বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৯

পৃথা রায় চৌধুরী


পৃথা রায় চৌধুরী

আঁধারবাড়ি

চারটে সুরের বদলে চুলের ক্লিপ খুলে যাবে

সেখানেই শেষ হবে একটা দিনের আয়ু

কাল এলে তার প্রথম প্রশ্ন হবে, যুগের নাম।


দেখা দেবে কোনো এক জটায়ু,

সীতাকে বলে যাবে,

তাকে রক্ষা করতে আসা ভুল হয়েছিল...।


গয়নার পথে আরও কিসের সন্ধান মিলে যাবে

আশঙ্কায় আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিতে হয় বাকি চিহ্ন।


চাঁদের হাতে মোম গলে যায়, সন্ধ্যে নামে

শহর আজ বাতিহারা, চুপ করতে বলো না আজ।








ভাঙ্গা কলম পরবর্তী

কি বলবে বলো, পাক্কা জোচ্চোরকে?

চলো তোমার জন্য ঠগি হই আপত্তি নেই,

পাকা খেলুড়ি ভেবেছো তুমিও...

আহা সুখ!


রাস্তার আঙুল বুকে উল্কি কাটে,

নীল নীল হেসে ওঠায় লুকিয়ে পড়ে

নিরীহ অভিশাপের ঢল।


আঁচড় বসে যায় তোমার,

আমূল সেই অন্ধকার জলাভূমিতে;


আমার পাড়ার পাগলটাকে দুবেলার জ্বালানি দিও

...তুমি।







রক্ষার্থে যে অধ্যায়

সমুদ্রে শায়িত দেখে ভ্রম হয়েছে তোমার,

পবিত্র পরিধিতে বুনেছো বিষ...

এ তোমার ধারণা, তুমি জানো স্বেচ্ছাহলাহল?


রন্ধ্রে রন্ধ্রে জন্মগত গাঙ্গেয় ধারায়

কখনো ভাঙ্গনের হুড়মুড়, কখনো শান্তস্রোত।

ভাষা চলে যাচ্ছে...


বলো, রাক্ষস... বলো, রক্তমুখী!

আরো বলো, কালযাত্রা... কখনো বলো, শত্রু নিধন!

কালসর্পের ছোবল যদি কালসর্পেই মেশে,

মৃত পাতার স্তূপ দেখা যায়, ক্রন্দনরত।


সে খেলায় শুধু দর্শক হয়ে থাকি,

যে তোমাকে আড়াল দিয়েছিলো, তার আড়ালের নাম...?

তবে এসো, ঘৃণা করো আমায়

পুতুলেরা ভেঙ্গে যায়, প্রদীপের আলো শুধু শীতল।








বাসা

তোমরা, আমার কালশিটে গোনার অপেক্ষা করো

তোমরা, এদিকে তাকালেই দেখতে পাও

আমার মুখে মিশে আছে, তোমাদের ভয়ের কারণ।


কালো সোনারবরণ অধিবাসের সাজে খড়্গহস্ত বুঝি

তোমাদের এটা বুঝে নিতে এতো বাধা কিসের,

সত্যিই ভালোবাসি?


আখর সাজাতে ক্লান্তি আসে বলে ছড়িয়ে দিয়েছি আর্তনাদ

তোমাদের বিষময় জগতের কিনারায়

গড়ে তুলেছি ইচ্ছেছাদ...

মাটির।


প্রশ্ন করবে, এখনো আছি কিনা?







ফিরে এসো আদর ডাক

জমে থাকা পলিতে কচি কচি দুধনখ।

উৎসের কান্না বুঝি অসহ্য হতে, ফেটে পড়ে জন্মযন্ত্রণা।

ক্রমাগত মাতৃপ্রীতি তোমার জিঘাংসার উদ্রেক করলে,

চতুর্দিকে নামিয়ে আনো ক্ষমাহীন কালো ছায়া...


তোমার কোনো জন্মের অপারগতার দোহাই টেনে,

ছিঁড়ে ফেলো গান্ধর্ববাঁধন।

ঔরসজাতা ছাড়া সকলই বুঝি খাদ্য...

সুস্বাদু হোক বা বিস্বাদ।

হঠাৎ তুমি দেখতে পাও না, লকলকে জিভের রক্তশাপ

ছুটে আসছে কারুর শৈশব থেকে।

হে জননী, এবার নির্দয় হও।


আঁচড় কাটতে ভুলে গেছি,

ভুলে গেছি কথার বাঁধন, নাড়ির গিঁট।

আমারও ইচ্ছে করে একবুক শরাবে চুবিয়ে তুলি নিজেকে।

স্বেচ্ছাশেকলকে নাম দিলে জবরদখল।

থেকে থেকে ভ্রমের ভ্রূণ দেখেও শেল হেনেছো... আপ্রাণ!


এই যে চেনা আদল, অচেনা হয়ে যায়, যবনিকাপাতের মুহূর্তে;

দৈবী হাতে উলটেপালটে দেয় আকাঙ্ক্ষার লাল নীল সোনালি...

নিজের সমস্ত তুচ্ছতা নিয়ে বাধ্যতামূলক পরে থাকি জিতে যাবার হার।