সুধাংশুরঞ্জন সাহা
কফিনবন্দি আমার
দেশ
বাবলু সাঁতরা আমার ভাই ।
সুদীপ বিশ্বাস আমার ভাই ।
কাশ্মীর আমার স্বদেশ ।
কফিনবন্দি বাবলু নয় ।
কফিনবন্দি সুদীপ নয় ।
কফিনবন্দি আমার দেশ ।
খোলো, কে আছো,
কফিনগুলো
খোলো !
কফিন থেকে কান্নাভেজা দেশকে ডেকে তোলো!
রশিদ ! মাসুদ ! কারা ছড়িয়েছিল বিদ্বেষ
?
বাবলু, সুদীপরা আমার ভাই ।
রশিদ, মাসুদদের শেষবারের মতো চাই ।
হায়রে পুলওয়ামা ! হায়রে আমার দেশ !
কেউ জানো, রশিদ মাসুদরা কোথায় ?
সন্ত্রাস ! সন্ত্রাস ! সন্ত্রাস ! সন্ত্রাস ভুলে আয় ।
নিজের মাকেই জিজ্ঞাসা কর কোথায় কার দেশ!
শুধু কাশ্মীর না ।
শুধু ভারত না ।
সারা দুনিয়াটাই আমার দেশ ।
শিকারী
কত কিছু ধরা পড়ে মাছ
শিকারির
জালে ।
কত মাছ ছিটকেও যায় জাল থেকে জলে ।
ব্যাকরণ মেনে হয় সব অপরাধযজ্ঞ ?
পরোয়াহীন চোখ, উদ্ধত নদী বয়ে চলে ।
কী কী কেড়ে নিলে তবে খরস্রোতা বলে ?
জলে
জলে
গোল হয়ে কত কিছু ঘোরে ।
বিপথগামীরা জানে পথ কাকে বলে ।
পথ ভাসে, পথ হাসে, জলেরই তোড়ে ।
এ-জীবন
গড়িয়ে গেল নদী থেকে পুকুরে ।
রুগ্ন সময়, কাকতাড়ুযা খেল কুরে কুরে ।
অচিন পাখি
আমার মগজে একটা আহত পাখি ।
তাকে আমি সদা নজরে নজরে রাখি ।
আমার বিশ্বাসে কলঙ্কিত রামধনু ।
মনের ভিতর একা ডাকে সেই পাখি ।
ধান খায় না,
গান
গায় না সেই পাখি ।
তাকে নিয়েই সারাদিন বিব্রত থাকি ।
ঝড়ে জলে টলমল আমার দু'চোখে
অচিন সেই পাখি
আমাকে
দেয় ফাঁকি ।
সারাদিন ঘুমায় সে, সারারাত জাগে ।
তাকে আমি কিছুতেই পারি না বোঝাতে ।
কত ভ্রম, কত শ্রম, মারকুটে চোখ
অসাবধানী আমিও খেলি তার হাতে ।
নিরুপায়
এই পথেই ভোরের পার্ক
এই পথে পুকুরের পাড় ।
এই পথে পলাশের গাছ
আমি জানি পরিচয় তার ।
দিন যায় কলহে বাজার ।
রাত আসে নিয়ে অন্ধকার ।
রুগ্ন পাখিরা হারিয়ে গেলে
আমার ভিতরে তোলপাড় ।
মাঝে মাঝে
সব
নিয়ে বসি
হারানো আকাশ, নদী, জল ।
জানি, দু'পায়ের ফাঁকে মৃত্যু,
দু'চোখে অলীক স্বপ্নের ছল।
আজ
সত্য-মিথ্যা একাকার
প্রতিপদে নিরুপায় হার ।
সাপলুডো রঙ
এবার বরং লিখতে পারি সাপলুডো রঙ
ভাঙতে পারি অভ্যাসনামা, হিংসুটে বেরঙ ।
ভিড়ের কোন চরিত্র হয় ? তর্ক অহর্নিশ !
উল্টো স্রোতে ভেসে ভেসে, শহরে খুলি অফিস ।
মুখেই সবার আগুন আজ,
মনেতে
বিষ !
সূর্যডোবা আলোয় রাতের আখ্যান লিখিস ।
কিন্তু অশ্রুকালীন চোখে কীসের ভয় দেখাচ্ছিস?
শখের ঘোড়া ছুটিয়ে এবার পালাব ভেবেছিস
!
ভুল ! ভুল ভাবছিস। আমি তো লাগামছাড়া নই ।
স্বপ্নে ঘুনপোকা আর পুকুরে নেই
হাঁসের
চৈচৈ ।