শান্তা
চক্রবর্তী
জোয়ার এলো চোখে
হঠাৎ হঠাৎ জোয়ার আসে
দূ'কুল ছাপিয়ে
ভাসায় বুকের আসবাব,
অমাবস্যা- পূর্ণিমা- প্রতিপদ
কোনো তিথি নক্ষত্র নেই
সকাল-দুপুর-বিকেল যে -কোনো সময়-
অসময়ে সে আসে
ফুলটি ভাসে, ভেসে ভেসে
শ্রাবণ হয়।
রোদ্দুর বন্ধু হ'তে চেয়েছিলো, নীল আকাশ
পাঠিয়েছিল চিঠি-
সাগরও বলেছিলঃ ভাসাও না ভেলা-
এই আমি তোমার জন্য সব ঢেউ থামিয়ে
দিলাম,
কেউ জানে না, কোনদিন
জানবেও না
কতখানি ভেসেছিল দু'চোখের নোনা জোয়ারে!
নবীন কিশোর
এই আমি হলাম রোদ্দুর
ছুঁয়ে দে তো কেমন পারিস!
এই বাঁধলাম বেনী,
খোল তো দেখি
কেমন পারিস?
চোখে আমার লক্ষ মাণিক ঝিকমিক
একবার দৃষ্টি মেলাতো দেখি
কেমন পারিস,
করতল পাতলাম, ওষ্ঠে ফোটাবি
জলপদ্ম
তোরও দেখি আগুনে খেয়েছে সব,
নবীন কিশোর পাঁচিল টপকে আর
কোনদিনও
ছোঁবে না বালিকা-মন!
পাখি
একলা গাছ কত ছায়া দেবে
ঊষর মরু তৃষিত জীবন,
আকাশের জলকণা আছে প্রবাসে
চাতকমন কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়েছে
পাখি, ডিম ভেঙে গেল,
বাসা বাঁধার খড়কুটো জুটল না!
পাখিঃ দুই
যদি দু'হাত পেতে
দাঁড়াতে
ওষ্ঠে ঝরে পড়ত জুঁই-মল্লিকা!
যদি বলতে, বহুকাল তৃষিত
বৃক্ষ-
সজল মেঘে সমুদ্র আনতাম ঊষর
মরুতে!
যদি বলতে, অগ্নিশরে
পুড়ছে শরীর
জলছোপ আঁচল শুষে নিত সব তাপ।
যদি প্রথম রাখতে মুখ পায়ের পাতায়,
প্রকৃত নারী চেনা যেত-
দক্ষিণের ছাদে বিছিয়ে শীতলপাটি
শিখছো বাৎসায়ন-
ভরা পোয়াতির মতো নোনা গাছে
বসেছে ময়না
এয়োতির চিহ্ন নদীজলে যায় ভেসে...
পাখি, মুখে খড়কুটো,
বাসা তবু বাঁধা হল না!
ও চাঁদ তোর পুরুষ হবো
নগ্নপদ হেঁটে যাচ্ছে চাঁদ
নিটোল খাঁজে উঁকি দিচ্ছে
অপরাজিতা দল,
চৈতালী বাতাস গন্ধে মাতাল!
ডুব সাঁতারে তুলে নেবো নীলপদ্ম
আলজিভে দুধ গন্ধ,
হাতের মুদ্রায় বসন্তবাহার-
আঙুলের কৌশল মাপে নাব্যতা
খরস্রোতা নদীটি কতদূর ভাসায়-
দুয়ারে সমুদ্র,
নতজানু চাঁদের প্রতীক্ষায়!