পৃথিবীর,
চেনা আর অচেনার
কোনো এক জন........
নি:শব্দ আলাপন
খোলা আকাশের তলে
শুয়ে থাকা হয়নি কখনও
পাথরগুলো কি
অদ্ভুত ভাবে
সময় গুনছে যেন প্রতিনিয়ত
অপেক্ষা করছে অনন্তকাল
ওদের দেখলে মনে পড়ে যায়
প্রত্নতাত্ত্বিকদের কথা
আকাশ কি ধার দিতে পারে
একটু বৃষ্টিকে
খোলা আকাশের তলে
শুয়ে থাকা আমার আমি'
কে ?
আমার ভেজা শরীরে
সূর্য নামবে এরপর
ধীরে ধীরে
অতি ধীরে
শিল্পীর হাতের বনানীর চিত্র
আমার হৃদয়ের ক্যানভাসে
এরপর চাঁদের আলো
স্পর্শ করবে নীরবে
আলতো আদরে
ভুলিয়ে দেবে
আমার টুকরো টুকরো অভিমানগুলো
খুলে দেবে আমার
দুঃখের জানালা
ঐ দূরে চাঁদের কোলে
একাকী সূতো কাটা বুড়ির সাথে
নিঃশব্দ আলাপন
খোলা আকাশের তলে
শুয়ে থাকা হয়নি আমার
কোনদিনও ।
অধরা
একটা বৃষ্টির ফোঁটা
আমার চিবুক স্পর্শ করে ঠিক ততোটাই
যতোটা একটা বুভুক্ষু পেট ভরে খেতে চায়
কোনো একটা দিন
একটা শূন্যতার মধ্যে আরো একটা শূন্য
ততোটাই জায়গা করে নেয়
যতটা শূন্য হলে আরো একটা হৃদয়কে
চেনা যায় শূন্যতর থেকে
জীবনের গান ঠিক সেভাবেই গাওয়া যায়
যদি সেই গানে কোনো
হিসেবের কানাকড়ি চিহ্ন না থাকে
একটা কবিতার ঠিক ঠিক জন্ম হয় তখনই
যখন কবিতার বাঙ্ময় অধরা থেকে যায়
কবির কল্পনায় ...
অবোধ শালিখ
মুহূর্তের স্বপ্নকে নিয়ে
খেলা খেলা এ জীবন
সে স্বপ্ন সত্যি হয়ত হবে না জেনেও
ঝলমলে মুহূর্তটাকে
ধরে রাখার বৃথা চেষ্টা
তবুও বাসা বাঁধে বুকে
ভাঙা কার্নিশে
অবোধ শালিখের বাসার মতো
তবুও ...............
যখন ঝড় ওঠে
এমন কিছু আছে যা
স্পর্শ করা যায় অথচ তার অনুভূতি বোঝানো যায় না । এমন কিছু আছে যা চোখে দেখা যায় অথচ স্পর্শ করা যায় না । এমন কিছু আছে যাকে অনেক কিছু বলার থাকে কিন্তু কোনোদিনই বলা হয়ে ওঠেনা ।
আমাদের কতো কথা যা
গড়িয়ে যায় জলের মত
, আর তারপর পিছলে পড়ে । হাজার হাজার মন চলাফেরা করে কথার সমুদ্রে । যখন ঝড়
উঠে, তখন ফিরিয়ে নেওয়া যায় না কোনো শব্দ । ভাঙনের রীতিই তাই ।
এভাবে ভাঙে মন , ছিঁড়ে যায় সম্পর্কের সূচালো সূত্র । অথচ কিছু কথা থেকে যায়
, চলতে থাকে পথ -----না ভোলা পর্যন্ত ।